দাঁত পড়ে গেলে সমস্যা, করণীয়
দাঁত সংস্থাপন না করলে খেতে সমস্যা হবে, দেখতে খারাপ লাগবে। হাসতে জড়তা আসবে
দাঁত থাকলে পড়ে যাবে, এটাই স্বাভাবিক। বিভিন্ন কারণে দাঁত পড়ে যেতে পারে। আঘাত পেয়ে, দাঁত ক্ষয় হলে কিংবা কোনো ধরনের সংক্রমণের কারণেও পড়ে যেতে পারে। দাঁত পড়ে যাওয়ার পর সেখানে নতুন দাঁত সংস্থাপন/প্রতিস্থাপনের (ইমপ্ল্যান্ট) প্রশ্ন সামনে আসে।
দাঁত সংস্থাপন করা বা নতুন দাঁত লাগানো কেন জরুরি, সে বিষয়ে আলোচনা করব। আমাদের কোনো একটি দাঁত পড়ে গেলে সেই দাতেঁর পাশের দুটি সরে আসতে পারে। এতে ফাঁকা জায়গা তৈরি হবে। মাড়ি অনেক সময় ডিস্ট্রাকশন হয়ে সমতল হয়ে যায়। দেরি করলে একটি সময়ে গিয়ে ফাঁকা জায়গা আর পূরণ করা সম্ভব হয় না।
এ সমস্যা সমাধানে আগে চিকিৎসকরা কনভেনশনাল ওয়েতে চিকিৎসা দিতেন। এটি এখনো রয়েছে। পাশপাশি আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থায় এসেছে সংস্থাপন বা ইমপ্ল্যান্ট। দাঁত সংস্থাপন না করলে খেতে সমস্যা হবে, দেখতে খারাপ লাগবে। হাসতে জড়তা আসবে। বলা হয়, একটি সুন্দর হাসি সুস্থ জীবনের জন্য অপরিহার্য। অনেক সময় দেখা যায়, দীর্ঘমেয়াদি পেছনের দাঁত না থাকলে চোয়ালের জয়েন্টের সমস্যা হয়, বয়স্কদের মতো লাগে।
দাঁত সংস্থাপনের তিনটি পদ্ধতির মধ্যে কনভেনশনাল ওয়ে এখন অনেক কমে গেছে। এ পদ্ধতিতে দাঁত আলাদা করে রাখতে হয়। রাতে ঘুমানোর আগে খুলে রাখতে হয়। আরেকটি পদ্ধতি, ফিক্সড ফর সিরিয়াল বা শিয়াল ড্রেজার। এতে পাশের দুটি ভালো দাঁত কেটে ব্রিজ তৈরি করা হয়। আর আধুনিক পদ্ধতি ইমপ্ল্যান্টে হাড়ের মধ্যে স্ক্রুপ বসিয়ে, এর ওপর একটি ক্যাপ বসানো হয়। ফলে এটি একেবারে নরমাল দাঁতের মতো দেখায়।
ইমপ্ল্যান্ট আমাদের দেশে নতুন টেকনোলজি। অবশ্য ৫০ বছরের বেশি এ পদ্ধতিতে চিকিৎসা চললেও এখন সফলতা এসেছে। নতুন দাঁত লাগানোর জন্য এখন পর্যন্ত এর চেয়ে ভালো পদ্ধতি আবিষ্কৃত হয়নি।
ইমপ্ল্যান্টের আগে বেশকিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। রোগীর হাড়ের কোয়ালিটি, ডায়াবেটিস, রক্তপড়া জনিত কোনো রোগ আছে কি না এবং বয়স ১৬ বছরের বেশি হতে হবে। ১৬ বছর বয়সের আগে কারও চোয়ালের ঠিকঠাক গঠন হয় না। এজন্য শিশুদের কখনো ইমপ্ল্যান্ট করা ঠিক নয়।
প্রযুক্তির কল্যাণে এক ঘণ্টার মধ্যেই ইমপ্ল্যান্ট করা যাচ্ছে। দাঁতের ক্রাউন্টও দেয়া সম্ভব হচ্ছে। তবে আমরা মাড়ির সাথে স্ক্রুপ দিয়ে টেইস্কোপ বসিয়ে তিন থেকে চার মাস পর্যবেক্ষণ করি। এ সময়ে টেইস্কোপ ঠিকমতো বসল কি না, কোনো অসুবিধা হচ্ছে কি না ইত্যাদি বিষয়গুলো এক্সরে করে দেখা হয়। সব ঠিক থাকলে ব্র্যাকগ্রাউন্ড বার্থডে ক্যাপ বসিয়ে দেয়া হয়। এরপর সেটি অন্যান্য ন্যাচারাল দাঁতের মতোই কাজ করে।