উত্তরবঙ্গের স্বাস্থ্য শিক্ষার পথিকৃৎ: দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ
১৯৯২ সালে দিনাজপুরে মেডিকেল কলেজ স্থাপিত হয়
বাংলাদেশ সরকারি মেডিকেল কলেজগুলোর মধ্যে এর অবস্থান অন্যতম এবং রংপুর বিভাগের দ্বিতীয় সরকারি মেডিকেল কলেজ। যুগ যুগ ধরে মেধাবী শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখরিত এই কলেজ প্রাঙ্গন। উত্তরবঙ্গের চিকিৎসা সেবার অন্যতম আশ্রয়।
সংক্ষিপ্ত নামঃ মারমেক(MARMC) দিনাজপুর।
সূচনালগ্নের ইতিহাস ও সুদীর্ঘ পথচলা:
১৯৯২ সালে বাংলাদেশ সরকার দেশে উন্নত চিকিৎসা সেবা প্রদানের জন্য দিনাজপুরে মেডিকেল কলেজ স্থাপন করে।
৫০ জন শিক্ষার্থীর ভর্তি কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে কলেজটির জন্ম হয়। বর্তমানে প্রতিবছর ১৮০ জন করে শিক্ষার্থী ভর্তি হয়। এছাড়াও ফরেন কোটায় বিদেশী শিক্ষার্থী ভর্তি হয়। বর্তমানে মোট শিক্ষার্থী রয়েছে ৮০০ এর বেশি। স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীদের জন্যও বেশ কিছু কোর্সচালু আছে(D Ortho, D Card, DGO, DA, Lab Medicine) বিসিপিএস কর্তৃক অনুমোদিত হওয়ায় এখানে এফ.সি.পি.এস ট্রেনিং করানো হয়।
বর্তমান অধ্যক্ষ: প্রফেসর ডা. সৈয়দ নাদির হোসেন
উপাধ্যক্ষ: ডা. মোমেনুল হক
প্রাতিষ্ঠানিক অধিভুক্তি: রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়
অবকাঠামো: একাডেমিক ভবনটি তিনটি ব্লকে বিভক্ত। প্রতিটি ব্লক পাঁচতলা বিশিষ্ট। চারটি বিশাল লেকচার গ্যালারি, এর মধ্যে একটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত, সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত সুবিশাল লাইব্রেরী, কলেজ ক্যান্টিন, প্যাথলজি, মাইক্রোবায়োলজি ল্যাব। এছাড়াও বাংলাদেশের দ্বিতীয় বোনস লাইব্রেরি ‘অস্টিওল্যাব’ এখানে প্রতিষ্ঠিত। দক্ষ সেবিকা তৈরির জন্য কলেজটির আওতাধীন রয়েছে দিনাজপুর নার্সিং ইনস্টিটিউট।
শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে ডা. ইউসুফ আলী ছাত্রাবাস ও ডা. তৈয়বুর রহমান ছাত্রীনিবাস। প্রতিটি ছাত্রাবাসেই মুসলিম এবং হিন্দু ছাত্রছাত্রীদের জন্য ভিন্ন ভিন্ন প্রেয়ার রুম আছে।
এছাড়াও ক্যাম্পাসের ভিতরে আছে ‘এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ’। শিক্ষার্থীদের শরীর চর্চার জন্য রয়েছে বৃহৎ জিমনিশিয়াম। শিক্ষার্থীদের খেলাধুলার জন্য কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ। ব্যাডমিন্টন ও ভলিবল কোর্ট এছাড়াও বিভিন্ন ইনডোর গেমস সুবিধা। এছাড়াও মনোমুগ্ধকর ফুলের বাগান ‘আনন্দ সরোবর’ যেন মারমেকের স্বর্গরাজ্য।
সাংষ্কিৃতিক কার্যক্রম: সারাবছরই এখানে বিভিন্ন কালচারাল প্রোগ্রাম হয়ে থাকে। বিজয় দিবস উদযাপনের পাশাপাশি স্বাধীনতা দিবস, ২১শে ফেব্রুয়ারী মহান শহীদ দিবস, বসন্ত বরণ উৎসব, পহেলা বৈশাখ উদযাপন করা হয়। প্রতিবছরই ছাত্রছাত্রীদের অংশগ্রহণে ফুটবল, ক্রিকেট ও ব্যাডমিন্টন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।
মারমেক দিবস: ১০ আগস্ট শোকের মাস হওয়ায় আমরা এই দিনটি উদযাপন না করে ১৫ই আগষ্ট নিহত বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানানো হয়।
আর আমাদের ক্যাম্পাস এতো সুন্দর ভাবে সাজানো, গোছানো, শৃঙ্খলতার পিছনে যে মানুষটা সবচেয়ে বেশি ভূমিকা পালন করেছেন তিনি হলেন দিনাজপুরের মাটি ও মানুষের নেতা, মরহুম এম আব্দুর রহিম চাচার ছেলে, মহান জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম এমপির তত্ত্বাবধানে।
করোনা মহামারী কাটিয়ে প্রাণের MARMC ক্যাম্পাস আবার ভবিষ্যৎ ডাক্তারদের পদচারণায় মুখোরিত হবে এই আশা করি।
তথ্য: উইকিপিডিয়া
ছবি: সংগৃহীত
লেখা: Beauty of MARMC Campus
কার্টেসি : নাজমুল ইসলাম শিমুল
শিক্ষার্থী, এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ, দিনাজপুর।