শীতে শিশুর যত্ন
অধ্যাপক ডা. মালিহা রশিদ
শীত থেকে আমাদের সবারই প্রটেকশন নেওয়া দরকার। শীত যে স্বাস্থ্যের জন্য বিশাল একটা হুমকি তা কিন্তু না। সব দেশেই শীত পড়ে। তবে, শীতের দেশে আরো বেশি অনুভব হয়। তার মধ্যেই বাচ্চা-কাচ্চারা খালি গায়ে দৌঁড়াদৌঁড়ি করে। ঝাঁপাঝাঁপি করে। পানিতে সাঁতার কাটে। ওদের কিন্তু কিছুই হয় না।
ঠান্ডা বেশি পড়লে আমরা বলি, গোসলের দরকার নেই। সাঁতারের দরকার নেই। ঘরের বাইরে যাবে না।
একটা কথা মনে রাখতে হবে- ঠান্ডায় যাদের এলার্জি থাকে, কেবল তাদেরই কিন্তু এলার্জি হয়, সর্দি কাশি হয়। তাই আগে বুঝে নিতে হবে, আমার অথবা বাচ্চার ঠান্ডায় এলার্জি আছে কিনা। ঠান্ডা এলার্জি থাকলে বাহিরে না যেতে দেওয়াই ভালো।
একটু রোদে থাকা উচিত, রোদে অনেক ভিটামিন ডি আছে। আমাদের সব শ্রেণির মানুষের মাঝেই ভিটামিন ডি'র প্রচুর অভাব দেখা যায়। তাই, একটু রোদে রাখতে/থাকতে হবে।
অনেকে বাচ্চার গায়ে তেল মালিশ করেন। এটা করার দরকার নাই। কারণ, তেল মালিশ করলে শরীরে থাকা লোমকূপের গ্ল্যান্ডগুলো বন্ধ হয়ে যায়। এ জন্য পরে কমপ্লিকেশন দেখা যায়।
বাচ্চার মায়ের ঠান্ডা লাগলে, বাচ্চারও ঠান্ডা লেগে যায়। ঠান্ডা প্রটেকশনের জন্য বাচ্চাকে যতটুকু কাপড় পরিধান করানো দরকার, ততটুকু পরাতে হবে।
মায়েদেরকে আমরা বলি, নরমালি যেমন সবাই চলাফেরা করে, তারাও তেমনি চলাফেরা কাজকর্ম সবই করতে পারবেন। তাদের শুধু একটু অতিরিক্ত বিশ্রাম দরকার। দুপুরে দু'ঘন্টা ঘুমানো, রাতে আট ঘণ্টা ঘুমানো। খাবার-দাবার সবাই যা খায়, তার চেয়ে একটু বেশী ও ভালো খেতে দেওয়া। একটু ভালো চিন্তা করা, বই পড়া, টেলিভিশন দেখা, গান শোনা।
মনে শান্তি থাকা মানে, সুস্থ মন সুস্থ শরীর। তার সঙ্গে সুস্থ খাবার এবং একটু বিশ্রাম- এগুলো মায়ের জন্য দরকার।
এছাড়াও সময় মতো ডাক্তারের কাছে নিয়ে চেকআপ করাতে হবে। পরিবারের সবাই সচেতন থাকবে যে, বাসায় একটা গর্ভবতী মহিলা আছে, একটা নতুন বাচ্চা হবে। সেই বাচ্চাটার কিভাবে যত্ন নেবে অথবা পরিচর্যা করবে- এ নিয়ে পরিবারের সবাইকে প্রিপেয়ার্ড থাকা দরকার।
লেখক : অধ্যাপক ডা. মালিহা রশিদ
বিভাগীয় প্রধান (প্রাক্তন) স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যা বিভাগ
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।