রমজানে ভুরিভোজ শরীরে মারাত্মক ক্ষতি করে
রোজা রাখা মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের অন্যতম সেরা মাধ্যম। সুস্থ্যভাবে রোজা পালন করতে সবাই চান। কিন্তু খাদ্যাভাসের কারণে অনেকেই ভোগেন শরীরের নানা সমস্যায়। এরমধ্যে অতি ভুরিভোগ রোজাদারের শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এতে সুস্থ্যভাবে রোজ পালন কঠিন হয়ে পড়ে। আসুন জেনে নেই রমজানে শরীর সুস্থ রাখতে সেহরী ও ইফতারে কি কি খাবার খাবেন?
এ বিষয়ে ডক্টর টিভির সঙ্গে কথা বলেছেন শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট অ্যান্ড হাসপাতালের পরিচালক, পরিপাকতন্ত্র ও লিভার রোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. ফারুক আহমেদ।
তিনি বলেন, সেহরি হোক কিংবা ইফতারি, যেকোনো খাবারেই অতি ভুরিভোজ করা যাবে না। সেহরিতে শরীরের জন্য প্রোটিন, ভিটামিন, মিনারেলস প্রয়োজন হয় সেগুলো আমরা পর্যাপ্ত পরিমানে খাবো। যেসব খেলে আমার পেটে সমস্যা হয় না সেসব খাবারগুলো খাবো। এমন কিছু খাবোনা যে সব খাবারে আমি অভ্যস্ত না, যেগুলো খেলে আমার পেটে গন্ডগোল হয়। সেহরি খাওয়ার পর সাধারণত আমাদের সারাদিন না খেয়ে থাকতে হয়, এ কারণে আমরা অনেক সময় ভুরিভোজ করার চেষ্টা করি, এটা কিন্তু মোটেও ঠিক না। এই ভুরিভোজ কিন্তু পেটের জন্য যেমন ক্ষতিকারক স্বাস্থ্যের জন্যও ক্ষতিকারক। সেহরির সময় প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে। এখন গ্রীষ্মকাল। এই সময়ে শরীরে পানির চাহিদা ব্যাপক হারে থাকে। তাই এ সময় বেশি পরিমাণে পানি পান করাটা শরীর জন্য অত্যন্ত ভালো।
অধ্যাপক ডা. ফারুক আহমেদ বলেন, ইফতারিতে সাধারণত পেঁয়াজু ,বেগুনি, চপ, এ খাবারগুলো খেয়ে থাকি। কিন্তু এগুলো খাওয়া উচিত না। আমরা যদি পানি কিংবা বাসায় বানানো বিভিন্ন ধরনের শরবত খেয়ে থাকি, এগুলো কিন্তু অত্যন্ত স্বাস্থ্যসম্মত। পাশাপাশি খেজুর, বিভিন্ন ধরনের রঙিন ফলমূল ও বাসায় বানানো হালিম এগুলো তাৎক্ষণিক শরীরে শক্তি দেয়ার জন্য বেশ উপকারী। এছাড়াও আপনি ছোলা-মুড়ি খেতে পারেন। পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে পানি এবং সবজি খেতে হবে।
ভুরিভোজে কি ধরণের সমস্যা হতে পারে? জানতে চাইলে এই পরিপাকতন্ত্র ও লিভার রোগ বিশেষজ্ঞ বলেন, হঠাৎ করে একদিন বেশি করে খেলে, সারাদিন আপনার অস্বস্তি লাগবে। এছাড়া অতিরিক্ত ভুরিভোজের ফলে আপনার বুক জ্বালাপোড়া করবে, ঢেকুর আসা, ঢেকুরের সাথে খাবার বেরিয়ে আসা, এগুলো হতে পারে। অতি ভুরিভোজের কারণে অন্যান্য রোগের উপসর্গগুলো দেখা দিতে পারে। কারো আগে থেকে আলসার, লিভার, প্যানক্রিয়াস, গলব্লাডার রোগ থাকলে, অতিরিক্ত ভুরিভোজের ক্ষেত্রে এসব রোগের উপসর্গগুলো বেড়ে যেতে পারে। তাছাড়া ভুরিভোজ সবসময়ের জন্যই ক্ষতিকর। অতিরিক্ত ভুরিভোজে শরীরে মেদ জমে। এই মেদের ফলে শরীরের ওজন বেড়ে যায়, শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। অতিরিক্ত ওজন বা স্থুলতা শরীরের খুব খারাপ অবস্থা তৈরি করে। তাই শরীর-স্বাস্থ্য সবসময় ভালো রাখতে ভুরিভোজ পরিহার করতে হবে ।
সেহরিতে কেউ বিরানি , খিচুরি বা কিছুটা তেলজাতীয় খাবার খেলে শরীরে পার্শপ্রতিক্রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই এসব খাবার যতটা সম্ভব পরিহার করা উচিত বলে মনে করেন অধ্যাপক ডা. ফারুক আহমেদ।