কৃমিনাশে ঘরোয়া টিপস

লে. কর্ণেল ডা. লিনা ফ্লোরেন্স
2023-10-28 11:15:57
কৃমিনাশে ঘরোয়া টিপস

শিশুর পেটে কৃমির সংক্রমণ (ইনসেটে লে. কর্ণেল ডা. লিনা ফ্লোরেন্স)

বাংলাদেশে বাচ্চা বুড়ো সকলের মধ্যে কৃমির সংক্রমণ খুব বেশী। এজন্য ৪-৬ মাস পর পর কৃমিনাশক ওষুধ খাওয়াতে বলা হয় বিশেষ করে ২ বছর থেকে শুরু করে ৫ বছর পর্যন্ত বাচচাদেরতো রুটিন করে কৃমিনাশক খাওয়াতে হবে কৃমি থাকুক বা না থাকুক।

পেটে কৃমির সংক্রমণ হলে কি কি উপসর্গ দেখা যায় তা এখন সবাই যেমন জানে তেমনি কৃমির সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে কি কি করতে হবে তাও কম বেশি সবাই জানে। এরপরও অনেক বাচ্চাদের কৃমির ঔষধ খাওয়ানোর পরেও কৃমি কমে না এবং দু তিন মাস পর পর কৃমি দেখা যাবেই।

 একটা বিষয় মনে রাখতে হবে , কৃমির ওষুধ গুলো সাধারনত এডালট কৃমিকে ধ্বংস করে, কৃমির ডিম বা লার্ভাকে নয়, এজন্যই মলদ্বারে বা মলে কৃমি দেখা গেলে ১-২ সপ্তাহ পরে আরেক ডোজ কৃমির ওষুধ খাওয়াতে হয়।

 ভালো হয় কৃমিনাশক ওষুধ খাওয়ানোর ২-৪ সপ্তাহ পরে মলে কৃমির উপস্থিতি পরীক্ষা করা( Stool for R/M/E) যদিও তা সম্ভব হয় না অথবা টেকনিক্যাল কারনে কৃমি মলে পাওয়াও যায় না।

যখন কৃমির ওষুধ আবিষ্কার হয়নি , তখনও কিছু ন্যাচারাল উপাদান ব্যবহার করা হতো কৃমিনাশক হিসেবে যেগুলোর শরীরে পার্শপ্রতিক্রিয়া নেই বললেই চলে।

এর মধ্যে কিছু কিছু খাবার আমি আমার বাচ্চা রোগীদের খাওয়ানোর জন্য উপদেশ দেই , সাথে কৃমিনাশক ওষুধ ও নিয়ম-কানুন ও বলে দেই, যেন সব দিক থেকে বাচ্চারা কৃমির হাত থেকে নিরাপদ থাকে।

বড়রা তো অবশ্যই এগুলো খেয়ে দেখতে পারেন কৃমি থাকলে , অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ মতো।

নিম্ন লিখিত যে কোন একটা বাচ্চারা বা বড়রা খেয়ে দেখতে পারে

* কাঁচা পেঁপে বা পেঁপে রস (খালি পেটে)

* একটা গাজর খালি পেটে প্রতিদিন সকালে

* কুমড়ো বীজ (এক টেবিল চামচ ভাজা কুমড়া বীজের গুঁড়ো এক কাপ পানির সাথে মিশিয়ে খালি পেটে)

* কাঁচা রসুনের কোয়া দু তিনটে খালি পেটে চিবিয়ে অথবা রসুনের চা করে এক সপ্তাহ

* ২-৩ টি লবংগ এক পানিতে ৫ মিনিট ফুটিয়ে সপ্তাহে তিন চার বার পান করতে পারেন খালি পেটে সকালে

* এক টেবিল চামচ কাঁচা করলার রস এক চামচ মধুর সাথে মিশিয়ে খালি পেটে সকালে

* নিম পাতা বাটা হাফ চা চামচ, ১ গ্লাস পানির সাথে মিশিয়ে খালি পেটে সকালে, নিম ফলের গুঁড়ো ও একইভাবে খাওয়া যায়

* কাঁচা হলুদের রস বাটারমিল্কের সাথে মিশিয়ে অথবা পানি মিশিয়ে খালি পেটে

* কাঁচা নারিকেল বা নারিকেলের দুধ ও কৃমিনাশক হিসেবে কাজ করে

* সজনে পাতার শাক বা গুঁড়ো ও কৃমিনাশক

কৃমি প্রতিরোধে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কোন‌ বিকল্প নাই, আর কৃমির সংক্রমণে কৃমির ওষুধ ও অপরিহার্য, তবে ন্যাচারাল এই এভেইলেবেল খাবার গুলো যদি কৃমির সংক্রমণ কমাতে সাহায্য করে তবে চেষ্টা করতে দোষ কি‼️

লেখকঃ

লে. কর্ণেল ডা. লিনা ফ্লোরেন্স
শিশু পরিপাকতন্ত্র ও পুষ্টি বিশেষজ্ঞ


আরও দেখুন: