গর্ভধারণ-পূর্ব সেবা কী, কেন এটা জরুরি?

অনলাইন ডেস্ক
2021-11-14 21:19:12
গর্ভধারণ-পূর্ব সেবা কী, কেন এটা জরুরি?

গর্ভধারণের পূর্বে সন্তান জন্মদানে সক্ষম নারী ও দম্পতিকে যে সেবা দেওয়া হয়, তাকেই গর্ভধারণ-পূর্ব সেবা বলা হয়ে থাকে।

মা, নবজাতক এবং শিশুর সুস্বাস্থ্যের জন্য গর্ভধারণের পূর্বে সন্তান জন্মদানে সক্ষম নারী ও দম্পতিকে যে সেবা দেওয়া হয়, তাকেই গর্ভধারণ-পূর্ব সেবা বলা হয়ে থাকে।

গর্ভধারণ-পূর্ব সেবার ইতিবাচক প্রভাবগুলি কী?

১. অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণ প্রতিরোধ করে

২.গর্ভকালীন এবং প্রসবকালীন জটিলতা প্রতিরোধ করে

৩. মায়ের অসুস্থতা এবং মৃত্যুহার কমায়

৪. অকালে সন্তান প্রসব এবং কম ওজনের শিশুর জন্ম প্রতিরোধ করে

৫. শিশুর জন্মক্রটি এবং জন্ম পরবর্তী রোগ সংক্রমণ প্রতিরোধ করে

৬. ভবিষ্যৎ টাইপ-২ ডায়াবেটিস, গর্ভকালীন ডায়াবেটিস এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমিয়ে দেয়

গর্ভধারণ-পূর্ব সেবায় কোন বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত হবে?

১. পরিবার পরিকল্পনা ও প্রতিটি গর্ভধারণের মধ্যে ব্যবধান সৃষ্টিতে উদ্বুদ্ধ করা

২. শারীরিক শ্রম ও ব্যায়ামের অভ্যাস তৈরি করা

৩. পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণে আগ্রহী করা

৪. গর্ভধারণের পূর্বে ওজন নিয়ন্ত্রণে সচেষ্ট করা

৫. তামাক, অ্যালকোহল এবং নিষিদ্ধ ওষুধ খাওয়া থেকে বিরত রাখা

৬. ভিটামিন, আয়রন এবং ফলিক এসিড খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া

৭. অপুষ্টি/ওজনাধিক্য ও স্থূলতা, রক্তস্বল্পতা, ডায়াটিস, উচ্চ রক্তচাপ, মূত্রনালীর সংক্রমণ, যৌনবাহিত সংক্রমণ ইত্যাদি শনাক্ত ও প্রতিকার করা

৮. আগে থেকে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, রক্তস্বল্পতা, প্রস্রাবে ইনফেকশন, হাঁপানি, খিচুনি, যক্ষ্মা, থাইরয়েড রোগ ও পেটের রোগে আক্রান্ত থাকলে ভালোভাবে তা নিয়ন্ত্রণে রাখা

গর্ভধারণ সম্পর্কিত কি কি স্বাস্থ্য ঝুঁকি মূল্যায়ন করা হবে?

১. রক্তের গ্রুপ (নেগেটিভ গ্রুপের নারীদের শনাক্তকরণ)

২. হিমোগ্লোবিনের মাত্রা (রক্তস্বল্পতা শনাক্তকরণ)

৩. রক্তে গ্লুকোজ পরীক্ষা (ডায়াবেটিস এবং প্রি-ডায়াবেটিস শনাক্তকরণ)

৪. প্রস্রাব পরীক্ষা (প্রস্রাবে আমিষের উপস্থিতি এবং মূত্রনালীর সংক্রমণ দেখা)

৫. শরীরের মাপ যেমন- ওজন, উচ্চতা, কোমরের মাপ, নিতম্বের মাপ (পুষ্টিহীনতা ও স্থূলতা দেখা)

৬. রক্তচাপ মাপা (উচ্চ রক্তচাপ শনাক্তকরণ)

কারা সেবা নিতে পারবেন?

১. সন্তান জন্মদান সক্ষম প্রত্যেক দম্পতি

২. প্রত্যেক প্রজননক্ষম নারী

সেবা গ্রহণকারীরা কি কি সুবিধা পাবেন?

১. নির্ধারিত গর্ভধারণ-পূর্ব সেবাকেন্দ্রসমূহে কম খরচে গর্ভধারণ সম্পর্কিত স্বাস্থ্যঝুঁকি পরীক্ষার পাশাপাশি যথাযথ চিকিৎসা ও পরামর্শ গ্রহণের সুযোগ

২. গর্ভধারণ-পূর্ব পরামর্শের পাশাপাশি নির্ধারিত কেন্দ্র সমূহে কম খরচে গর্ভকালীন, বিশেষ করে গর্ভকালীন ডায়াবেটিস সম্পর্কিত স্বাস্থ্যঝুঁকি পরীক্ষার পাশাপাশি যথাযথ চিকিৎসা ও পরামর্শ গ্রহণের সুযোগ

৩. বিনামূল্যে মোবাইল হেল্প লাইনের মাধ্যমে গর্ভধারণ সম্পর্কিত স্বাস্থ্যঝুঁকি প্রতিরোধে বিষয়ে যথাযথ পরামর্শ (বিশেষ করে, খাদ্যও পুষ্টি, শারীরিক শ্রম, স্থূলতা, রক্তস্বল্পতা, মূত্রনালীর সংক্রমণ বিষয়ে) গ্রহণের সুযোগ

৪. ফেসবুক ও অন্য সামাজিক নেটওয়ার্কের মাধ্যমে অন্যান্য সেবা গ্রহণকারীদের সঙ্গে সমস্যা ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের পাশাপাশি বিনামূল্যে বিশেষজ্ঞ স্বাস্থ্যকর্মীদের কাছ থেকে নিয়মিত পরামর্শ গ্রহণের সুযোগ

৫. নির্ধারিত দিনে রেডিও ও টেলিভিশনে বিশেষজ্ঞ স্বাস্থ্যকর্মীদের পরামর্শ গ্রহণের সুযোগ

৬. মোবাইল ফোন ও ওয়েবসাইটের মাধ্যমে গর্ভধারণ-পূর্ব সেবা, স্বাস্থ্যঝুঁকি ও রোগ প্রতিরোধে বিষয়ক তথ্য ভান্ডারে যুক্ত হওয়ার সুযোগ

৭. বিনামূল্যে গর্ভধারণ-পূর্ব পরামর্শ এবং গর্ভকালীন ডায়াবেটিস প্রতিরোধে বিষয়ক বিভিন্ন শিক্ষা উপকরণ (যেমন- লিফলেট, বুকলেট ইত্যাদি) পাওয়ার সুযোগ


আরও দেখুন: