যেভাবে লাইফস্টাইল পরিবর্তনের মাধ্যমে ঠেকানো যায় ডায়াবেটিস
ডায়াবেটিস আক্রান্তদের চিকিৎসা দুই রকম। একটি হলো- ওষুধের মাধ্যমে আর অন্যটি হলো তার লাইফস্টাইল পরিবর্তনের মাধ্যমে সুস্থ থাকা বা ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করা।
ডায়াবেটিস মূলত দুই ধরনের। একটি হলো টাইপ-১ আর অন্যটি টাইপ-২ ডায়াবেটিস। এর বাইরেও দুই ধরনের ডায়াবেটিস রয়েছে। তবে এগুলো খুব একটা দেখা যায় না। এর একটি হলো- জেস্টেশনাল ডায়াবেটিস বা গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস। অন্যটি আদার স্পেসিফিক বা অন্যান্য কোনো রোগের সাথে সম্পর্কযুক্ত ডায়াবেটিস।
আমাদের দেশে ডায়াবেটিস রোগীদের মধ্যে প্রায় ৯৪ শতাংশ টাইপ-২-তে আক্রান্ত। এজন্য আমরা তাদের খাদ্য তালিকা ও চিকিৎসাকে প্রাধান্য দিয়ে থাকি। ডায়াবেটিস আক্রান্তদের চিকিৎসা দুই রকম। একটি হলো- ওষুধের মাধ্যমে আর অন্যটি হলো তার লাইফস্টাইল পরিবর্তনের মাধ্যমে সুস্থ থাকা বা ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করা।
লাইফস্টাইলের মধ্যে দুটি বিষয় থাকে। এক. শরীর চর্চা। দুই. ডায়েট। ডায়েট ও শরীর চর্চাকে আমরা ইংরেজিতে মেডিকেল নিউট্রিশনাল থেরাপি বলে থাকি।
১. প্রত্যেক ডায়াবেটিক রোগীর সুষম খাদ্য খাওয়া উচিত। যেসব খাদ্যে শর্করা, প্রোটিন, ফ্যাট ও ভেজিটেবলস থাকে, সেগুলো খাওয়া উচিত। এখন জানা যাক, কার্বোহাইড্রেট বা শর্করা কতটুকু খাবেন? আমাদের দেশের হিসেবে ৫০-৬০ ভাগ কার্বোহাইড্রেট অর্থাৎ ভাত বা রুটি যেটা সবাই খাই, সেটি খাওয়া যাবে। এখন প্রশ্ন হলো কী ধরনের ভাত খাবেন? মোটা লাল চালের ভাত খাওয়ার জন্য আমরা বলে থাকি। রুটি খেলে অবশ্যই আটার, ময়দা নয়। লাল আটা হলে বেশি ভালো হবে।
২. শাক-সবজি যত ইচ্ছে খেতে পারবেন। তবে যেকোনো একটি সবজি খুব বেশি না খেয়ে মিক্সড ভেজিটেবলস খাওয়ার চেষ্টা করবেন।
৩. মাছ-মাংস আমরা অবশ্যই খাবো। দুধ কেউ খেতে চাইলে খেতে পারবেন। কিন্তু দুধের স্বর খাওয়া যাবে না। মাছ বেশি প্রাধান্য দিতে হবে। চর্বিযুক্ত যেসব খাবার আছে যেমন- রেড মিট এগুলো আমরা বলি না খেলেই ভালো। খেতে চাইলে চর্বিটা বাদ দিয়ে খাওয়ার চেষ্টা করবেন। দেশি মুরগি যত খুশি খান, কোনো সমস্যা নেই।
৪. অনেকের মধ্যে ভ্রান্ত ধারণা- ডায়াবেটিস হলে ডিম খাওয়া যাবে না। আপনি একটি-দুটি ডিম খেতে পারেন। এমনকি সপ্তাহে ৫-৬টি ডিমও খেতে পারবেন, কোনো সমস্যা হবে না। শরীরের প্রোটিন পূরণে ডিম খেতে হবে।
৬. প্রতিদিন ৩০-৪৫ মিনিট হালকা ব্যায়াম বা হাঁটাহাঁটি করতে হবে। হালকা ব্যায়ামের মধ্যে জগিং, ট্রেডমিল বা ইন্সট্রুমেন্টাল কিছু হালকা ব্যায়াম করা যেতে পারে। তবে সবচেয়ে ভালো ৩০-৪৫ মিনিট হাঁটাহাঁটি করা। এ ব্যায়াম দিনের যেকোনো সময় করা যাবে। তবে সময় নির্ধারণ করে নিলে ভালো হবে। আপনি যদি সকালে হাঁটেন, তাহলে প্রতিদিন সকালেই হাঁটবেন।
৭. হাঁটার ক্ষেত্রে মনে রাখবেন, ভোরে উঠে কখনো খালি পেটে হাঁটবেন না। অবশ্যই কিছু খেয়ে নেবেন। কারণ খালি পেটে হাঁটলে হয়তো সুগার লেভেল অনেক কমে যেতে পারে এবং আপনি হাইপোগ্লাইসেমিয়াতে ভুগতে পারেন।