দুগ্ধদানকারী মায়েদের স্বাস্থ্য উপযোগী জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি
দুগ্ধদানকারী মায়েদের স্বাস্থ্য উপযোগী জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি
শিশুর মাতৃদুগ্ধপান একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যেটা আমরা বলে থাকি, ‘এক্সক্লুসিভ ব্রেস্টফিডিং’ অর্থাৎ মাতৃদুগ্ধ ছাড়া শিশুকে ছয় মাস বয়স পর্যন্ত কোনো কিছুই দেওয়া যাবে না। এই সময়টুকুতে মায়েরা এমন জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার করবেন, যাতে শিশুর মাতৃদুগ্ধ পান বিঘ্নিত হওয়ার মতো কোনো প্রভাব না পড়ে।
আমরা যে সমস্ত জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি সাধারণত ব্যবহার করে থাকি, তার মধ্যে যেমন- জন্মনিয়ন্ত্রণ খাবার বড়ি খুবই উপযোগী। কিন্তু খাবার বড়িতে ইস্ট্রোজেন এবং প্রোজেস্টেরন দু’টি হরমোন থাকে। ইস্ট্রোজেন বুকের দুধ কমিয়ে দেয়।
এজন্য আমরা দুগ্ধদানকারী মায়েদের শুধু অনলিপ্রোজেস্টেরন কন্টেইনিং পিল সেবনের পরামর্শ দিই। ‘মিনিপিল’, ‘মিনিকন’ এবং সরকারি ব্যবস্থাপনায় ‘আপন পিল’ হচ্ছে অনলিপ্রোজেস্টেরন পিল।
অথবা যেটা আমরা বলছি, ইনজেকটেবল কন্ট্রাসেপটিক তথা শুধু প্রজেস্টেরন থাকে এমন ইনজেকশন নিতে পারেন। আমাদের দেশের নারীদের জন্য ইনজেকশন নেওয়া অনেক বেশি কার্যকর। কারণ অনেক সময় বড়ি খেতে ভুলে যায়, বড়ির পাতা ঠিক মতো থাকে না, তাদের মনে থাকে না। এজন্য ইনজেকশনই বেশি কার্যকর।
বর্তমানে আমরা দুগ্ধদানকারী মায়েদের অনেক সময় ‘পোস্টপার্টাম আইওসিডি’র বিষয়ে উৎসাহিত করছি। আমাদের দেশে নারীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষাকে সামনে রেখে অন্তত দুই বছর পরে পরবর্তী বাচ্চা নেওয়া উচিত। তাহলে দীর্ঘ দুই বছর সময় তাদের জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি খাওয়ার যেহেতু কিছুটা বাধ্যবাধকতা আছে, ছয় মাস পর্যন্ত তারা শুধু অনলিপ্রোজেস্টেরন পিল খেতে পারবেন।
এরপর বড়ি খেতে গিয়ে অনেকেই তালগোল পাকিয়ে ফেলেন, যদিও তারা ছয় মাস পর অন্য বড়ি খেতে পারেন। সেজন্য বলা হচ্ছে, এই সময়ে Intr-uterine Device যেটা বাজারে কপারটি নামে পরিচিত, এই দীর্ঘমেয়াদি পদ্ধতি নেওয়া যেতে পারে।
অর্থাৎ বাচ্চা হওয়ার পরে আমরা তাদের জরায়ুতে একটা কপারটি প্রতিস্থাপন করে দিতে পারলে, তাহলে তাদের সময়মতো যখন কপারটি খুলে নেবে তখন তারা আবার গর্ভধারণ করতে পারবেন।
আমরা বলছি, দীর্ঘমেয়াদি পদ্ধতিগুলো একবার গর্ভধারণের পর মায়েদের জন্য বেশি উপযোগী। যদিও তারা বড়িও খেতে পারেন। কিন্তু ইনজেকশন, আইওসিডি এবং ইমপ্ল্যান্ট বেশি উপযোগী।