'সব জেলা লেভেলে কার্ডিওলজিস্ট নাই'
ডক্টর টিভি’র লাইভ অনুষ্ঠানে ডা. মোহাম্মদ সেলিম মাহমুদ এবং ডা. আনিছা নওশীন।
দেশের সব জেলা লেভেলে কার্ডিওলজিস্ট নাই বলে দাবি করেছেন রাজধানীর সিরাজুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ হসপিটালের ক্লিনিক্যাল অ্যান্ড ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজি বিভাগের চিফ কনসালটেন্ট সহকারী অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সেলিম মাহমুদ।
ডা. আনিছা নওশীনের সঞ্চলিত ডক্টর টিভির ধারাবাহিক অনুষ্ঠান 'স্বাস্থ্য সমাধান'র ১২৪ তম পর্বের অনুষ্ঠানে আলোচনাকালে ডা. মোহাম্মদ সেলিম মাহমুদ এই দাবি করেন।
ডক্টর টিভি: স্যার, আমরা এখন জানতে চাইবো, জেলা বা উপজেলা লেভেলে চিকিৎসকদের এই হার্ট আ্যাটাকের পেশেন্টদের হেন্ডেল করতে তাদের করণীয় কি?
ডা. মোহাম্মদ সেলিম মাহমুদ: মূলত আমাদের কিন্তু সমস্ত জেলা লেভেলে কার্ডিওলজিস্ট নাই। এবং এত সংখ্যক কার্ডিওলজিস্ট আমাদের দেশে নাই । তো সেখানে আমাদের কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মেডিক্যালের কনসালটেন্টরাই এই হার্ট অ্যাটাকের রোগীদের প্রাথমিকভাবে এই সেবাটা দিয়ে থাকেন। অন্তত তারা যদি এই ৪টা ইকু স্প্রিন্ট টেবলেট আর ৪টা কপিটগগ্লিন টেবলেট রোগীকে একসাথে খাইয়ে দেয়। এবং তারা যদি পেইন কিলার হিসেবে পেথেডিন মরফিন দিতে পারেন। এবং তারা যদি ভর্তি করে রক্ত পাতলা করার যে ইনজেকশন আছে সেইটা যেমন কার্ডিনেক্স বা ক্লেকসিন ইনজেকশান দৈনিক ২টা করে ৫দিনে দশটা ইনজেকশান তারা ভর্তি করে দিতে পারেন তাহলে রোগী অনেক উপকার পাবে। এটাও একটা স্টাবলিশ ট্রিটমেন্ট পদ্ধতি যদিও এটা একেবারে লেটেস্ট ট্রিটমেন্ট না।
তিনি বলেন, আমরা যেহেতু আর্থিকভাবে অত্যান্ত গরিব দেশ। আমরা চাইলেও এখানে রিং বসাতে পারিনা। এনট্রোগ্রাম করতে পারিনা, এথুফেসেলিটিস করতে পারিনা। অন্তত ওষুধের ট্রিটমেন্টটা আমরা জেলা লেভেলে দিতে পারে। এবং আমাদের সরকার সামনে চাইলে প্রতিটি জেলা লেভেলে একটি করে সিসিও প্রতিষ্ঠা করতে পারেন। একজন কার্ডিওলজিস্ট এপয়েন্টেড করতে পারেন। সো দ্যাট, আমাদের জেলা লেভেলে প্রাথমিক ভালো ট্রিটমেন্টটা হার্ট অ্যাটাকের রোগীরা পেতে পারেন।
ডক্টর টিভি: জ্বি স্যার, ধন্যবাদ স্যার। স্যার, তাহলে জরুরি বিভাগের ক্ষেত্রে যে প্রশ্নটি আশে, বিভিন্ন স্তরের যে স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানগুলো আছে জেলা কিংবা উপজেলা লেভেলের এই সব বিভাগীয় পর্যায়ে হার্ট অ্যাটাকের জন্য চিকিৎসা ক্ষেত্রে কি সব ধরণের সুযোগ সুবিধা পর্যাপ্ত আছে কিনা বা কিভাবে দেয়া হয়? এ ব্যপারে একটু বিস্তারিত জানতে চাই স্যার।
ডা. মোহাম্মদ সেলিম মাহমুদ: একেবারে আমি যদি যেটা সত্য সেটি বলি, বাংলাদেশের হেলথ সিস্টেমে আমাদের উপজেলা কিংবা জেলা পর্যায়ে আমাদের এক নাম্বার যে ট্রিটমেন্ট হার্ট অ্যাটাকের পরে যেটা সারা বিশ্বে অমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন, আমেরিকান কলেজ অব কার্ডিওলজি, ইউরোপিয়ান সোসাইটি অব কার্ডিওলজি, দ্বারা স্বীকৃত যে চিকিৎসাটা সবোর্ত্তম। যে চিকিৎসাটা আমরা দিতে পারলে রোগীর হার্টের মাসল ডেমেজ হবে না। রোগীর হার্টের একেবারে এস লাইক এস বিফোর থাকবে, মিনিমাম ডেমেজ হতে পারে। সেই ট্রিটমেন্টটা কিন্তু আমাদের দেশের জেলা লেভেল, উপজেলা লেভেল, এমনকি বিভাগীয় পর্যায়েও এমন চিকিৎসা দেয়া সম্ভব নয়। এবং সারা দেশে আমাদের শুধুমাত্র ঐ প্রাথমিক বা উপজেলা লেভেলে লোডিং ডোস যে ওষুধটার কথা বললাম, রক্ত পাতলা করার ওটা আর এটাকে রোগী গুলোকে আমরা যদি ভাগ করে নেই, যে স্টাবল পেশেন্ট । মানে যার ব্লাড পেশার নরমাল আছে, হার্ট অ্যাটাক হওয়া সত্ত্বেও এবং যার কাশি নেই এবং যার শ্বাস কষ্ট নেই এমন কেইস কেবল পেশেন্ট যাদের মৃত্যু ঝুঁকি কম এইরকম রোগীরা সেই হাসপাতালে ভর্তি থেকে রক্ত পাতলা করার ইনজেকশন পাঁচ দিন পেতে পারে। কিন্তু সব রোগী তো আর এরকম থাকে না। বেশির ভাগ হার্টের রোগীর হঠাৎ মৃত্যু হতে পারে। সেই রোগী গুলোর ক্ষেত্রে যে বেস্ট ট্রিটমেন্ট অপশন যে ট্রিটমেন্ট টা হচ্ছে ইমিডিয়েটলি রোগীকে এনজিওগ্রামি করে বন্ধ হয়ে যাওয়া রক্ত নালীটাকে খুলে দিতে হবে। এটাকে সার্ভ করে একটা রিং বসিয়ে দিতে হবে। এটাই হচ্ছে নাম্বার ওয়ান ট্রিটমেন্ট ইন দ্যা ওয়ার্ল্ড।
হার্ট অ্যাটাক নিয়ে ডক্টর টিভির পুরো অনুষ্ঠানটি ভিডিওসহ দেখতে নিচের লিংকে ক্লিক করুন।