দীর্ঘ সময় মুখে মাস্ক বাড়াচ্ছে ত্বকের সমস্যা, কী করবেন?
করোনা মহামারীতে মানুষের জীবনযাপন ওলট-পালট হয়ে গেছে। অদৃশ্য শত্রুকে ফাঁকি দিতে দীর্ঘ সময় পরতে হচ্ছে মাস্ক। আর এর ফলে বাড়ছে ব্রণসহ ত্বকের নানা সমস্যা।
এই সমস্যা থেকে বাঁচতে কিছু পরামর্শ দিয়েছেন ইউনাইটেড হাসাপাতালের চর্মরোগ বিভাগের অধ্যাপক ডা. জিনাত মেরাজ স্বপ্না।
তিনি বলেন, ত্বকের নিচের গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত সেবাম বাইরের ঘাত-প্রতিঘাত থেকে ত্বককে বাঁচানোর পাশাপাশি ত্বককে কোমল রাখতে সাহায্য করে। নানা কারণে লোমকূপের মুখ আটকে গেলে ব্রণ অথবা স্কিন র্যাশও হতে পারে।
দীর্ঘ সময় ধরে মাস্ক পরে থাকার কারণে অনেকেরই ব্রণের প্রবণতা বাড়ছে জানিয়ে অধ্যাপক ডা. জিনাত মেরাজ স্বপ্না বলেন, গ্রন্থির সেবাম নিঃসরণ বন্ধের পাশাপাশি যদি বাইরের ময়লা জমে লোমকূপ আটকে যায়, তাহলে ব্রণ সমস্যা মাথাচাড়া দেয়। এর সঙ্গে জীবাণুর সংযোগে বেশ বাড়াবাড়ি রকমের ব্রণের ঝুঁকি থাকে।
তার মতে, সাধারণত অল্প-স্বল্প ব্রণ হলে আপন নিয়মেই তা সেরে যায়। কিন্তু সমস্যা বেড়ে গেলে ত্বক বিশেষজ্ঞর পরামর্শ নেওয়া উচিত।
করোনায় সবাইকেই মাস্ক পরতে হচ্ছে। এর ফলে মুখে ব্রণসহ ত্বকের নানা সমস্যা বাড়ছে। যে কোনো বয়সেই মাস্কের সংস্পর্শে ব্রণর ঝুঁকি বাড়ে, বলেন এই চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ।
তিনি বলেন, বিশেষ করে যাদের দীর্ঘ সময় মাস্ক পরে থাকতে হয়, তাদের ঝুঁকি বেশি। সার্জিক্যাল ফেস মাস্ক যে উপাদানে তৈরি, তা ভাইরাস আটকাতে অত্যন্ত কার্যকর হলেও ত্বকবান্ধব নয়।
তার মতে, বিশেষ করে যাদের সংবেদনশীল ত্বক, তাদের মাস্ক পরার কারণে ব্রণসহ নানা র্যাশের ঝুঁকি বাড়ে। তুলনামূলকভাবে সার্জিক্যাল মাস্ক বা কিছু না হলেও পরিষ্কার সুতির কাপড়ের মাস্ক অনেক বেশি নিরাপদ।
অধ্যাপক ডা. জিনাত মেরাজ স্বপ্না বলেন, ব্রণ বা যে কোনো স্কিন র্যাশের সমস্যার মূলে রয়েছে অপরিচ্ছন্নতা। তাই মুখ পরিষ্কার রাখা জরুরি। যাদের অফিসে টানা ৭–৮ ঘণ্টা মাস্ক পরে থাকতে হয়, তাদের এই সমস্যার ঝুঁকি বেশি। কাজের ফাঁকে সম্ভব হলে অফিসের ফাঁকা করিডরে গিয়ে মাস্ক খুলে স্যানিটাইজ করে আবার পরে নিন। অথবা অফিসে খাবার আগে মাস্ক খুলে মুখ-হাত সাবান দিয়ে ধুয়ে নিয়ে খাবারের পর মুখে ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে অন্য পরিষ্কার মাস্ক পরুন।
তিনি বলেন, ব্রণ হলে কখনোই তা হাত দেওয়া যাবে না, তা হলেই কালো দাগ হয়ে যাবে। ত্বকের সমস্যা হলে নিজে থেকে লিভার টনিক না খেয়ে অবশ্যই চিকিত্সকের পরামর্শ নিতে বলেন এই চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ।