শিশুর স্থূলতার মারাত্মক পরিণতি, অভিভাবকের করণীয়
বয়স এবং উচ্চতার সঙ্গে সামঞ্জস্য না রেখে ওজন বেড়ে যাওয়াকে চাইল্ডহুড ওবেসিটি তথা শিশুর স্থূলতা বলা হয়।
প্রতিটি মানুষেরই উচ্চতা অনুযায়ী সঠিক ওজন থাকবে। আমাদের দেশে বর্তমানে চাইল্ডহুড ওবেসিটি তথা শিশুর স্থূলতা হঠাৎ করেই বাড়ছে। একটি পাঁচ বছরের বাচ্চা, তার হয়তো ওজন হয়ে গেছে ৩০ কেজি। এই যে বয়স এবং উচ্চতার সঙ্গে সামঞ্জস্য না রেখে ওজন বেড়ে যাওয়া, এটাকে আমরা বলি চাইল্ডহুড ওবেসিটি তথা শিশুর স্থূলতা।
এই অবেসিটি কিন্তু অ্যালার্মিং। আমরা অভিভাবকরা দেখা যায় অনেক সময় এই বিষয়টা খেয়াল করি না। কিন্তু মায়েরা আমাদের কাছে অনুযোগ করেন যে বাচ্চা খায় না। ওবেসিটির অনেকগুলো জটিলতা আছে। ওবেসিটির ফলে ব্লাড প্রেশার বেড়ে যায় এবং ব্লাড প্রেশার বাড়লে নানা ধরনের জটিলতা সৃষ্টি হয় শরীরে। ব্লাড প্রেশার বেড়ে গেলে কিডনির ওপর প্রেশার পড়ে।
এছাড়া ছোট বাচ্চার ব্লাড প্রেশার হলে দেখা যায়, ছোট বয়স থেকেই তাকে ড্রাগ ডিপেন্ডেন্ট তথা ওষুধ নির্ভর হয়ে যেতে হচ্ছে। একটা ছোট বাচ্চা, তাকে আমরা খাবার থেকেও দূরে রাখতে পারছি না। ফলে দেখা যাচ্ছে তার ব্লাড প্রেশারের ফলে কিডনি ফেইলিওর হচ্ছে, মাল্টি অর্গান ফেইলিউর হচ্ছে। স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারছে না। এরপর বাচ্চাগুলো আরেকটু বড় হলেই দেখা যায়, অল্প বয়সেই তার ডায়াবেটিসসহ আরও অন্যান্য রোগ হওয়ার ঝুঁকি থেকে যাচ্ছে।
এই করোনা পরিস্থিতিতে বাচ্চারা স্কুলে যেতে পারছে না, বাইরে খেলাধুলা করতে পারছে না। বাচ্চার যে সুষম খাবার খাওয়া দরকার, সেটা না খেয়ে অতিরিক্ত ফাস্টফুড, জাঙ্ক ফুড খাচ্ছে। এতে করে তাদের ওবিসিটি বাড়ছে। ফলে বাচ্চা তার অন্যান্য বন্ধুদের সঙ্গে ঠিকমতো খেলা করতে পারছে না। তার প্রাত্যহিক কাজে সমস্যা হচ্ছে। এটা হলো তার শুরুর দিকের সমস্যা। দীর্ঘমেয়াদি সমস্যার মধ্যে রয়েছে- এই বাচ্চার অন্যান্য বাচ্চাদের তুলনায় সবার আগেই হাইপারটেনশন দেখা দেয়, সবার আগে অসুস্থ হয়ে পড়ে।
এজন্য অভিভাবকদের বলছি, আপনারা খেয়াল রাখবেন আপনাদের বাচ্চাদের যাতে এ ধরনের সমস্যা না হয়। যদি আপনাদের মনে হয় বাচ্চার ওজন বয়স অনুযায়ী স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি, তাহলে সে ক্ষেত্রে আপনারা ডাক্তারের পরামর্শ নিন। শরীরে চর্বির মাত্রা যদি হঠাৎ করেই বেড়ে যায়, এই জিনিসটা খুবই অ্যালার্মিং।
করোনা বিধিনিষেধের কারণে বাচ্চারা বাইরে যাচ্ছে না, বাসায় থাকছে। তারা খেলাধুলা করছে না; ফলে তাদের ওবিসিটি বেড়ে যাচ্ছে। এছাড়া বাচ্চাদের রক্তস্বল্পতা তথা আয়রন ডেফিসিয়েন্সি, এনিমিয়া এটা সচরাচর হচ্ছে। এক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে- বাচ্চা ফ্যাকাশে হয়ে যাচ্ছে কিনা। সম্প্রতি আমরা বাচ্চাদের আরেকটি সমস্যা শুনছি, সেটা হচ্ছে- বাচ্চারা হঠাৎ করে শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। আমি বলবো- সব শ্বাসকষ্ট কোভিড নয়। আবার সব শ্বাসকষ্ট নিউমোনিয়া নয়। এ সময় বাচ্চাদের কাশি হয়। কাশি, পেটব্যথা এগুলো রোগের উপসর্গ।