গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস হলে করণীয়
চিকিৎসকের পরামর্শ ও ৭-১৫ দিন পরপর ডায়াবেটিস পরীক্ষা করা উচিত
আমরা সব সময় ডায়াবেটিস প্রতিরোধের কথা বলে থাকি। আসলে গর্ভাবস্থা থেকেই ডায়াবেটিস প্রতিরোধ শুরু হয়। অনেক মায়ের হয়ত আগেই ব্লাড সুগার ছিল। তিনি কনসিভ করছেন কিন্তু জানেন না যে তার ডায়াবেটিস আছে।
এর মানে অনাগত শিশুর কাছে আমরা হাইপারগ্লাইসেমিয়া বা হাইগ্লুকোজ লেভেলটা এক্সপোজ করছি। ফলে শিশুর শরীরে এই প্রোগ্রামটা সেট হয়ে যাচ্ছে এবং ভবিষ্যতে তারও ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি তৈরি হচ্ছে।
যেসব মায়ের আগে থেকেই ডায়াবেটিস আছে কিন্তু গর্ভাবস্থায় সেটি অনিয়ন্ত্রিত হয়ে পড়ে, সেক্ষেত্রে সন্তানের পরবর্তীতে ডায়াবেটিস হতে পারে। এগুলো হলো দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব। আর স্বল্পমেয়াদি প্রভাবে শিশু বিকলাঙ্গ হতে পারে, মিসক্যারেজও হয়ে যেতে পারে।
মায়েদের ক্ষেত্রে অ্যাক্ল্যাম্পসিয়া হতে পারে, হাইপারটেনশন হতে পারে, কিডনিতেও সমস্যা দেখা দিতে পারে। সুতরাং, আগে থেকে ডায়াবেটিস থেকে থাকলে গর্ভাবস্থায় সেটি সুন্দরভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখা উচিত। নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ ও ৭-১৫ দিন পরপর ডায়াবেটিস পরীক্ষা করা উচিত।
এ সময় আমরা খাওয়ার ওষুধ সাধারণত দেই না, ইনসুলিন দিয়ে থাকি। আবার অনেক মায়ের ক্ষেত্রে দেখা যায়, গর্ভধারণ হওয়ার পর তাদের ডায়াবেটিস হচ্ছে। এজন্য আমরা বলি গর্ভাবস্থায় প্রথম থেকেই পরীক্ষা করা উচিত বিশেষ করে চার মাসের পর বা ২০ সপ্তাহের দিকে। এ সময় সুগার বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে এবং প্লাসেন্টা থেকে যে হরমোন আসে, সেটিকে আমরা ডায়াবেটোজেনিক হরমোন বলে থাকি। এই হরমোনগুলোর কারণে যেহেতু সুগার বাড়তে পারে, সেজন্য পরীক্ষা করে অবশ্যই সুগারের লেভেল জেনে নিতে হবে এবং নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নিতে হবে।
এতক্ষণ গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস হয়ে গেলে অনেকগুলো ক্ষতির কথা আমরা বললাম। এর পাশাপাশি যদি সিজার করার প্রয়োজন হয়, তাহলে অপারেশনের পর মায়ের কাটাস্থান শুকাতে অনেক সময় লেগে যায়। নানা জটিলতা দেখা দিতে পারে। এজন্য গর্ভাবস্থায় সুগার পরীক্ষা করে দ্রুত চিকিৎসা নিতে হবে।