বুক জ্বালাপোড়া থেকে খাদ্যনালীর ক্যান্সার, করণীয়
বুক জ্বালাপোড়া হাইপারঅ্যাসিডিটি-র প্রধান লক্ষণ।
খাবার গ্রহণের অব্যবহিত পরই দুপুরের পর বিকেলের দিকে অথবা রাতে শুয়ে থাকা অবস্থায় কিংবা সামনের দিকে ঝুঁকে কাজ করার সময় বুকের মাঝ বরাবর অস্বস্তিকর জ্বালাপোড়ার অনুভূতি যা গলায় কিংবা ঘাড় পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে।
এতে মুখে তেতো কিংবা টক স্বাদ অনুভূত হতে পারে। এ অবস্থাটি কয়েক মিনিট হতে কয়েক ঘন্টা ব্যাপী স্থায়ী হতে পারে।
এমনতরো অভিজ্ঞতা নারী পুরুষ আবালবৃদ্ধবনিতা সবারই জীবনে কখনও না কখনও হয়ে থাকে এবং এতে আশংকাজনক কোনো কিছু হওয়ার সম্ভাবনা নেই। বর্তমানে বাংলাদেশে ২০ শতাংশ মানুষ এ রোগে ভূগছেন। বুক জ্বালাপোড়া হাইপারঅ্যাসিডিটি-র প্রধান লক্ষণ। এটি একটি প্রতিরোধযোগ্য রোগ।
এই রোগের কারণঃ
দেহের স্থুলতা ও ওজনাধিক্য, গর্ভাবস্থা,হায়াটাস হার্নিয়া, জারড (GERD), ধূমপান, মদ্যপান, অনিদ্রা, অধিক রাত জাগা, খাওয়ার পরপরই শুয়ে পড়া, কার্বোনেটেড কোমল পানীয়, চা, কফি, চকোলেট ; কিছু কিছু ওষুধ - অ্যাসপিরিন, ব্যথা নাশক ওষুধ, অতিরিক্ত ফাস্ট ফুড এবং বাজে তেল ও চর্বিযুক্ত খাবার।
রোগের লক্ষ্মণঃ
বুক জ্বালাপোড়া, খাবার উপরের দিকে উঠে আসা, বুকে ব্যথা অথবা পেটের উপরিভাগে ব্যথা,বমি বমি ভাব, মুখে অতিরিক্ত লালা আসা,খাবার গিলতে সমস্যা, মুখে দুর্গন্ধ,দুর্গন্ধযুক্ত শ্বাস, শুকনো কাশি হওয়া।
যেসব নিয়ামকের প্রভাবে বুক জ্বালাপোড়া হয়ঃ
পেঁয়াজ খাওয়ার পর, টক জতীয় ফল খাওয়ার পর, উচ্চ চর্বি জাতীয় খাবার, টমেটো, টমেটো দিয়ে তৈরি খাবার, মদ্যপান, টক জতীয় ফলের রস ইত্যাদি।
রোগ নিরাময়ে করণীয়ঃ
· দৈহিক ওজন কাঙ্খিত মাত্রায় বজায় রাখা,
· অত্যধিক আহার বা পেট পুরে খাওয়া বর্জন করা,
· কিছুক্ষণ পরপর অল্প অল্প করে খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করা,
· একসাথে ভরপেট খাবার গ্রহণে বিরত থাকা,
· পরিমিত বিশুদ্ধ ও সুষম খাবার গ্রহণ,
· বিছানার মাথার দিকের অংশ উঁচু করে রাখা কিংবা একটি বালিশের বদলে দুটি বালিশ ব্যবহার করা,
· ঘুমাতে যাওয়ার অন্তত ৩ ঘন্টা পূর্বে রাতের খাবার শেষ করার অভ্যাস তৈরি করা,
· খাবার গ্রহণের পরপরই শুয়ে পড়ার অভ্যাস পরিহার করা,
· ঢিলেঢালা পোশাক পরিধান করা,
· অতিরিক্ত ফাস্ট ফুড, গুরুপাক ও বাজে তেলে তৈরি খাবার পরিহার করা,
· ধূমপান ও মদ্যপানের অভ্যাস পরিত্যাগ করা,
· প্রত্যহ নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম করা ;
· ধর্মীয় ও সৃজনশীল কাজ এবং পরহিতব্রতে নিয়োজিত থেকে হাসি খুশি ও সন্তুষ্ট চিত্তে জীবন যাপন করা।
সঠিক চিকিৎসা না করালে যা হতে পারেঃ
খাদ্য নালীতে প্রদাহ, খাদ্য নালীতে ক্ষত, খাদ্য নালী সরু হয়ে যাওয়া, দীর্ঘ মেয়াদে গলা ব্যথা,কন্ঠ স্বরের পরিবর্তন (কর্কশ কন্ঠ), শ্বাসকষ্ট, দন্ত ক্ষয় এবং মাড়ির সমস্যা, ঘুমের মধ্যে খাবার উপরে উঠে আসায় হঠাৎ ঘুম ভেঙে যাওয়া,খাদ্য নালীতে ক্যান্সার।