শিশুদের ব্লাড ক্যান্সার কেন হয়, দেশে যত চিকিৎসা সুবিধা
ফাইল ছবি
ক্যান্সার শরীরের জটিল রোগগুলোর মধ্যে অন্যতম। বড়দের পাশাপাশি শিশুরাও এখন এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। শিশুদের ক্যান্সারের মধ্যে ব্লাড ক্যান্সার ও ব্রেন ক্যান্সারের সংখ্যাই বেশি। শিশুদের ক্যান্সার রোগ বিষয়ে ডক্টর টিভির এক অনুষ্ঠানে জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের শিশু রক্তরোগ ও ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ সহকারী অধ্যাপক ডা. রাশেদ জাহাঙ্গীর কবীর জানিয়েছেন গুরুত্বপূর্ণ নানা তথ্য।
অধ্যাপক ডা. রাশেদ জাহাঙ্গীর কবীর বলেন, শিশুদের ক্যান্সারের বেশিরভারগই হচ্ছে ব্লাড ক্যান্সার। একে বলে লিউকেমিয়। সাধারণত শিশুদের শতকরা ২৫-৩৫ ভাগ ব্লাড ক্যান্সার দেখা যায়। এছাড়া ব্রেন ক্যান্সার, লিম্পুমা, রেটিনো ব্লাস্টুমা, নিউরো ব্লাস্টুমা, পুলিস্টুমার ক্যান্সারও মোটামুটি ৩-৪ভাগ হয়।
শিশুদের ব্লাড ক্যান্সারের ধরণ ও কারণ
এ ব্যাপারে ডা. রাশেদ জাহাঙ্গীর কবীর বলেন, শিশুদের ব্লাড ক্যান্সারের সঠিক কোনো কারণ জানা যায় না। তবে বেশিরভাগই জেনেটিক কারণে হয়। তবে যদি ক্যান্সারের জন্য বাচ্চাদের সঠিকভাবে চিকিৎসা দেওয়া যায়, তাহলে শতকরা ৮০ ভাগেরও বেশি রোগী ভালো হয়। আর আমাদের দেশে শিশুদের সরকারিভাবেও বিনা খরচে ক্যান্সারের চিকিৎসাটাও পাওয়া যায়।
পরিবারের কোনো সদস্যের ক্যান্সার হলে তার বাচ্চাদেরও এ রোগে আক্রান্ত হবার আশংকা থাকে।একে বলে লি ফ্রমেনি সিনড্রোম। একটা জিন আছে বি-৫৫ জিন। এই অস্বাভাবিক জিনটার কারণেই হয়তো কোনো পরিবারে ক্যান্সার থাকলে ব্রেস্ট ক্যান্সার, স্ট্রোমাকে ক্যান্সার আবার কারো লিউকিমিয়া হতে পারে এবং অষ্ট সারকোলাও হতে পারে। পরিবারের যেকোনো সদস্যের বিভিন্ন রকমের ক্যান্সার হতে পারে যদি এই জেনেটিক এবনরমালিস্টটা থাকে। যদি এমনটা হয়ে থাকে তবে একে প্রতিরোধ করার কিছু নেই বলেন এই ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ।
ক্যান্সারের চিকিৎসা
এ ব্যাপারে জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের শিশু রক্তরোগ ও ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ সহকারী অধ্যাপক ডা. রাশেদ জাহাঙ্গীর কবীর বলেন, ক্যান্সারের চিকিৎসা আসলে তিনটা। ক্যামোথেরাপি, রেডিওথেরাপি, সার্জারি। আমাদের ব্লাড ক্যান্সারের জন্য লাগে ক্যামোথেরাপি। আর ক্যামোথেরাপির পুরোপুরি ব্যবস্থাটা আমাদের দেশে আছে এবং সম্ভব। আমাদের সরকারি পর্যায়ে দেখা যায়, অনেক সময় বিনামূল্যে ওষুধের ব্যবস্থাও আছে। তাছাড়া বোনমেরু ট্রান্সপ্লান্ট ক্যান্সারের জন্য ফাইনাল চিকিৎসা। এটাও আমাদের দেশে চালু হয়েছে, তবে পুরোপুরিভাবে হয়নি। তবে হয়তো অদূর ভবিষ্যতে আমরা সামনে দিনগুলোতে এটার ব্যাপারে শুরু করে দিবো।
তিনি বলেন, ক্যান্সার চিকিৎসা ডায়াগনস্টিক করলে ক্যামোথেরাপি দিতে হবে। এটাই ব্লাড ক্যান্সার আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসার জন্য কার্যকরী। এছাড়া ব্লাড ট্রান্সফিউশন, প্লাটিলেট ট্রান্সফিউশন, কিছু স্যালাইন, এন্টিবায়োটিকস, এন্টিফাকার, এন্টিভাইরাল এসব ওষুধ লাগতে পারে। এসবই গ্রহণযোগ্য চিকিৎসা। কিন্তু আসল চিকিৎসা হচ্ছে ক্যামোথেরাপি।