মাথা ঘোরার কারণ ও করণীয়
মাথা ঘোরার কারণ ও করণীয় সম্পর্কে লিখেছেন ডা. আবুল ফয়সাল মোহাম্মদ নুরুদ্দীন চৌধুরী
মাথা ঘোরা বা মাথা ব্যথার কারণে অনেকে প্রায়শই সমস্যায় পড়ে থাকেন। আমাদের চোখ, মস্তিষ্ক, কান, পা এবং মেরুদণ্ডের শিরাগুলি শরীরকে ভারসাম্য বজায় রাখতে একসাথে কাজ করে।
কখনও কখনও এটি মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। এর ফলে যদি আপনি পড়ে যান তবে এটি আরও মারাত্মক হতে পারে। এইরূপ কোনও ক্ষেত্রে অবিলম্বে আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
মাথা ঘোরা বা ভারটাইগো হলো এমন একটি অবস্থা, যেখানে মনে হয় আক্রান্ত ব্যক্তি নিজেই ঘুরছেন বা তার চারপাশ ঘুরছে। মাথা তুলতেই পারেন না অনেকে। সঙ্গে থাকে বমি বমি ভাব ও বমি।
মাথা ঘোরার রয়েছে নানা কারণঃ
* বিনাইন প্যারোক্সিমাল পজিশনাল ভারটাইগো (বিপিপিভি)ঃ এটি খুব মারাত্মক নয়। চিকিৎসায় এটি পুরোপুরি ভালো হয়ে যায়। এ ক্ষেত্রে আক্রান্ত ব্যক্তি হঠাৎ মাথা কোনো একদিকে ফেরালে বা শুধু একটি নির্দিষ্ট দিকে ফেরালে মাথা ঘোরা শুরু হয়ে যায়।
* অন্তকর্ণের প্রদাহঃ সাধারণত ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়ায় অন্তকর্ণে সংক্রমণের ফলে মাথা ঘোরা দেখা দিতে পারে। এতে হঠাৎ মাথা ঘোরা শুরু হয়। এর পাশাপাশি শ্রবণশক্তি হ্রাস পেতে পারে।
* মেনিয়ার্স ডিজিজঃ এটিও কানের একটি রোগ। তিনটি উপসর্গ থাকে একসঙ্গে। মাথা ঘোরা, কানের মধ্যে ভোঁ ভোঁ শব্দ করা ও শ্রবণশক্তি কমে যাওয়া। এ রোগে আক্রান্তরা কিছু দিন পুরোপুরি সুস্থ থাকেন।
* অ্যাকোয়েস্টিক নিউরোমাঃ এটি স্নায়ুর টিউমার। এ ছাড়া সেরেবেলার রক্তক্ষরণ, মাল্টিপল স্টেরোসিস, মাথায় আঘাত, মাইগ্রেনেও হতে পারে মাথা ঘোরা।
* অন্যান্য কারণেঃ মাথা ঘোরা কখনও কখনও অন্যান্য রোগের লক্ষণ হতে পারে। যেমন মাইগ্রেন, টেনশন, স্নায়ুতন্ত্রের সমস্যা, মস্তিষ্কের টিউমার বা কানের টিউমার। এ জাতীয় রোগে মাথা ঘোরা ছাড়া অন্য লক্ষণও দেখা যায়।
চিকিৎসকের যখন প্রয়োজনঃ
বেশিরভাগ মাথা ঘোরাই মারাত্মক নয়। যদিও মাথা ঘোরার কারণে স্ব্বাভাবিক কাজকর্মে ব্যাঘাত ঘটে। তারপরও মাথা ঘোরা দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। কারণ, মাথা ঘোরার পেছনে মারাত্মক কিছু কারণও আছে। চিকিৎসক পরীক্ষা করে দেখবেন কী কারণে মাথা ঘোরার সমস্যা দেখা দিয়েছে। মাথা ঘোরার সঙ্গে তীব্র মাথাব্যথা, একটি জিনিস দুটি দেখা, হাঁটতে সমস্যা হওয়া, কথা জড়ানো বা স্পষ্ট না হওয়া, শারীরিক দুর্বলতা দেখা দিলে দেরি না করে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নিতে হবে।