শীতে সুস্থ থাকতে খাবার তালিকায় যা রাখবেন
শীতকালে যেহেতু বেশ কিছু শারীরিক সমস্যার উপদ্রব বেড়ে যায়, তাই শরীর সুস্থ রাখতে বিশেষ কিছু হার্বসের সাহায্য নিতে পারেন।
শীতে ঠিকঠাক খাওয়ার নিয়ম না মেনে চললে একদিকে যেমন শারীরিক সমস্যা দেখা দেবে, তেমনি ত্বকও অনুজ্জ্বল হয়ে যাবে। তাই ঋতুর সাথে তাল মিলিয়ে নজর দিন খাদ্য তালিকায়।
ভেতর থেকে শরীর সুস্থ থাকলেই, ত্বক উজ্জ্বল রাখা সম্ভব। শীতের শুরু ও শেষের সময়ে ডিহাইড্রেশনের সমস্যা বেশি দেখা দেয়। কারণ, ঠাণ্ডা আবহাওয়া পানি পানের প্রবণতা কমে যায়। তাই এই সময় বেশি করে পানি পান প্রয়োজন। ঠান্ডা পানি খেতে ভালো না লাগলে হালকা কুসুম গরম পানি পান করুন। মাঝে মাঝে ডাবের পানি, ফলের রসও পান করতে পারেন।
সারাদিনের তিন বেলার খাবারের মেন্যুতে রাখতে পারেন বিভিন্ন ধরনের স্যুপ, গরম দুধ। দুধ ছাড়া চা তিন-চার ফোঁটা লেবুর রস দিয়ে খেতে পারেন। এটি পানির সঙ্গে সঙ্গে অ্যান্টি-অক্সিডেন্টেরও কাজ করবে। শীতে শরীরে অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের প্রয়োজনীয়তা বাড়ে।
মৌসুমি ফল যেমন- কমলালেবু, আপেল, মাল্টা ইত্যাদি নানা ধরনের শীতের ফল ও শাকসবজি যথেষ্ট পরিমাণে খান। এগুলোর মধ্যে থাকা ফাইবার ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট শরীরের সজীবতা বজায় রাখে, খাদ্য হজমে সাহায্য করে। শরীরের নিস্তেজ ভাব কাটায়।
টাটকা ফল ও সবজিতে রয়েছে বায়োটিন ত্বক ও চুল ভাল রাখে। তাই তাজা সবজি ও ফল খাওয়া খুব জরুরি। প্রসেসড বা ফ্রোজেন ফুডের বদলে ন্যাচারাল ফুড খাওয়ার চেষ্টা করুন।
শীতে ত্বক রুক্ষ হয়ে যায়। ত্বকের স্বাস্থ্য ভাল রাখার জন্য প্রয়োজন ফ্যাটি অ্যাসিড। বাদাম, মাছ এই ধরনের খাবার বেশি করে খান। ব্যালেন্স ডায়েট মেনে চলুন। তাই এই সময়ের নানা ধরনের ফল ও সবজি দিয়ে সালাদ তৈরি করে খান। প্রোটিন জাতীয় খাবার শরীরের তাপমাত্রা বজায় রেখে শরীর গরম রাখতে সাহায্য করে।
শীতের সময় বিভিন্ন অনুষ্ঠান থাকে এবং খাওয়াও হয় প্রচুর। তাই ক্যালরিও বেড়ে যায় শরীরে। শীতে দুধ দিয়ে তৈরি চা ও কফি না খেয়ে গ্রিন-টি খেতে পারেন।
অতিরিক্ত ভাজাপোড়া খাবার এড়িয়ে চলুন। এই ধরনের খাবারের বদলে সালাদ খান। চাইলে অলিভওয়েল ব্যবহার করতে পারেন, কারণ এতে স্যাচুরেটেড ফ্যাটের পরিমাণ কম থাকে যা হার্টের জন্য ভালো।
কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার কম খাওয়ার চেষ্টা করুন। প্রয়োজনে ভাত ও রুটি কম খান। প্রচুর পরিমানে পানি ও ফল, সবজি দিয়ে সালাদ বানিয়ে খান।
শীতকালে যেহেতু বেশ কিছু শারীরিক সমস্যার উপদ্রব বেড়ে যায়, তাই শরীর সুস্থ রাখতে বিশেষ কিছু হার্বসের সাহায্য নিতে পারেন। এগুলো সর্দি-কাশি বা ঋতু পরিবর্তনের অন্যান্য অসুখ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে তুলসী অনেক কার্যকরী। তুলসীতে আছে বিটা ক্যারোটিন ও ইউজিনল। বিটা ক্যারোটিন অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের কাজ করে ও ইউজিনল ব্যাকটেরিয়া দূর করে। প্রতিদিন রং চায়ের সঙ্গে কয়েকটি তুলসী পাতা মিশিয়ে খান, দেখবেন শরীর সুস্থ হয়ে গেছে। গলায় খুসখুসানি হলেও তুলসী ভীষণ কাজে আসে। স্যুপ, সালাদ বা পাস্তার সঙ্গে তুলসী পাতা কুচি করে মিশিয়ে খান, গলার সব অস্বস্তি নিমিষেই গায়েব হয়ে যাবে।
ইসরাত জাহান
পুষ্টিবিদ
সাজেদা হসপিটাল