জন্মনিয়ন্ত্রণ পিলে হতে পারে হাড়ক্ষয় রোগ
নারীদের পিরিয়ডের পর হাড় ক্ষয়ের হার বেড়ে যায়
অস্টিওপরোসিস বা হাড় ক্ষয় রোগ একটি নীরব ঘাতক। হাড় ক্ষয় একবার হলে আর রিকভারের সম্ভাবনা থাকে না। এজন্য প্রতিরোধের চেয়ে প্রতিকার উত্তম। কারা কতটুকু ঝুঁকিতে আছেন বা কারা ইতিমধ্যেই হাড় ক্ষয়ে ভুগছেন, তা নির্ধারণ করে উপযোগী চিকিৎসা নিতে হবে।
সাধারণত যারা দীর্ঘদিন অচল, স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ সেবন করেন, তাদের হাড় ক্ষয় হতে পারে। অন্যান্য হরমোনজনিত রোগ যেমন, হাইপারথাইরয়িডিজম, হাইপারপ্যারাথাইরয়িডিজম, কুসিং সিনড্রোম, ডায়াবেটিস, অ্যাডিসন রোগ, রিউমাটয়েড আরথ্রাইটিস, এসএলই, কিডনি অকার্যকারিতার কারণেও এটি হতে পারে।
বয়স ৫০ পেরনোর পর শরীরের হাড় ক্ষয় বা এর লক্ষণগুলো প্রকাশ পেতে থাকে। কারও কারও আগেও বিভিন্ন লক্ষণ দেখা দেয়। যাদের ক্ষেত্রে হাড় ক্ষয়ের ঝুঁকি বেশি তাদের দ্রুত হাড়ের ঘনত্ব কমতে থাকে। নারীদের পিরিয়ডের পর হাড় ক্ষয়ের হার বেড়ে যায়।
আমাদের মেরুদণ্ডে যেসব হাড় আছে, সেগুলোতে পিএলআইটি হয়। কারও ক্রনিক ডিজিজ, ডায়াবেটিস, হেপাটাইটিস ধরনের কোনো রোগ থাকলেও হাড়ের ক্ষয় হতে পারে। তবে নারীদের হাড় ক্ষয়ের সাথে জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল খাওয়ার কোনো সম্পর্ক এখন পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা পাননি।
কিছু বিষয় মেনে চললে হাড়ক্ষয় প্রতিরোধ করা সম্ভব। এগুলো হলো—
১. নিয়মিত ব্যায়ামে হাড়ের শক্তি বাড়ে। এতে হাড়ের রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করে জয়েন্টগুলো সচল রাখে। শরীরের ভারসাম্য ঠিক রেখে হাড় ক্ষয় কমায়।
২. নিয়মিত পরিমাণমতো ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি-জাতীয় খাবার খেতে হবে। কারণ, হাড়ের প্রধান উপাদান হচ্ছে ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ডি। ক্যালসিয়ামের জন্য নিয়মিতভাবে মাছ, মাংস, ডিম, দুধ ও দুধজাতীয় খাবার খেতে হবে। ভিটামিন ‘ডি’র ৯০ ভাগ উৎস হচ্ছে সূর্যের আলো। তাই প্রতিদিন ১৫ থেকে ৩০ মিনিট সূর্যের আলোতে থাকুন, পাশাপাশি সামুদ্রিক মাছ খান। এতে হাড় ভালো থাকবে।
৩. ধূমপান ও মদ্যপান ত্যাগ করুন। বিশেষ করে যে মেয়েরা সিগারেট খায়, তা পুরোপুরি পরিহার করতে হবে। কারণ, এতে হাড়ের ক্ষয় বৃদ্ধি করে।
৪. ডায়াবেটিস, লিভার, কিডনি রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। কোলেস্টেরলের পরিমাণটা রক্তে ঠিকমতো থাকে কিনা খেয়াল রাখতে হবে।
৫. বাথরুমের পিচ্ছিল ভাব দূর করতে হবে। রাতে ঘরে মৃদু আলো জ্বালিয়ে রাখুন। অন্ধকারে চলাফেরা করবেন না।
৬. অতিরিক্ত ওজন বহন করবেন না।
৭. জাঙ্কফ্রুট ও ফাস্টফুড জাতীয় খাবার ছেড়ে দিতে হবে। সফট ড্রিংকসও পরিহার করতে হবে।