রোজায় গর্ভবতী মায়েরা কী করবেন, কী করবেন না
ডা. নাহিদা আহমেদ
রোজা ফরজ ইবাদতগুলোর একটি। তবে মা এবং অনাগত সন্তানের বিষয়টি বিবেচনায় ইসলামে গর্ভবতী মায়েদের রোজা পালনে ছাড় রয়েছে। এরপরও কোনো গর্ভবতী মা যদি রোজা রাখতে চান, তাকে কিছু বিষয় মেনে চলতে হবে।
ডক্টর টিভির সঙ্গে আলাপকালে গর্ভবতী মায়েরা রোজ রাখবেন কিনা বা রাখলে কোন কোন বিষয়গুলো মেনে চলবেন তা তুলে ধরেছেন ভেল্লা লেজার কেয়ার’র পুষ্টিবিদ ডা. নাহিদা আহমেদ।
তিনি বলেন, সাধারণত দেখা যায় গর্ভকালীন সময়ে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক জটিলতা দেখা দেয়। সেক্ষেত্রে গর্ভ ধারণের প্রথম তিন মাসে যারা বিভিন্ন ধরনের শারীরিক জটিলতা অনুভব করছেন, তাদের রোজাটা একটু এড়িয়ে চলা ভালো।
ডা. নাহিদা বলেন, গর্ভবতী মাকে দেখতে হবে তিনি শারীরিকভাবে কতটা সুস্থ বা কোনো জটিলতা আছে কিনা। নিজের ভেতর যদি আত্মবিশ্বাস থাকে রোজা থাকলে কোনো ধরনের সমস্যা হবে না বা গর্ভের সন্তান সঠিকভাবে সঠিক পুষ্টিতে বেড়ে উঠবে, তাহলে অবশ্যই রোজা থাকা যাবে।
তিনি বলেন, রোজ রাখলে কিছু নিয়ম মেনে চললে ৩০টি রোজাই পালন করা সম্ভব। প্রথম বিষয় হলো- এজন্য গর্ভবর্তী মাকে অনেক বেশি সচেতন থাকতে হবে।
এই পুষ্টিবিদ বলেন, এখন যেহেতু গ্রীষ্মের সময় সে কারণে দিন দীর্ঘ তথা অভুক্ত থাকার সময়টা বেশি। সেজন্য ইফতার থেকে সেহেরি পর্যন্ত সময়টাতে গর্ভবতী মায়েদের তাদের খাদ্য তালিকা একটু ভাগ করে নিতে হবে। অল্প অল্প করে বারে বারে খেতে হবে। এখানে তিন থেকে চারবার খাবার গ্রহণ করতে হবে। আর এই সময়টাতে পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে।
তিনি বলেন, ইফতার থেকে সেহেরি পর্যন্ত সময়ে গর্ভবতী মায়েদের ১৪-১৫ গ্লাস পানি পান করতে হবে। পানি বলতে শুধু সাদা পানি নয়, সেটা হতে পারে লেবু, মৌসুমি ফলের শরবত অথবা স্যুপ।
ডা. নাহিদা বলেন, সেহেরিতে অতিরিক্ত না খেয়ে পরিমিত পরিমাণে খেতে হবে। অন্যান্য দিন দুপুরের খাবারে যতটুকু খাবার গ্রহণ করি, ঠিক সেই পরিমাণ। আর সেহেরিতে ধীরে ধীরে হজম হয় এই জাতীয় খাবার রাখতে হবে।
তিনি বলেন, ইফতারের সময় প্রথমে অনেক বেশি পানি পান না করে অল্প অল্প করে বারে বারে পানি পান করতে হবে। সহজে হজম এই জাতীয় খাবারগুলো যেন ইফতারের মেন্যুতে থাকে। কারণ দীর্ঘ সময় রোজা থাকার পরে অতিরিক্ত ভাজা-পোড়া খাবার হজমে ব্যাঘাত ঘটতে পারে বা এসিডিটি হতে পারে।
এই পুষ্টিবিদ বলেন, শারীরিক জটিলতা নির্ণয় করে গর্ভবতী মাকে একটি আদর্শ খাবার তালিকা তৈরি করে রোজা থাকতে হবে। এ বিষয়টি অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে।