যেন যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকায় চিকিৎসা দিচ্ছি
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মোমের আলোয় কাজ করছেন ডা. সাঈদ আল মনসুর ইনাম
চৌদ্দগ্রাম হাসপাতাল ডুবে ছিল ২ দিন। একেবারে কিছুই নাই। যত ডকুমেন্টস, ফার্নিচার, বিদ্যুতের লাইন, আইপিএস, এক্স রে মেশিন, সার্জিক্যাল জিনিসপত্র যা বলব লিস্ট শুধু লম্বা হবে। হাসপাতাল অন্তত ৭ফুট পানির নিচে। এরপরে সব পানি নেমে গেল।
গতকাল সকাল থেকে সবপরিষ্কার করা হল। সকাল থেকে এই মোমের আলোয় চিকিৎসা দিয়েছি। কিছু সময় বাইরে বসে এবং দাড়িয়েও চিকিৎসা দিয়েছি। কারেন্ট নাই, লাইট নাই, ফ্যান নাই আছে শুধু মানুষগুলো। তাই নিয়েই চলছে সেবা কার্যক্রম। একরাত পুরোটা সবাই বসে কাটিয়েছে। একটু রেস্ট নেয়ার রুমেও পানি। বিছানা ভেজা। কিন্তু, টয়লেটে সাপ্লাই পানি নাই। একটু বেশি খারাপ রোগী আসলেই রেফার করে দিতে হয়।
হাসপাতালের মূল গেইটের সামনেই মহাসড়ক। সেখানে আবার ২ সারিতে লরিগুলো দাঁড়ানো। ফেনীর রাস্তা ভেংগে যাওয়ায় ৪৫ কিলো জ্যামে দাঁড়িয়ে আছে এরা। ২ দিন হল যে গাড়ি যেখানে ছিল সেখানেই আছে। একটা এম্বুলেন্স যে হাসপাতালে ঢুকবে তার অবস্থা নাই। অপর পাশের রাস্তা দিয়ে রোগী আসে। কোলে করে অনেকটা পথ নিয়ে আসে আত্মীয়স্বজনরা। কাউকে রেফার করলে একইভাবে নিয়ে যায়। অনেকেই আসে বুক সমান পানি পার হয়ে।
যেন এক যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকায় চিকিৎসা দিচ্ছি। কত মিনিমাম দিয়ে কত ম্যাক্সিমাম নিশ্চিত করা যায় তার প্রচেষ্টা