শ্বাসকষ্টের রোগীরা কি রোজায় ইনহেলার নিতে পারবেন?
রোগ নিয়ন্ত্রণে থাকলে শ্বাসকষ্টের রোগীদের রোজা রাখতে কোনো বাধা নেই। রোজা কোনোভাবেই হাঁপানি রোগ বাড়িয়ে দেয় না। তবে স্বাস্থ্যের অবনতি হওয়ার আশঙ্কা থাকলে রোজা না রাখারও সুযোগ রয়েছে ইসলামে। এছাড়া রোজা রাখলে প্রয়োজনে সাধারণ ইনহেলার ও অক্সিজেন নিতে পারবেন তারা।
ডক্টর টিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমনটাই বলেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) রেসপিরেটরি মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও বক্ষ্যব্যাধি বিশেষজ্ঞ ডা. শামীম আহমেদ।
তিনি বলেন, রোজা হচ্ছে আমাদের ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে অন্যতম স্তম্ভ। এজন্য প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক মুসলিমকে রোজা রাখতে হয়। কিন্তু সমস্যা হয় শ্বাসকষ্ট রোগীদের ক্ষেত্রে। শ্বাসকষ্ট রোগের বিভিন্ন ওষুধ বিশেষ করে ইনহেলারসহ নানা ধরনের ওষুধ খেতে হচ্ছে। এ অবস্থায় তারা রোজা রাখতে পারবে কিনা এটি আসলে অনেকেরই প্রশ্ন।
এই বিশেষজ্ঞ বলেন, ইসলাম হচ্ছে একটি উদার ধর্ম। সাধ্যের বাইরে কোনো কিছু চাপিয়ে দেওয়া হয় না। রোজা রাখলে যদি দেখা যায় তার স্বাস্থ্যের অবনতি হবে, তাহলে কিন্তু উনার রোজা রাখার কোনো প্রয়োজন নেই। এক্ষেত্রে কোরআনের সুস্পষ্ট নির্দেশনাও রয়েছে।
তিনি বলেন, আরেক কথা হচ্ছে- রোজার দিনে ইনহেলার নিয়ে রোজা রাখতে পারবে কিনা? আসল কথা হচ্ছে- যে জিনিসটার জন্য রোজা নষ্ট হয়, সেটা হলো কোনো খাদ্যদ্রব্য বা কোন বস্তু আমাদের পাকস্থলীতে গেলে। যারা মুখে ট্যাবলেট খান তাদের ক্ষেত্রে রোজা রাখা যাবে না।
শামীম আহমেদ বলেন, ইনহেলারের ক্ষেত্রে কিছু সময় দেখা যায়- যাদের শ্বাসকষ্ট বেশি, তাদের বেশি ইনহেলার নিতে হয়। কিছু সময় আছে দুইবার ইনহেলার নিলেই হয়। সুতরাং যদি কেউ সময় ঠিক করেন- ইফতারের পর একবার আর সেহরির আগে একবার ইনহেলার নিবেন। মাঝেও যদি প্রয়োজন হয় সে ক্ষেত্রেও নিতে পারবেন। এছাড়া এমডিআই অথবা বাজারে যে সকল পাম্প পাওয়া যায় সেগুলো নিলেও রোজা ভাঙবে না। এক্ষেত্রে যাদের ট্যাবলেটের মতো করে ইনহেলার নিতে হয় তাদের ক্ষেত্রে রোজা হবে না।
তিনি বলেন, আরেকটি বিষয় হচ্ছে- শ্বাসকষ্ট রোগীরা সাধারণত অক্সিজেন নিয়ে থাকেন। আর অক্সিজেন নিলে রোজা ভাঙবে না। অক্সিজেন, ইনহেলার এগুলো ফুসফুসে যায় এবং ফুসফুস থেকে বেরিয়েও যায়। এগুলো স্টমাক বা পাকস্থলীতে যায় না। কিন্তু রোজার সময় নেবুলাইজার নেওয়া যাবে না।
এই বিশেষজ্ঞ বলেন, এক কথায় বলা যায়- শ্বাসকষ্টের রোগীদের মধ্যে যারা মোটামুটি সুস্থ আছেন এবং যাদের জরুরি ভিত্তিতে কোনো ট্যাবলেট খাওয়া লাগবে না, তারা রোজা রাখতে পারবেন এবং ইনহেলার প্রয়োজন অনুযায়ী নিতে পারবেন।