জোরে ব্রাশ ক্ষতিকর, জেনে নিন সঠিক টেকনিক

ডা. মুনিয়াত রহমান
2022-01-04 15:54:55
জোরে ব্রাশ ক্ষতিকর, জেনে নিন সঠিক টেকনিক

দাঁতের সমস্যা এড়াতে চাইলে স্নাকস জাতীয় কিছু খেলে তাৎক্ষণিক কুলকুচির অভ্যাস করতে হবে

আমাদের কাছে অনেক রোগী অভিযোগ করেন, তিন বেলা ব্রাশ করেও তার নানা সমস্যা থেকে যাচ্ছে। আসলে আমরা ব্রাশ ঠিকই করছি, কিন্তু সঠিকভাবে করছি না। এজন্য নানা সমস্যা দেখা দিচ্ছে।

এজন্য সঠিক টেকনিকে ব্রাশ করা জরুরি। অনেকে উপরের মাড়িতে সমান্তরালভাবে ধরে ব্রাশ করেন। এটা ঠিক না। সঠিক টেকনিক হলো, মাড়ি ও দাঁতের সংযোগস্থলে ব্রাশ রাখতে হবে। একটু বাঁকা করে ৪৫ ডিগ্রি কোণে রেখে দু-তিনটা করে দাঁতে হালকা ঘষা দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। উপরের পাটির দাঁত হালকা করে ঘষা দিয়ে তারপরে নিচের দিকেও একইভাবে পরিষ্কার করতে হবে।

অনেক সময় দেখা যায়, আমরা জোরে জোরে ব্রাশ করি। এটি ঠিক নয়। এতে দাঁতের অনেক ক্ষতি হয়। জোরে ব্রাশ করার কারণে দাঁতের এসব জায়গায় ক্যাভিটি হয়। আমাদের কাছে অনেক রোগী আসেন বিশেষ করে বয়স্ক, জোরে ব্রাশ করার কারণে তাদের উপরে মাড়ি ও দাঁতের সংযোগস্থলে একটি অর্ধ চন্দ্রাকৃতির ক্যাভিটি হয়েছে। এটির কারণে দাঁত শিরশির অনেক বেশি হয়। ঠান্ডা-গরম কিংবা স্বাভাবিক পানি পানেও কষ্ট হয়। কুলি পর্যন্ত করতে পারে না।

আমি বলব, একদমই জোরে দাঁত ব্রাশ করা যাবে না। আস্তে আস্তে ঘষা দিয়ে দু-তিনটা করে দাঁত পরিষ্কার করতে হবে। একইভাবে তালুর সাইডের অংশেও ব্রাশ করতে হবে।

নিচের দাঁতের জন্য আমি বলব, একটু কোনাকুনি ব্রাশ ধরে দু-তিনটা করে আলতো করে ঘষে উপরের দিকে নিতে হবে। এভাবে সকালে নাস্তা করার পর এবং রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ব্রাশ করার অভ্যাস গড়ে তোলা গেলে ডেন্টাল সার্জেন্টের কাছে যাওয়ার প্রয়োজন পড়বে না।

অনেকে ঠিকমতো ব্রাশ করার পরও সমস্যা হয়। তারা আসলে সঠিক ব্রাশ বেছে নেননি। অবশ্যই আমাদের সফট ব্রিসেল বা নরম তন্তুযুক্ত ব্রাশ ব্যবহার করতে হবে। ব্রাশের হাতল বড়দের জন্য বড় হতে হবে। আর মাথা ছোট হতে হবে। কারণ চোয়ালের পেছনে যে দাঁতগুলো থাকে, ব্রাশের মাথা বড় হলে সেখানে ঠিকমতো পৌঁছায় না। ফলে ওইসব দাঁতে গর্ত হয় এবং খাবার জমতে জমতে এমন অবস্থা হয় দাঁতটি পরবর্তীতে ফেলে দেওয়া ছাড়া উপায় থাকে না।

শক্ত ব্রিসেল ও বড় মাথাওয়ালা ব্রাশ দিয়ে আপনি যতই আলতো করে ব্রাশ করেন না কেন মাড়ি এবং দাঁতের সংযোগস্থলে ক্যাভিটি হবে। এ ছাড়া দাঁতের সমস্যা এড়াতে চাইলে স্নাকস জাতীয় কিছু খেলে তাৎক্ষণিক কুলকুচির অভ্যাস করতে হবে। শিশুদেরও কুলকুচির অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।


আরও দেখুন: