পিটিয়ে ইন্টার্ন চিকিৎসকের হাত-পা ভাঙল সহপাঠীরা
বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে আহতের বড় ভাই জাহাঙ্গীর আলম যশোর কোতোয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগ দেন
যশোর মেডিকেল কলেজে এক ইন্টার্ন চিকিৎসককে পিটিয়ে দুই পা ও এক হাত ভেঙে দিয়েছে তার সহপাঠীরা। গত ৩১ জানুয়ারি রাতে কলেজ ছাত্রবাসের ১০৫ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।
আহত ইন্টার্ন চিকিৎসক জাকির হোসেনকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও বিষয়টি গোপন রাখা হয়। বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে আহতের বড় ভাই জাহাঙ্গীর আলম যশোর কোতোয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। এতে বিষয়টি জানাজানি হয়।
যশোর পুলিশের মুখপাত্র ওসি রুপন কুমার সরকার বলেন, এ ঘটনায় অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ঘটনায় মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করে তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলেছে।
রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার হরিশ্বর গ্রামের মৃত সুরুজ জামানের ছেলে আহত জাকির হোসেনের অভিযোগ, ইন্টার্ন চিকিৎসক মেহেদী হাসান লিয়ন, শামীম হাসান, আকাশ, আব্দুর রহমান তানিমসহ আরও তিন-চারজন ছাত্রবাসের ১০৪ নম্বর কক্ষে প্রতিদিন মাদকের আড্ডা বসান। রাতভর চিৎকার-চেঁচামেচি করেন। ওই কক্ষের পাশেই তার কক্ষ। এ কারণে পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটে। ফলে তিনি প্রতিবাদ জানান। এর জেরে মঙ্গলবার রাত পৌনে ৯টায় তারা তার কক্ষে এসে হকিস্টিক ও জিআই পাইপ দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে জখম করে। হামলাকারীরা তার নগদ অর্থ ও মোটরসাইকেল নিয়ে যায়।
অপর একটি সূত্র জানায়, হামলাকারীদের অধিকাংশই ইন্টার্ন চিকিৎসক। তাদের লেখাপড়া শেষ হয়েছে দুই বছর আগেই। তারপরও ছাত্রলীগের ছত্রছায়ায় তারা ছাত্রবাসে সিট নিয়ে থাকছে।
আহতের বড় ভাই জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ভাইকে পড়াশোনা করার জন্য তিনি যশোর মেডিকেলে ভর্তি করিয়েছিলেন। এখন হামলার শিকার হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার দুই পা ও এক হাত হকিস্টিক দিয়ে ভেঙে দেওয়া হয়েছে। শরীরের বিভিন্ন জায়গায় মারধরের ছাপ। তিনি সঠিক বিচার চান।
এ ঘটনায় কলেজ প্রশাসন সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক এন কে আলমকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। আগামী ৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন কলেজের অধ্যক্ষ মহিদুর রহমান।
তিনি জানান, আহত জাকিরকে দেখতে তিনি হাসপাতালে গিয়েছিলেন। তার হাত ও পা ভেঙেছে। বুকের হাড়েও আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অধ্যক্ষ স্বীকার করেন, পড়াশোনা শেষ করেও অনেকে ছাত্রাবাসে আছেন। রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থাকায় তাদের নামিয়ে দেওয়া যায় না।
তদন্ত কমিটির সদস্য ও সহকারী হোস্টেল সুপার ডা. ফয়সাল কাদির শাওন জানান, ইতোমধ্যে তারা তদন্ত শুরু করেছেন। দ্রুতই তদন্ত রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে।