যেসব কারণে সন্তান হয় না
গর্ভধারণ নিয়ে আমাদের সমাজে অনেক ভুল ধারণা আছে
বন্ধ্যত্ব মানেই হলো কোনো জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার ছাড়া স্বামী-স্ত্রী এক বছর একসঙ্গে থাকার পরও সন্তান না হওয়া।
অনেক সময় আমাদের কাছে দুই তিন মাস পরেই চলে আসেন। তখন আমরা তাদের থেকে একটু ইতিহাস বা বর্ণনা নেওয়া চেষ্টা করি যে তাদের বড় কোনো সমস্যা আছে কি না? তার পিরিয়ডের সময় মাসিক অনিয়মিত হচ্ছে কিনা? ব্যথা বা অন্য কোনো সমস্যা আছে কিনা? অথবা স্বামীরও কিছু ইতিহাস আমরা নিয়ে থাকি। তাদের যে সম্পর্ক বা রিলেশনশিপ ঠিক আছে কিনা সেটাও আমরা দেখে থাকি?
গর্ভধারণ না হলে যেসব পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন চিকিৎসকরা
অনেকে জানেনও না যে কখন বাচ্চা পেটে যায়। এ বিষয়ে আমরা ওই নারীকে কাউন্সিলিং করি এবং দরকার হলে ইনভেস্টিগেশন বা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে থাকি।
সাধারনত আমরা এক বছরের আগে কোনো পরীক্ষা করতে চাই না। আমি তাদেরকে বলি যে এই সময় আপনাদের একসাথে থাকা উচিত। এমন সময় হাসবেন্ডরা থাকলে ওই সময় সন্তান ধারণ সম্ভব হবে, সেই সময় সম্বন্ধে তাদেরকে ধারনা দিয়ে থাকি। সেভাবেই পরবর্তীতে একটু কাউন্সেলিং করে থাকি।
এক বছর থাকার পরেও যদি গর্ভধারণ না করে সেক্ষেত্রে আমারা কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে থাকি। এক্ষত্রে স্বামী এবং স্ত্রী দুইজনকেই কিছু পরীক্ষা করতে হয় যেমন আলট্রাসনোগ্রাফি করে দেখা যে ইউটাস বা ওভারিতে কোন সিস্ট আছে কিনা। হরমোনের কোন সমস্যা আছে কিনা। থাইরয়েডে সমস্যা অথবা ডায়াবেটিস আছে কি না। একইভাবে আবার আমরা হাজবেন্ডকেও দেখে থাকি যে তার সিমেন (বীর্য) ঠিক আছে কি না। সিমেন কোয়ালিটি অথবা মুভমেন্ট ঠিক আছে কিনা। এই পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পরে যদি কোনো সমস্যা পাওয়া যায় সেই অনুযায়ী আমরা তাদের চিকিৎসা করে থাকি। স্বামী-স্ত্রী মধ্যে কার সমস্যা আছে সেটা আমাদের অবশ্যই খুঁজে বের করতে হবে।
আমাদের সমাজে অনেক ভুল ধারণা আছে যেমন অনেকেই ভাবেন যে যখন বাচ্চা না হয় এটার জন্য স্ত্রী দায়ী। বিশেষ করে শ্বশুরবাড়িতে সেই জন্য স্ত্রীকে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। অনেক সময় এরকমও দেখা যায় যে বিয়েটা ভেঙেই যায়। ভেঙে দিয়ে আবার নতুন করে বিয়ে করায় ছেলেকে। কিন্তু তারা একবারও ভাবেন না যে ছেলেও এব্যাপারে দায়ী থাকতে পারেন। চিকিৎসা করলে এখন অনেকাংশে এই সমস্যা ঠিক হয়ে যাচ্ছে। সেই ক্ষেত্রে আমরা তাদেরকে এটা বুঝিয়ে বলে থকি।
অনেক সময় আমাদের দেশের স্বামীরা দেশের বাইরে থাকেন। তারা দেশে আসার পর এই সমস্যায় পড়লে টেস্ট করতে চাই না। তারা সোজাসুজি বলে দেন আমার কোন সমস্যা নেই, স্ত্রীর সমস্যা। এই জায়গায় তাকে বুঝতে হবে যে দুইজনকেই টেস্টগুলা করাতে হবে। চিকিৎসা করালে অবশ্যই উনি বাবা হতে পারবেন। সুতরাং এটা থেকে এড়িয়ে চলার কোন প্রয়োজন নেই।
আজকাল অনেক কিছু আছে শুধু ওষুধ না, ওষুধ দিয়ে যদি না হয় তারপরে একটা আইওআই বলে ব্যাপার আছে যে স্বামীর সিমেনটা স্ত্রীর ভিতরে পুশ করা। আরও আধুনিক চিকিৎসা আছে যেমন আইবিএফ বা টেস্ট-টিউব বেবির মতো অত্যাধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি। সুতরাং আপনারা যারা এই সমস্যায় ভুগছেন তারা হতাশ না হয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।