রোজায় বাড়ে ডায়াবেটিসের যেসব জটিলতা, করণীয়

ডা. শাহজাদা সেলিম
2022-04-06 16:31:25
রোজায় বাড়ে ডায়াবেটিসের যেসব জটিলতা, করণীয়

ডায়াবেটিস মেপে সুগার ৩ দশমিক ৯ হলে অবশ্যই রোজা ভেঙে ফেলতে হবে

ডায়াবেটিস আক্রান্তদের শরীরে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে। এজন্য রোজা রাখলে তাদের কিছু সমস্যা রয়েছে, যা জটিল আকার নিতে পারে। এর মধ্যে ১৪-১৫ ঘণ্টা রোজা রাখার ফলে রক্তে গ্লুকোজ কমে যেতে পারে। পানিস্বল্পতা দেখা দিতে পারে।

যাদের আগে থেকে কিডনিতে সমস্যা রয়েছে, তা রোজার ফলে হঠাৎ করে বেড়ে যেতে পারে। ডায়াবেটিস আক্রান্ত অনেকে মনে করেন, রোজা রেখে তিনি ওজন কমিয়ে ফেলতে পারবেন। কিন্তু এ ধারণা সবার ক্ষেত্রে সঠিক নয়।

রমজানের পর দেখা যায়, কারও ওজন অনেক বেড়ে যায়। আবার কারও কমে। এজন্য নিরাপদে রমজান পালনের জন্য ডায়াবেটিস রোগীদের আগে থেকে প্রস্তুতি নিতে হয়।

ডায়াবেটিস আক্রান্তদের পানিশূন্যতা দেখা দিলে ঠোঁট, মুখ, চোখ শুকিয়ে যাবে। এটি আক্রান্ত নিজেই বুঝতে পারবেন। শরীরে দুর্বলতা দেখা দেবে। ডায়রিয়ায় যে ধরনের পানিশূন্যতা দেখা দেয়, ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রেও একই রকম পানিশূন্যতা দেখা দেবে।

রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে গেলে রক্ত ঘন হয়ে যায়। এটি রক্তনালি বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণ হতে পারে এবং খুবই ভয়াবহ বিষয়। তাই রোজার সময় অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে। ডায়াবেটিস মেপে সুগার ৩ দশমিক ৯ হলে অবশ্যই রোজা ভেঙে ফেলতে হবে। সেই মুহূর্তে গ্লুকোজ জাতীয় কিছু থাকলে পানিতে মিশিয়ে খেয়ে ফেলতে হবে। তা না থাকলে চিনিজাতীয় বা মিষ্টিজাতীয় খাবার খেয়ে নিতে হবে। ঘরে মধু থাকলে আঙুলে নিয়ে জিহ্বার নিচে দিলে খুবই দ্রুত কাজ করবে।

সুগার কমে গেলে এ কাজগুলো সাথে সাথে করতে না পারলে স্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়ে যায়। রোগী অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে এবং এক্ষেত্রে মৃত্যুর সম্ভাবনা অনেক বেশি। যেহেতু রোজার সময় ঝুঁকি অনেক বেশি থাকে, তাই সাবধানতাও বেশি করে নিতে হবে।

রক্তে সুগার বেড়ে গেলে ঘনঘন পানির পিপাসা পাবে ও প্রস্রাব হবে। রোগী কাজ করার কোনো শক্তি পাবে না। এমনটি হলে সুগার মেপে নিতে হবে এবং সুগার লেভেল ১৬ দশমিক ৭ এর ওপরে গেলে রোজা ভেঙে ফেলতে হবে। কারও সুগার লেভেল ১৩ কিংবা ১৪ থাকলে ইনসুলিন নিয়ে রোজা রাখতে পারবেন।

৩০ থেকে ৫০ বছর বয়সীদের একটা নির্দিষ্ট সময় পরপর ডায়াবেটিস পরীক্ষা করা উচিত। কারণ আমাদের দেশের ৫৬ শতাংশ মানুষই জানেন না, তার শরীরে ডায়াবেটিস বাসা বেঁধে আসে। এজন্য সব সময় নিজের স্বাস্থ্যের বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে।

বিশেষ করে ডায়াবেটিস রোগীদের ঘরে-বাইরে সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে। করোনার মধ্যে যতটুকু সম্ভব ভিড় এড়িয়ে চলতে হবে। বাইরে গেলে মাস্ক পড়তে হবে, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে হবে। বাইরে থেকে এসে কাপড় চোপড় পরিষ্কার করে ফেলতে হবে, হাত-পা ধুয়ে পরিষ্কার করে ফেলতে হবে।


আরও দেখুন: