ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসায় ডাবের পানির প্রয়োজনীয়তা কতটুকু?

ডা. আবুল ফয়সাল মোহাম্মদ নুরুদ্দীন চৌধুরী
2023-08-30 10:51:48
ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসায় ডাবের পানির প্রয়োজনীয়তা কতটুকু?

ডাবের পানি (ইনসেটে লেখক)

ডাবের পানি বেশি খেলে শরীরে বেড়ে যাবে পটাশিয়াম, তাতে কিডিনিতে চাপ পরবে। কোনো কিছুই বেশি বেশি ভালো নয়।

ডাবের পানির দাম অনেক বেশি, তাই এটা অনেকেই কিনে খেতে পারবে না। ডাব খেতে বলার উদ্দেশ্য হচ্ছে, যাদের বাড়িতে ডাব সহজলভ্য, তারা যেন পান করেন।

গাইডলাইনে অনেকগুলো খাবারের কথা বলা হয়েছে, একেক এলাকায় একেকটা, যে যেখানে যা পাবে অন্য তরলের সঙ্গে সেটাও খাবে।

ডাবের পানিতে পটাশিয়াম আছে। জ্বরের সময় প্রচণ্ড ঘাম হয়। এতে মাংসপেশিতে খিঁচুনি হয়, ক্রাম্প হয়, রোগী কষ্ট পায়। রোগী যদি সামান্য কলা, ডাব খেতে পারে, তাহলে ওই ঘাটতিটা পূরণ হয়। কিন্তু পরিমিত খেতে হবে। অতিরিক্ত খেলে শরীরে অতিরিক্ত পটাশিয়াম যোগ হবে, অতিরিক্ত কিছুই ভালো না।

শরীর থেকে ঘামের মাধ্যমে সোডিয়াম বের হয়ে যায়। তাই এত পরিমাণ পানি আর ঘামের মাধ্যমে বের হওয়া সোডিয়ামের মধ্যে ভারসাম্য থাকে। জ্বর হলে এই ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়, তাই রোগীকে সাধারণ স্যালাইন দেওয়া হয়, যাতে ০.৯ শতাংশ সোডিয়াম থাকে। কিন্তু পটাশিয়াম শরীর থেকে ঘামের মাধ্যমে বের হয় না, পায়খানার সঙ্গে অথবা বমিতে কিছুটা বের হয়। সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ক্লোরাইড শরীরের স্বাভাবিক মেকানিজম নিয়ন্ত্রণ করে। এসব উপাদান বেশি নেওয়া ভালো না, কমও ভালো না। ডাবের পানিতে পটাশিয়াম বেশি, সোডিয়াম কম থাকে। পটাশিয়াম যতটুকু থাকা দরকার তার চেয়ে বেশি হলেই কিডনিতে চাপ পড়ে।

ডেঙ্গুর চিকিৎসার গাইডলাইনে রোগীদের পর্যাপ্ত পরিমাণ তরল খেতে বলা হয়েছে। এর পরিমাণ দৈনিক ১০থেকে ১২ গ্লাস। তরল খাবারের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে দুধ, ফলের রস, ওরস্যালাইন, বার্লি, ভাতের মাড় বা ডাবের পানির কথা।

ডাবের পানি শরীরের জন্য উপকারী, তবে অতিরিক্ত পান করলে ক্ষতির ঝুঁকি থাকে। আর গাইডলাইনে কখনোই বলা হয়নি বেশি পরিমাণে ডাবের পানি খাওয়াতে হবে। ঘাটতি পূরণে যে কোনো স্বাভাবিক পানীয় বা খাবার খাওয়া রায়।

ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী স্যুপ, বার্লি, সুজি, সেমাই বা যদি ভাতসহ স্বাভাবিক খাবার খেতে পারে, সেটাই খাবে। রোগী যেন খেতে পারে খাবারটা, সেরকম উপযোগী করে দিতে হবে।উদ্দেশ্য একটাই, রোগী যেন পানিশূন্যতায় না ভোগে।


আরও দেখুন: