অ্যাডালসেন্ট গাইনোকোলজি কেন প্রয়োজন

অধ্যাপক ডা. গুলশান আরা
2021-12-30 16:10:08
অ্যাডালসেন্ট গাইনোকোলজি কেন প্রয়োজন

অ্যাডালসেন্ট গাইনোকোলজি কেন প্রয়োজন

অনেক সময় সন্তান জন্মের পর মাসিকের রাস্তা দিয়ে একটু স্রাব আসতে পারে। অনেক সময় রক্তও আসে এবং এসব নিয়ে স্বজনরা অস্থির হয়ে পড়েন। যে রক্ত আসছে, স্রাব আসছে, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকাই তো স্বাভাবিক। পরবর্তীতে দেখা যায়, স্রাব আসে, সংক্রমণ হয়, যৌনিতে প্রদাহের সমস্যা দেখা দেয়।

অনেক সময় জন্মগত অস্বাভাবিকতার (কনজিনেটাল অ্যাবনরমাল) মতো সমস্যাও থাকতে পারে। এ ধরনের সমস্যা থাকলে গাইনোকোলজিস্টের কাছে সন্তানদের নিয়ে আসলে সঠিক চিকিৎসা হবে। আমাদের মেয়েদের খুব ভালোভাবে উপস্থাপন করতে হবে।

আমাদের দেশে শুধু না, গোটা বিশ্বেই কিশোরী সমস্যা অনেক রয়েছে এবং প্রত্যেক দেশেই এগুলো আলোচনায় আনা জরুরি হয়ে পড়েছে। আমাদের দেশেও সরকার কিশোরী সমস্যাকে চিহ্নিত করে ২০১৭ থেকে ২০৩০ সাল পর্যন্ত স্বাস্থ্য কৌশল প্রণয়ন করেছে। এটির মূল উদ্দেশ হলো, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) যেনো আমরা অর্জন করতে পারি।

এখানে চারটি বিষয় আছে। যেমন- সেক্সজুয়াল অ্যানজিম প্রোডাক্টিভ হেলথ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এরপর মানসিক স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও নারীর প্রতি সহিংসতা। বিশেষ করে অন্তঃসত্ত্বাদের প্রতি সহিংসতা। করোনা মহামারীর পর আমাদের দেশে এ ধরনের সহিংসতা অনেক বেড়ে গেছে।

আমাদের দেশে প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য সঠিক মাত্রার পুষ্টি নিশ্চিতের ব্যবস্থা নেই। মানসিক সমস্যা থাকলেও তা যেমন চিহ্নিত হচ্ছে না, তেমনি সঠিক চিকিৎসাও পাচ্ছে না। মাসিকের পর কীভাবে নিজেকে জীবাণুমুক্ত করতে হবে, প্রজনন স্বাস্থ্য কীভাবে সুরক্ষা করতে হয়, এ ব্যবস্থাপনা আমাদের বেশিরভাগ নারীর জানা নেই। বড় কথা এগুলো নিয়ে যে সচেতনতার প্রয়োজন, তারও ব্যবস্থা নেই। ফলে প্রজনন স্বাস্থ্যের বিষয়টি আরও সুন্দর করতে হবে।

বর্তমান সরকার প্রাপ্তবয়স্ক কর্নার করেছে। এগুলো সরকারি হাসপাতাগুলোতে রয়েছে। এখন এই কর্নারগুলো আরও কার্যকর করতে হবে, নারী স্বাস্থ্যবান্ধব করতে হবে। প্রয়োজনে কিশোরীদের ভালো পরামর্শ দিতে গাইনোকোলজিস্ট নিয়োগ দিতে হবে। কিশোরীদের আলাদাভাবে কাউন্সেলিং করা গেলে, সমস্যাগুলো জানা সম্ভব হলে এবং তাদের ডায়াগনিস করে সঠিক চিকিৎসা দেওয়া গেলে, তাদের সুরক্ষিত রাখতে পারব।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) বলছে, কিশোর-কিশোরীদের স্বাস্থ্যে বিনিয়োগ করলে তিনটি সুবিধা হবে। এখন সুস্থ জনগোষ্ঠী পাব, আগামীতে মিলবে স্বাস্থ্যকর প্রজন্ম। সর্বোপরি আমরা স্বাস্থ্যকর জাতি পেলে কর্মক্ষম জনসংখ্যার অংশীদ্বার হবে এখনকার কিশোর-কিশোরীরা। এজন্য তাদের পেছনেই বড় বিনিয়োগ করা প্রয়োজন। আর এসব বিষয়ে মানুষকে সচেতন করার জন্যই আমাদের সোসাইটিটা করা হয়েছে।

হ্যাঁ, প্রাপ্তবয়স্কদের স্বাস্থ্যখাতে গাইনোকোলজি কিন্তু মাল্টিডিসিপ্লিনারি হতে হবে। এখানে পুষ্টিবিদ থাকতে হবে, এখানে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ থাকতে হবে। তারপর পেডিয়াট্রিক অ্যান্ড্রোকায়নোলজিস্ট থাকতে হবে, মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ থাকতে হবে। মানে এই সবগুলো বিষয় নিয়েই কিন্তু অ্যাডালসেন্ট গাইনোকোলজি। সুতরাং এ বিষয়ে অনেক কাজ করতে হবে। তাহলে আমরা ভবিষ্যতে আমরা একটি স্বাস্থ্যকর প্রজন্ম তৈরি করতে পারব।


আরও দেখুন: