হার্ট অ্যাটাক না কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট, কীভাবে বুঝবেন
বড় ধরনের কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের কারণে বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী শ্রীদেবীকে বাথরুমে অচেতন অবস্থায় পাওয়া যায়
চিকিৎসাবিজ্ঞানের ন্যূনতম জ্ঞান থাকলেই তাদের কাছে ‘কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট’ ও ‘হার্ট অ্যাটাক’ মোটেই অপরিচিত শব্দ নয়। কিন্তু সাধারণ মানুষ দুটিকে একই ভেবে বিভ্রান্ত হন। দুটি বিষয় এক মনে হলেও সূক্ষ্ম পার্থক্য রয়েছে।
বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী শ্রীদেবী মাত্র ৫৪ বছর বয়সে চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি দুবাইতে মারা যান। পরে জানা যায়, বড় ধরনের কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের কারণে বাথরুমে তাকে অচেতন অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল। হাসপাতালে নিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি। চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এখন প্রশ্ন আসতে পারে কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট কি? হঠাৎ হৃদযন্ত্র শরীরে রক্ত চলাচল বন্ধ করার অবস্থাকে কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট বলা হয়। হার্টে ইলেকট্রিক সংকেত যাওয়ার পর এ ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। মস্তিষ্ক কোনো অক্সিজেন পায় না এবং হার্ট রক্ত সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। রোগীর শ্বাস নিতে কষ্ট হয় এবং একটি পর্যায়ে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন।
কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের অনেকগুলো কারণের মধ্যে অন্যতম একটি হলো হার্ট অ্যাটাক। হার্টে জন্মগত ত্রুটি কিংবা ইলেকট্রিক পদ্ধতিতে সমস্যা থাকলে, কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের ঝুঁকি বেশি থাকে। কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে হঠাৎ করেই রোগীর সব কর্মক্ষমতা হারিয়ে যায়।
অবশ্য এমন অবস্থার আগে শরীর কিছু সতর্ক সংকেত দেয়। যেমন- সামান্য বুকব্যথা, শ্বাস-প্রশ্বাস কমে আসা, অস্বস্তিবোধ ও মাথা ঘোরা। অব্যাহত স্ট্রেস এবং খাদ্যতালিকার প্রভাবে কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের ঝুঁকি বেশি থাকে। এ জন্য জীবনাচারণে পরিবর্তন ও ভারসাম্যপূর্ণ খাদ্যের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।
এখন প্রশ্ন জাগতে পারে, কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট এবং হার্ট অ্যাটাক একই কিনা? দুটি বিষয়ে সাধারণ মানুষ বিভ্রান্ত হলেও চিকিৎসাবিজ্ঞানে এমন সুযোগ একদম নেই। হার্ট অ্যাটাককে মায়োকার্ডিয়াল ইনফ্রাকশন বলা হয়। এর ফলে মুহূর্তে হার্টের রক্ত প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়। হার্টের কোনো অংশে রক্তের প্রবাহ কমে গেলে বা একেবারে না পৌঁছলে নির্দিষ্ট ধমনী মারা যেতে থাকে, যা চিকিৎসা পরিভাষায় ইনফ্রাকশন। হার্ট অ্যাটাকের পরও হৃদস্পন্দন থাকে এবং কাজ করে, যদিও সেটি ততটা দক্ষতার সঙ্গে না।
অন্যদিকে কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে হার্ট মুহূর্তের মধ্যে শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ করে দেয়। ইলেকট্রিকাল পদ্ধতির কারণে মস্তিষ্কসহ পুরো শরীরে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। হঠাৎ করে কারও শরীর ভেঙে পড়লে এবং কোনো অংশে জড়তা দেখা দিলে তিনি কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে আক্রান্ত ধরে নিতে হবে।
এ সময় রোগীকে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন কার্ডিও-পালমোনারি রিসাকশান বা সিপিআর দেওয়া এবং দ্রুত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে নিতে হবে।