ডায়াবেটিস কী, কেন ডায়াবেটিস হয়?
অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস অন্ধত্ব, হৃদরোগ, কিডনি রোগ, স্ট্রোক ও পঙ্গুত্বের মতো কঠিন রোগের ঝুঁকি অনেকগুণ বাড়িয়ে দেয়।
ইনসুলিন নামক এক প্রকার হরমনের অভাব হলে কিংবা উৎপাদিত ইনসুলিনের কার্যকারিতা কমে গেলে রক্তের গ্লুকোজ দেহের বিভিন্ন কোষে প্রয়োজনমতো ঢুকতে পারে না। ফলে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে যায়। এ পরিস্থিতিকেই ডায়াবেটিস বলে।
ডায়াবেটিস একবার হলে সারা জীবন থাকে। অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস অন্ধত্ব, হৃদরোগ, কিডনি রোগ, স্ট্রোক ও পঙ্গুত্বের মতো কঠিন রোগের ঝুঁকি অনেকগুণ বাড়িয়ে দেয়।
সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা সুনিয়ন্ত্রিত রাখতে পারলে সুস্থ ও কর্মঠ জীবনযাপন করা যায়। তাই প্রত্যেক ডায়াবেটিক রোগীর উচিত এই রোগের চিকিৎসা সম্পর্কে ভালোভাবে জানা, জীবনযাত্রার ত্রুটিগুলো পরিহার করা এবং ডাক্তারের পরামর্শমতো চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ জীবন নিশ্চিত করা।
ডায়াবেটিস প্রধানত দুই ধরনের- টাইপ-১ ও টাইপ-২। সাধারণত ৩০ বছরের কম বয়সীদের টাইপ-১ ডায়াবেটিস দেখা যায়। এ ধরনের রোগীদের শরীরে ইনসুলিন একেবারেই তৈরি হয় না। বেঁচে থাকার জন্য এসব রোগীকে ইনসুলিন নিতেই হয়। টাইপ-১ রোগীর সংখ্যা এদেশে তুলনামুলকভাবে কম।
টাইপ-২ ডায়াবেটিক রোগীদের সংখ্যাই বেশি প্রায় ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ। এদের শরীরের ইনসুলিন নিস্ক্রিয় থাকে, অথবা ইনসুলিনের ঘাটতি থাকে। এ ধরনের রোগীদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন ও নিয়মিত ব্যায়াম অপরিহার্য। প্রয়োজনে কাউকে কাউকে খাওয়ার বড়ি বা ইনসুলিন নিতে হতে পারে।
বর্তমানে নগরায়নের ফলে পরিবর্তিত জীবনযাপনের কারণে সারা বিশ্বেই ডায়াবেটিক রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। তবে বৃদ্ধির এই হার উন্নত দেশগুলোর তুলনায় অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের মতো বাংলাদেশেও বেশি।
যেসব কারণে টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ে
ক. কায়িক পরিশ্রম না করা
খ. মোটা বা স্থূলকায় হয়ে যাওয়া
গ. অতিমাত্রায় ফাস্টফুড খাওয়া ও কোমল পানীয় পান করা
ঘ. অতিরিক্ত মানসিক চাপের মধ্যে থাকা
৬. ধূমপান করা ও তামাক খাওয়া
চ. গর্ভকালীন বিভিন্ন সমস্যা।
ছ. যাদের বাবা-মা অথবা রক্ত সম্পর্কীয় নিকটাত্মীয়ের ডায়াবেটিস আছে এবং যাদের বয়স ৪৫ বছরের বেশি তাদের ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
কারও লাইফস্টাইলের সঙ্গে এ বিষয়গুলো থাকলে বা নিকটাত্মীয়দের ডায়াবেটিস থাকলে, ডায়াবেটিসের ঝুঁকির বিষয়ে তাদের অধিকতর সতর্ক থাকা দরকার।