ফ্যাটি লিভার নির্ণয় ও চিকিৎসায় করণীয়

অধ্যাপক ডা. ফারুক আহমেদ
2021-08-27 12:17:21
ফ্যাটি লিভার নির্ণয় ও চিকিৎসায় করণীয়

ফ্যাটি লিভারের ক্ষেত্রে প্রধান চিকিৎসা হলো ওজন নিয়ন্ত্রণ করা

বর্তমানে বিশ্বে ২৫-৩০ শতাংশ মানুষ ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত। এটিকে এক সময় ধনী দেশের রোগ মনে করা হলেও এখন সব দেশেই সমান হারে মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। আমাদের দেশে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে আক্রান্তের হার প্রায় ৩০ শতাংশ। শহরে এ সংখ্যা আরও বেশিই হবে। এটি কিন্তু খুবই উদ্বেগের।

কেন হয় ফ্যাটি লিভার
ফ্যাটি লিভার খুবই কমন কিন্তু অত্যন্ত মারাত্মক রোগ। এটি হলে লিভার নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তবে ফ্যাটি লিভার প্রতিরোধযোগ্য। এজন্য সবার মধ্যে সচেতনতা দরকার।

ফ্যাটি লিভার অনেক কারণে হতে পারে। তবে অতিরিক্ত ওজন, ডায়াবেটিস, ব্লাড প্রেসার, রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি থাকলে, তাদের মধ্যে রোগটি বেশি হয়।

ফ্যাটি লিভারের আরও কিছু কিছু কারণ রয়েছে, যেগুলো হয়তো কোনো অসুখের কারণে হয়ে থাকে। স্বাভাবিক ওজন থাকলেও অনেক সময় ডায়াবেটিস, ব্লাড প্রেসার, রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ বেশি থাকলে তার ফ্যাটি লিভারে আক্রান্তের সম্ভাবনা থাকে।

ফ্যাটি লিভার হয় মূলত লিভারে চর্বি জমা থেকে। তবে এটি কোনো বয়সজনিত রোগ নয়। যেকোনো বয়সে যে কারও রোগটি হতে পারে। বয়সের তুলনায় বেশি ওজনের শিশুদের মধ্যে ফ্যাটি লিভারে আক্রান্তের সম্ভাবনা বেশি দেখা যায়।

খুব একটা পার্থক্য না থাকলেও ঐতিহাসিকভাবে নারীদের ওজন একটু বেশি হয় এবং তাদের মধ্যে ফ্যাটি লিভারে আক্রান্তের প্রবণতা বেশি।

ফ্যাটি লিভার নির্ণয় ও করণীয়
ফ্যাটি লিভার নির্ণয়ের সহজ পরীক্ষা হলো আলট্রাসনোগ্রাম। এ পরীক্ষার সুযোগ আমাদের দেশে সর্বত্র রয়েছে। উপজেলা এমনকি ইউনিয়ন পর্যায়েও আলট্রাসনোগ্রাম করার সুযোগ রয়েছে। সুতরাং কেউ নিজের ফ্যাটি লিভার সম্পর্কে জানতে চাইলে আলট্রাসনোগ্রাম করতে হবে।

এছাড়া কোনো কোনো ক্ষেত্রে এমআরআই, সিটিস্ক্যান, লিভার বায়োপসিসহ প্রয়োজন অনুযায়ী পরীক্ষা করে রোগটি শনাক্ত করা হয়।

ফ্যাটি লিভারের ক্ষেত্রে প্রধান চিকিৎসা হলো ওজন নিয়ন্ত্রণ করা। কারও ডায়াবেটিস, ব্লাড প্রেসার, কোলেস্টেরল থাকলে সেগুলো নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।

ফ্যাটি লিভার অনেক কমন একটি রোগ এবং এটি প্রতিরোধযোগ্য। ফ্যাটি লিভারের জন্য যেসব কারণ রয়েছে, একটু সচেতন হলেই সেগুলো প্রতিরোধ করা সম্ভব।

খাবার গ্রহণের ব্যাপারে একটু মিতব্যয়ী হতে হবে। পরিমিত পরিমাণে সুষম এবং স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খেতে হবে।

নিয়মিত কায়িক পরিশ্রম, হাঁটাচলা, শরীর চর্চা ও খেলাধূলা করতে হবে।


আরও দেখুন: