এই সময়ে শিশুর শ্বাসকষ্ট কি করোনার লক্ষণ
দুই বছরের নিচের শিশুদের ব্রংকিওলাইটিস হয়
আমাদের কাছে সম্প্রতি শিশুদের একটি সমস্যা নিয়ে অভিভাবকরা আসছেন। তাহলো, শিশুর হঠাৎ শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। করোনা মহামারীর এই সময়ে এমন হলে যে কোনো অভিভাবক ঘাবড়ে যাবেন, এটাই স্বাভাবিক। তারা আসলে সন্তাদের করোনা হয়েছে কিনা নিশ্চিত হতে চান।
আমি প্রথমেই বলব, সব শ্বাসকষ্ট করোনার লক্ষণ নয়। আবার সব শ্বাসকষ্ট নিউমোনিয়ার লক্ষণও নয়। এ সময় শিশুদের কাশি হয়। কাশি ও পেটব্যথা হলো অন্য রোগের উপসর্গ। পেটব্যথা অনেক কারণে হতে পারে। এসিডিটির জন্য হতে পারে, অ্যাপেনডিক্সের ব্যথা হতে পারে, ইউরিন ইনফেকশনের জন্য পেটব্যথা হতে পারে এমনকি বদহজমের জন্যও পেটব্যথা হতে পারে।
সবার আগে রোগটি নির্ণয় করতে হবে। কারণ যেকোনো রোগ যত প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পড়বে, তার তীব্রতা তত কম হবে। আগেভাগে আমরা চিকিৎসা দিয়ে সারিয়ে নিতে পারব।
দুই বছরের নিচের শিশুদের ব্রংকিওলাইটিস হয়। এক্ষেত্রে সে স্বাভাবিক খেলাধূলা সবকিছুই করে কিন্তু তার তীব্র কাশি থাকে এবং কাশির সাথে শ্বাসকষ্ট হয়। এক্ষেত্রে আমরা অভিভাবকদের বলে থাকি, এটি ব্রংকিওলাইটিস। এর চিকিৎসায় কোনো ধরনের এন্টিবায়োটিকের প্রয়োজন নেই। আমরা চিকিৎসকরা তখনই বিপদে পড়ে যাই যখন আপনারা পাড়া-মহল্লার দোকান থেকে এক-দুই ডোজ এন্টিবায়োটিক শিশুকে খাওয়ানোর পর নিয়ে আসেন।
তখন আমরা দ্বিধায় পড়ে যাই, শিশুকে এন্টিবায়োটিক চালিয়ে যাব নাকি বন্ধ করে দিব। এক্ষেত্রে হঠাৎ বন্ধ করে দিলে এন্টিবায়োটিক রেজিস্টেন্সের ঝুঁকি তৈরি হয়। এজন্য অভিভাবকদের বলছি, চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া আপনারা পাড়া-মহল্লার দোকান থেকে কখনোই কোনো এন্টিবায়োটিক শিশুদের খাওয়াবেন না। এক্ষেত্রে ন্যূনতম এমবিবিএস চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন। সেটি সম্ভব না হলে আপনার নিকটস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে পরামর্শ নিয়ে নিতে পারেন।
শিশুদের আরেকটি কমন সমস্যা হচ্ছে, সে কিছু খাচ্ছে না। এটাও একটি উপসর্গ। অনেক রোগের প্রাথমিক কারণ হিসেবে এটা হতে পারে। টানা ১০-১৫ দিন শিশু কিছু খেতে না চাইলে অভিভাবকদের অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।