আইবিডি রোগের উপসর্গ, চিকিৎসায় করণীয়

ডা. চঞ্চল কুমার ঘোষ
2021-11-05 16:17:49
আইবিডি রোগের উপসর্গ, চিকিৎসায় করণীয়

একজন রোগীর ওষুধলো নিতেই প্রায় প্রতিবার লাখ টাকা লাগে

ইনফ্লামেটরি বাওয়েল ডিজিজ (আইডিটি) খাদ্যনালীর প্রদাহজনিত রোগ। এতে খাদ্যনালী বিশেষ করে ক্ষুদ্রান্ত ও বৃহদন্ত্রে এক ধরনের প্রদাহ এবং আলসার বা ক্ষত সৃষ্টি হয়। ক্রমান্বয়ে খাদ্যনালী চিকন হয়ে যেতে পারে।

দীর্ঘমেয়াদি এ রোগের প্রকৃত কারণ এখন পর্যন্ত জানা যায়নি। তবে রোগটি পাশ্চাত্যের দেশগুলোতে বেশি দেখা যায়। আমাদের দেশে বিরল হলেও আক্রান্তের সংখ্যা একেবারে কম নয়। দিনে দিনে আক্রান্তের হার বাড়ছে।

আইবিডি চেনার উপায়
আইবিডি রোগের নানা লক্ষণ রয়েছে। এ ধরনের রোগে মুখে ঘা হতে পারে। পেটে ব্যথা ও তীব্র পেটব্যথার সাথে পাতলা পায়খানা হতে পারে। এটা হতে পারে আলসার থেকে কিংবা খাদ্যনালী চিকন হয়ে গেলে। খাদ্যনালী ব্লক হয়ে যেতে পারে। বমি হয়। পেট ফুলে যায়। এ পর্যায়ে সার্জারি করা ছাড়া কোনো উপায় থাকে না।

জয়েন্টে ব্যথা হতে পারে। ত্বকে সমস্যা দেখা দিতে পারে। ত্বক থেকে রক্তক্ষরণ হতে পারে। চোখের সমস্যা হতে পারে। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষুদ্রান্ত এবং ক্ষুদ্রান্তের সে অংশে বৃহদন্ত্রে সমস্যা হয়।

পাতলা পায়খানার সাথে রক্ত যায়। পায়খানার সাথে রক্ত যাওয়া অনেক কারণেই হতে পারে। আইবিডির ক্ষেত্রে সাধারণত টাটকা রক্ত যায়, আলাদাভাবেও রক্ত যেতে পারে। পায়খানার আগে বা পরে ফোটা ফোটা রক্ত পড়তে পারে। দিনে পাঁচ থেকে ছয়বার পর্যন্ত পাতলা পায়খানা হয়। আগে যেমনটা মনে করা হতো আমাশয় হয়েছে। আসলে এটি আমাশয় না। এটি খাদ্যনালীতে প্রদাহের কারণে হচ্ছে।

আইবিডির চিকিৎসা
আইবিডির চিকিৎসা একবার শুরু করলে চালিয়ে যেতে হয়। এক্ষেত্রে রোগীদের বলব, পায়খানার সাথে রক্ত যাওয়া কিংবা পায়খানার সাথে অন্য কিছু যদি যায়, তাহলে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ গ্যাস্ট্রোঅ্যান্ট্রোলজিস্টের শরণাপন্ন হবেন। কারণ বাংলাদেশে আইবিডির বিশ্বমানের চিকিৎসা রয়েছে।

কিন্তু দুর্ভাগ্য হলো, ব্যয়বহুল হওয়ায় বেশিরভাগ রোগীর পক্ষে খরচ বহন করা সম্ভব হয় না। একজন রোগীর ওষুধলো নিতেই প্রায় প্রতিবার লাখ টাকা লাগে। সাধারণত আট সপ্তাহ পরপর ওষুধ নিতে হয়। বড় কথা হলো, আইবিডিকে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব, সম্পূর্ণরূপে নিরাময় করা সম্ভব নয়। আমরা সর্বোচ্চ চিকিৎসা দিতে পারলেও রোগীদের পক্ষে তা নেওয়া সম্ভব হয় না।


আরও দেখুন: