জরায়ুমুখ ক্যান্সারের লক্ষণসমূহ
ক্যান্সার যত দ্রুত শনাক্ত হয়, চিকিৎসায় ভালো হওয়ার সম্ভাবনা তত বেশি থাকে।
স্তন ক্যান্সারের পরেই নারীদের মধ্যে জরায়ুমুখের ক্যান্সার বা সার্ভাইক্যাল ক্যান্সারের প্রকোপ বেশি দেখা যায়। ক্যান্সার যত দ্রুত শনাক্ত হয়, চিকিৎসায় ভালো হওয়ার সম্ভাবনা তত বেশি থাকে। এজন্য জরায়ুমুখ ক্যান্সারের লক্ষণগুলো জেনে রাখা জরুরি।
জরায়ুমুখ ক্যান্সারের লক্ষণগুলো প্রাথমিকভাবে আমরা দুই ভাগে ভাগ করতে পারি। ১. যাদের মাসিক বন্ধ হয়ে গেছে তাদের লক্ষণগুলো। ২. যাদের মাসিক বন্ধ হয়নি, তাদের লক্ষণগুলো।
যাদের মাসিক বন্ধ হয়ে গেছে তাদের কথা যদি বলি, মাসিক বন্ধ হয়ে গেছে এবং যাদের বয়স ৫০ বছরের ওপরে ৬০ বছরের মতো। ৫০ বছর বয়সে একজনের মাসিক বন্ধ হয়ে গেছে। হঠাৎ দেখা গেছে তার মাসিক শুরু হয়েছে ৬০ বছর বয়সে এসে- এটা স্বাভাবিক নয়। সুতরাং যদি এরকম দেখা যায়, মাসিক বন্ধ হয়ে যাওয়ার ৫/৬ বছর পরে আবার নতুন করে মাসিক শুরু হয়েছে, তাহলে বুঝতে যে এটা গুরুত্বপূর্ণ সতর্কবার্তা। সুতরাং এটা আমাকে মাথায় নিতে হবে যে, ক্যান্সারের একটা ঝুঁকি অবশ্যই আছে।
দ্বিতীয় হচ্ছে- স্বামীর সঙ্গে মেলামেশার পর যদি ব্লিডিং হয়, তাহলে বুঝতে হবে জরায়ুতে কোনো ঘা আছে, যেখানে আঘাতের কারণে সেখান থেকে রক্তক্ষরণ হচ্ছে।
এছাড়া যদি রোগটা অনেক বিস্তার লাভ করে, ছড়িয়ে পড়ে আশপাশে, তখন কিন্তু ব্যথা শুরু হয়। প্রাথমিকভাবে কিন্তু কোনো ব্যথা থাকে না। কিন্তু যখন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে, তখন ব্যথা শুরু হতে পারে। বিশেষ করে কোমরের দিকে ব্যথা হতে পারে। দেখা যায় ব্যথাটা পায়ের দিকে ছড়িয়ে যাচ্ছে। আর এগুলো হচ্ছে মূলত উপসর্গ।
এরপর যাদের মাসিক বন্ধ হয়নি তাদের ক্ষেত্রে কী হবে? তাদের ক্ষেত্রে দেখা যাবে- মাসিক সময় সময় অনেক বেশি মৃদু হচ্ছে। আবার মাসিক তো সাধারণত একমাস পরপর হয়। দুই মাসিকের মাঝখানে দেখা যাচ্ছে যে আবার ব্লিডিং হচ্ছে, ২/৩ দিন পরপর আবার ব্লেডিং হচ্ছে। স্বামীর সঙ্গে মেলামেশা করলে ব্লিডিং হচ্ছে। শুধু ব্লিডিং নয়, অনেক সময় দেখা যায় সাদা ঘন দুর্গন্ধযুক্ত ডিজচার্জ হচ্ছে। ব্লাড নাও আসতে পারে সেই ডিজচার্জে। কিন্তু দুর্গন্ধযুক্ত কি-না সেটার দিকে কিন্তু খেয়াল রাখতে হবে।
এটাকে আমরা অনেক সময় এড়িয়ে যাই। নারীদের এরকম সাদা ডিজচার্জ তো আসেই, এটা ভয়ের কিছু না। কিন্তু যদি অনেক দুর্গন্ধযুক্ত এবং ঘন ডিজচার্জ আসে, তাহলে তাহলে এড়িয়ে যাওয়া যাবে না। দ্রুত ডাক্তারের কাছে যেতে হবে। সেক্ষেত্রে আমি মনে করি, প্রাথমিকভাবে গাইনোকোলজিস্টের কাছে যাওয়াই ভালো হবে।