লিউকোরিয়া কোনো রোগ নয়
তবে স্বাভাবিক কাজকর্মে ব্যাঘাত হচ্ছে মনে হলে চিকিৎসা করাতে হবে
লিউকোরিয়া (সাদাস্রাব) একটি ফিজিওলজিক্যাল বিষয়। প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া। খুব বেশি পরিমাণে না হলে এটি কোনো রোগ নয়। সাধারণত জরায়ু ভেজা থাকলে সুস্থ থাকে। সৃষ্টিকর্তা মেয়েদের এভাবেই সৃষ্টি করেছেন।
১২ থেকে ৪৫ বছর পর্যন্ত একটা মেয়ের মাসিক চলতে থাকে। এ সময় মাসিকের আগে ও পরে কিংবা দুই মাসিকের মাঝে যে ডিস্টার হয়, সেটিই লিউকোরিয়া। এটি নিয়ে চিন্তার কিছু নেই।
তবে এটির কারণে স্বাভাবিক কাজকর্মে ব্যাঘাত হচ্ছে মনে হলে চিকিৎসা করাতে হবে। এক্ষেত্রে আমরা রং ও ধরন কেমন, তরল কি না তা জেনে পরীক্ষা করাই। এরপরই চিকিৎসা দেই।
তবে লিউকোরিয়া থেকে সুরক্ষার জন্য ব্যক্তিগত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা মেনে চলতে হবে। নিউরোসিল খাবার খেতে হবে। নিউট্রেশন, কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার খেতে হবে। পাশাপাশি প্রোটিন জাতীয় খাবারের পরিমাণ ঠিক রাখতে হবে। প্রতি বেলায় এক পিস মাছ-মাংস অথবা ডিম খাবার তালিকায় রাখতে হবে। এক কাপ দুধ খেতে হবে। প্রতিদিনের চাহিদা অনুযায়ী প্রোটিনের পূরণ করতে হবে। ফ্যাটের পরিমাণ তো থাকতে হবেই।
তবে অতিরিক্ত চর্বি জাতীয় খাবার খাওয়া যাবে না। শাকসবজি খেতে হবে। ওভার প্রোটিন শাকসবজি না খাওয়ায় ভালো। পর্যাপ্ত পানি খেতে হবে। একই সাথে মনে রাখতে হবে, রান্নার সময় যে লবণ দেই তাই যথেষ্ট। পাতে আলাদা লবণের প্রয়োজন নেই।
কেউ অতিরিক্ত মোটা হয়ে থাকলে নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। আন্ডারওয়েট হলেও লিউকোরিয়ার অসুবিধা হতে পারে। আমাদের মধ্যে একটি ভুল ধারণা রয়েছে, সাদাস্রাবের কারণে শরীর শুকিয়ে যায়। প্রোটিন, মিনারেল সবকিছু বের হয়ে যায়— এ রকম কিছুই হয় না। বাড়তি ওজনের পাশাপাশি কম ওজনের নারীদেরও সমস্যাটি হতে পারে।
যদি নিউট্রেসিনাল সাদাস্রাব না হয়, তাহলে আমাদের সবকিছু ঠিক থাকবে। কিন্তু সাদাস্রাবের রং সবুজায়ন না হয়, দুর্গন্ধযুক্ত হয়, খুব বেশি দইয়ের মতো সাদা হয়ে যায়, সেক্ষেত্রে চিকিৎসা নিতে হবে।
বিবাহিতদের ক্ষেত্রে দুজনকেই চিকিৎসা নিতে হবে। কারণ উভয়ের কারণে এটি হয়ে থাকতে পারে। অনেক সময় দেখা যায়, স্ত্রী চিকিৎসা নিয়ে ভালো ছিলেন। কিন্তু স্বামী চিকিৎসা না নেয়ায় তার কারণে স্ত্রী আবারো সমস্যার মুখোমুখি হলেন। অ্যাসোসিয়েটেড রক্তশূন্যতা, ডায়াবেটিসের মতো সমস্যাগুলোর বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। বড় কথা সাদাস্রাব হওয়ার পরিবেশ রেখে দিলে এটি বারবারই ফিরে আসবে।