অনিয়মিত মাসিক হলে যা করণীয়

ডা. তানিয়া রহমান মিতুল
2020-11-10 06:04:41
অনিয়মিত মাসিক হলে যা করণীয়

অধ্যাপক ডা. খায়রুন নাহার,ডানে অধ্যাপক ডা. ইফফাত আরা

মাসিক নারীদের জীবনে একটি স্বাভাবিক ঘটনা। অনেক সময় অনিয়ন্ত্রিত জীবন-যাপনের ফলে এটি অনিয়মিত হয়ে যায়। যারফলে এসময় চিকিৎসকদের শরণাপন্ন হতে হয়। সম্প্রতি ডক্টর টিভিতে 'অনিয়মিত মাসিক' নিয়ে বিভিন্ন কথা বলেছেন স্যার-সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিডফোর্ট হাসপাতালের গাইনি অ্যান্ড অবস্ বিভাগের অধ্যাপক ডা. খায়রুন নাহার এবং ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হসপিটালের পরিচালক এবং গাইনি অ্যান্ড অবস্ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. ইফফাত আরা। তাদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেছেন ডা. তানিয়া রহমান মিতুল

ডক্টর টিভি: অনিয়মিত মাসিকের বিষয়টি কী? বয়স হিসেবে এটি ভাগ করা যায় কিনা?

অধ্যাপক ডা. ইফফাত আরা: মাসিক একজন নারীর জীবনে খুব গুরুত্বপূর্ণ জিনিস। মাসিক নামটাই আসছে মাসের নাম হিসেবে। সাধারণত ২৮ দিন দিন পরপর এটা হয়। স্থায়ী থাকবে তিন থেকে পাঁচ দিন, এটাকে আমরা সাধারণ মাসিক বলতে পারি। নারীদেরকে শৈশবকাল থেকে কৈশোর-প্রজনন জীবন তারপর মেনোপোজ (বয়স বাড়ায় নির্দিষ্ট বয়সে স্বাভাবিকভাবে মাসিক বন্ধ) অধ্যায় পার করতে হয়।

সাধারণত কৈশোরে মাসিক অনিয়মিত হয়। কারো কারো ক্ষেত্রে প্রজনন জীবনেও অনিয়মিত হয়। গর্ভাবস্থায় মাসিক অনিয়মিত থাকে আবার বাচ্চা প্রসবের পরে স্বাভাবিক হয়ে যায়। আবার, গর্ভধারণ ফুল-টার্ম হোক কিংবা অল্প সময়ে হোক কারো কারো মাসিক স্বাভাবিক হতে সময় লাগে। নারীদের মাসিক যেটা হয় সেটা খুব সূক্ষ্ম একটা ভারসাম্যে থাকে।

যার উপরে রাজত্ব করে আমাদের ব্রেন, তারপরে আমাদের থাকে পিটুইটারি গ্লান্ড। ব্রেন থেকে কিছু তথ্য আসে পিটুইটারি গ্লান্ডে, পিটুইটারি গ্লান্ড থেকে কিছু তথ্য যায় আমাদের ডিম্বাশয়ে, ডিম্বাশয় থেকে কিছু তথ্য বা হরমোন যায় জরায়ুতে। আর এই জরায়ু থেকে হরমোনের উত্থান-পতন অনুযায়ী আমাদের নারীদের মাসিকটা হয়।

আমাদের চিন্তা-ভাবনায় সমস্যা বা দুশ্চিন্তায় থাকার কারণে আমাদের মাসিক অনিয়মিত হতে পারে। হরমোনের ভারসাম্যহীনতার কারণে মাসিক অনিয়মিত হতে পারে। তাছাড়া, জরায়ু এবং শরীরে কিছু অসুখের জন্য হতে পারে। এমনকি ক্যান্সারের কারণেও অনিয়মিত হতে পারে।

ডক্টর টিভি: অনেক কিশোরীর ক্ষেত্রে মাসিক শুরু হওয়ার পরেই অনিয়মিত হয়, কী ধরনের সমস্যায় এমন হয়? এর সমাধান কী?

অধ্যাপক ডা. খায়রুন নাহার: জীবনের প্রথম মাসিক শুরু হওয়ার পর থেকে হয়তো দুই-এক মাস যাওয়ার পর মাসিক অনিয়মিত হয়। এই ক্ষেত্রে আমরা রোগীদের পরামর্শ দেই ডিম্বাশয় যখন ঠিক মতো কাজ করা শুরু করবে তখন এটি ঠিক হয়ে যাবে।

কারো ক্ষেত্রে অনিয়মিত হওয়ায় ব্লিডিং বেড়ে যায়, সেক্ষেত্রে অনেক সময় রক্ত শূন্যতার সমস্যা হয়। এইজন্য আমরা বাচ্চা বা ওই কিশোরীদের বলি ব্লিডিং হলে অবশ্যই বাবা-মাকে জানাতে হবে যেন তারা চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।

অনেক সময় দেখা যায় কারো কারো ডিম্বাশয়ে কিছু উপসর্গ যেটা লাইফস্টাইল চেঞ্জ করলে আবার ঠিক হয়ে যায়। এখনকার সময় বাচ্চা বা কিশোরী মেয়েরা ঘরের মধ্যে বেশি সময় ধরে থাকে হাঁটা-চলা কম করে, ফাস্ট ফুড বেশি খায় যার কারণে মাসিক অনিয়মিত হতে পারে।

ডক্টর টিভি: মাসে দুবার মাসিক হলে করণীয় কী? পিল খাওয়ার নিয়ম কী?

অধ্যাপক ডা. ইফফাত আরা: মাসে দুবার রেগুলার মাসিক হলে অবশ্যই পিল খাওয়া যাবে। মাসিক স্বাভাবিক হওয়ার জন্য আমরা পিল খাওয়ার পরামর্শ দেই। যদি বয়স ৪০ বা ততোধিক হয়ে থাকে তাহলেও পিল খাওয়া যাবে। তবে আমরা ৪০ এর কম বয়সীদের পিল খাওয়ার পরামর্শ দেই।

অনুষ্ঠানের পুরো ভিডিও দেখতে ক্লিক করুন


আরও দেখুন: