যেসব লক্ষণ দেখে বুঝবেন কিডনি বিকলের ঝুঁকিতে আছেন
কিডনির কার্যকারিতা ৭০-৯০ ভাগ নষ্ট হওয়ার আগে অনেক ক্ষেত্রেই কোনো লক্ষণ দেখা যায় না।
দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগের ক্ষেত্রে দেখা যায়, কিডনির কার্যকারিতা ৭০-৯০ ভাগ নষ্ট হওয়ার আগে অনেক ক্ষেত্রেই কোনো লক্ষণ দেখা যায় না। আর যখন কিডনি বিকলের লক্ষণগুলো দেখা দেয়, সেগুলো হলো- প্রথম দিকে চেহারাটা আস্তে আস্তে ফ্যাকাসে হয়ে যায়, খাওয়ার রুচি কমে যায়, বমিবমি ভাব হয় এবং একসময় বমি হতে থাকে।
কখনো দেখা যায়, আগে খুব গুরুত্বপূর্ণ কাজ সে করতো, কিন্তু এখন সে ওই কাজে সম্পূর্ণ মনযোগ দিতে পারছে না। মনযোগ ক্ষমতা কমে আসে, ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। দেখা যায়, অনেক সময় বিনা কারণে শরীর চুলকায়। অনেক সময় দেখা যায়, শরীরে পানি জমা শুরু হয়। ঘুম থেকে ওঠার পর দেখা যায়, চোখ মুখ ফুলে গেছে। তারপর দেখা যায়, তার সারা শরীর ফুলতে থাকে। যাদের আগে রক্তচাপ ছিল, তার নতুন করে রক্তচাপ দেখা দেয়।
যতই এ রোগটা তীব্র আকার ধারণ করতে থাকে, ততই আমাদের যে অঙ্গগুলো আছে- সেটা লাং থেকে শুরু করে হার্ট, নার্ভ, মাসল সবগুলোকেই দুর্বল করতে থাকে। সে অনুযায়ী যে অঙ্গটায় সে আক্রমণ করে, সেই অঙ্গের সংক্রমণ অনুযায়ী তার উপসর্গগুলো দেখা দিতে থাকে।
আকস্মিক কিডনি বিকলের ক্ষেত্রে যে লক্ষণটা চোখে পড়ে সেটা হলো- কারো যদি ডায়রিয়া বা রক্তক্ষরণ হয় কিংবা কোনো ইনফেকশন হয়ে থাকে। তাদের যদি দেখা যায়, আস্তে আস্তে প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাচ্ছে এটি কিন্তু একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ।
বাচ্চাদের যদি ডায়রিয়া হয়ে থাকে কিংবা তাদের যদি জ্বর থাকে। যদি দেখা যায়, বাচ্চাদের প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যায়। আগে সে দুই ঘণ্টা পর পর বা এক ঘণ্টা পর পর প্রস্রাব করতো। এখন যদি দেখা যায়, ছয় ঘণ্টা পরেও প্রস্রাব করছেনা বা করলেও খুব সামান্য সামান্যা প্রস্রাব হচ্ছে। তাহলে কিন্তু মনে করতে হবে, তার কিডনি আক্রান্ত হয়েছে। তারপর যখন আরও অবনতির দিকে যায়, তখন দেখা যায় যে এক সময় প্রস্রাব বন্ধ হয়ে যায়। আর তখন যদি পানি বেশি পরিমাণে খাওয়া হয় অথবা সেলাইন দেওয়া হয়, তখন কিন্তু শরীরে পানি জমতে থাকে।
পানিশূন্য থাকলে তাদের রক্তচাপ কম থাকে, পালস খুব দ্রুত হয়। হার্ট খুব দ্রুত গতিতে চলে। কিন্তু যখন পানি সে বেশি খেল, কিন্তু প্রস্রাব হচ্ছে না, তখন শরীরে পানি জমতে থাকে। সে সময়ে শ্বাসকষ্ট দেখা দিতে পারে, বমি হতে পারে। খাওয়ার অনীহা দেখা দিতে পারে।
যে কারণে সাধারণত আকস্মিক কিডনি বিকল হয়, সে কারণটার দিকে যদি খেয়াল করা হলে দেখা যাবে, কারণ এবং লক্ষণ এই দুইটা যদি মিলে যায়, তাহলে রোগী নিজেই বুঝতে পারবে। যেমন- তার ডায়রিয়া হয়েছিল, তারপর প্রস্রাব কমে গেল। তারপর প্রস্রাব একদমই কমে গেছে। এরপর পানি খাচ্ছে, কিন্তু প্রস্রাব হচ্ছে না। এজন্য শরীর ফুলে যাচ্ছে। বুঝতে হবে তার আকস্মিক কিডনি বিকল হচ্ছে। তাকে তাৎক্ষণিক চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।