মাত্র দুটি অভ্যাস বদলে প্রতিরোধ করুন ডায়াবেটিস
দেশে ডায়াবেটিসে আক্রান্তের হার বাড়ছে
বাংলাদেশে ডায়াবেটিসে আক্রান্তের হার বাড়ছে। দুই বছর অন্তর ডায়াবেটিসে আক্রান্তের জরিপকারী ইন্টারন্যাশনাল ডায়াবেটিস ফেডারেশন (আইডিএফ) বলছে, ৬ শতাংশ বেড়ে বাংলাদেশ ডায়াবেটিসের প্রকোপ এখন ১৪, যা সত্যিই উদ্বেগের।
টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের ৫০ শতাংশের কোনো লক্ষণ প্রকাশ পায় না। দুই বছর আগে যেখানে ডায়াবেটিসের প্রকোপ ৮ শতাংশ ছিল, এখন তা ১৪ দশমিক ১ এবং এটি খুবই আলার্মিং। সুতরাং এ ডায়াবেটিস প্রতিরোধে আমাদের আরও মনোযোগী হতে হবে।
অনেকেই ভাবে, পরিবারে ডায়াবেটিস আছে, আমার তো ডায়াবেটিস হবেই। আমি প্রতিরোধ কীভাবে করব? প্রতিরোধ করতে হবে সবাইকে। তবে তার আগে জানতে হবে কারা ডায়াবেটিসের উচ্চ ঝুঁকি আছে।
যাদের ফ্যামিলি হিস্ট্রি ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশন, যাদের কোলেস্টোরল বেশি ও ওজন বেশি, তারা ডায়াবেটিসের উচ্চ ঝুঁকিতে আছেন।
এছাড়া কিছু কিছু ক্ষেত্রে ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়। যেমন- যে নারীর প্রথম প্রেগনেন্সিতে ডায়াবেটিস ধরা পড়ে, তার এটি হওয়ার ঝুঁকি বেশি। যার আগের প্রেগনেন্সিতে মিসহ্যাব বা এবোরশন, মিসক্যারেজ বা ইন্টারনাল ডেথ বা গর্ভের সন্তানের মৃত্যু হয়েছে, তাদেরও কিন্তু ডায়াবেটিস হবার ঝুঁকি অনেক বেশি। আবার কিছু হরমোনাল রোগ রয়েছে, যেমন- থাইরয়েড, পলিসিস্টিক ওভারি, তাদেরও ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি।
প্রতিরোধে করণীয়
প্রথম এবং পূর্ব শর্ত হচ্ছে, কোনোভাবেই ওজন বাড়তে দেওয়া যাবে না। ওজন বৃদ্ধি ঠেকাতে হবে। তাহলে অনেকাংশে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে। ওজন নিয়ন্ত্রণে লাইফ স্টাইল বা জীবনাচারে অবশ্যই দুটি পরিবর্তন আনতে হবে। তাহলো- সুনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভাস ও নিয়মিত হাঁটা বা শরীর চর্চা করা।
আমরা পরামর্শ দিলেও সবার পক্ষে সব সময় মানা সম্ভব হয় না। তারপরও আমরা জনগণকে সচেতন করতে বলে থাকি। আবার যারা উচ্চ ঝুঁকিতে আছেন, তাদের ব্যক্তিগতভাবে এ দুটি কাজে উদ্বুদ্ধ করি।
এজন্য এলাকায় একটি ওয়াকিং ক্লাব তৈরি করা যেতে পারে। একটি নির্দিষ্ট সময়ে প্রতিদিন সেখানে সবাই জড়ো হয়ে, পরে নিয়মিত হাঁটবেন, শরীর চর্চা করবেন। এটি করলে সবারই আসার বাধ্যবাধকতা তৈরি হবে।
হাঁটা অবশ্যই কার্যকর হতে হবে। গল্প করতে করতে কিংবা ধীরে হাঁটলাম, তা কিন্তু ডায়াবেটিস প্রতিরোধে আমরা যেটি চাচ্ছি, সেটি পাব না। অবশ্যই একটা সুনির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট গতিতে হাঁটতে ও শরীর চর্চা করতে হবে।
এককভাবেও শরীর চর্চা গুরুত্বপূর্ণ, যদি কেউ নিয়মিত করতে পারেন। হোক তা বাসার ছাদে কিংবা ইনডোরে। স্কিপিং করতে পারেন, ট্রেডমিল বা সাইকেল ইউজ করতে পারেন। যে শরীর চর্চা ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখবে, সেটি ডায়াবেটিস প্রতিরোধের জন্য যথেষ্ট হবে।