‘বাংলাদেশ ওরাল হাইজিন ডে’ এর ইতিহাস ও তাৎপর্য
”বাংলাদেশ ওরাল হাইজিন ডে” প্রতিবছরের ২০ শে নভেম্বর পালন করা হয় (ইনসেটে ডা. অনুপম পোদ্দার)
”বাংলাদেশ ওরাল হাইজিন ডে” প্রতিবছরের ২০ শে নভেম্বর পালন করা হয়। বাংলাদেশের প্রথম মাড়ির রোগ বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ পেরিও ডন্টোলজি সোসাইটির প্রথম সভাপতি অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম জোয়াদ্দার স্যার এর জন্মদিনকে স্মরণে রাখার জন্য প্রতি বছর এই দিবসকে বাংলাদেশ পেরিও ডন্টোলজি সোসাইটি ২০২১ সাল থেকে বাংলাদেশ ওরাল হাইজিন ডে” হিসাবে পালন করে আসছে।
ইতিহাসঃ
সারা বিশ্বের অনেক দেশেই ওরাল হাইজিন ডে পালন করা হয়ে থাকে। সেই হিসাবে ২০২১ সালে আমি যখন ঢাকা ডেন্টাল কলেজের পেরিও ডন্টোলজি এন্ড ওরাল প্যাথলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান। তখন বাংলাদেশের প্রথম পেরিও ডেন্টিষ্ট অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম জোয়াদ্দার স্যার এর কাছে তার জন্মদিনকে বাংলাদেশ ওরাল হাইজিন ডে হিসাবে পালন করার প্রস্তাব দিলে তিনি তা গ্রহণ করেন। পরবর্তিতে আমি বাংলাদেশ পেরিও ডন্টোলজি সোসাইটির তখনকার মহাসচিব ও অধ্যাপক ডা. মো. জাহিদুর রহমান এর কাছে এই সম্পর্কিত প্রস্তাব দিলে বাংলাদেশ পেরিও ডন্টোলজি সোসাইটি ২০ শে নভেম্বর প্রয়াত অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম জোয়াদ্দার স্যার এর জন্মদিনকে বাংলাদেশ ওরাল হাইজিন ডে হিসাবে ঘোষণা করেন। ২০২১ সালে প্রথমে ঢাকা ডেন্টাল কলেজের পেরিও ডন্টোলজি এন্ড ওরাল প্যাথলজি বিভাগ সহ কিছু ডেন্টাল কলেজ বা ইউনিটে তা একযোগে পালন করা হয়। গত বছর ২০২২ সালে ২৫-২৬ টি ডেন্টাল কলেজ বা ইউনিটে দিবসটি একযোগে পালন করা হয়।
দিবসের গুরুত্বঃ
(১) জনগণের মধ্যে মুখ ও দাঁতের রোগ সমুহ সম্পর্কে ধারণা দেওয়া।
(২) জনসচেতনতা বৃদ্ধি অর্থাৎ কিভাবে মুখ ও দাঁতের সঠিক পরিচর্যাও মাধ্যমে মুখের স্বাস্থ্য ভাল রাখা যায়- সে সম্পর্কে গুরুত্ব আরোপ করা।
(৩) ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে মাড়ির রোগ ও তার স্থানীয় ও শারীরিক জটিলতা সম্পর্কে ধারণা দেওয়া।
(৪) ৬ মাস অন্তর দাঁত ও মাড়ির চেক আাপের গুরুত্ব তুলে ধরা।
জনগণের মাঝে যে সব বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করা হয়ঃ
(১) কি কি মাধ্যমে দন্ত পরিচর্যা করা হয়
(২) দাঁত ব্রাশিং এবং ফ্লসিং এর সঠিক পদ্ধতি।
(৩) মুখ ও দাঁতের বিষয়ক মানুষের প্রচলিত ধারণা ও বাস্তবতা বিষয়ে আলোচনা।
(৪) যে সমস্ত বদ-অভ্যাস মুখ ও দাতের ক্ষতি করে সে সম্পর্কে জ্ঞান দান করা।
(৫) মুখ ও দাঁতের জন্য প্রয়োজনীয়,স্বাস্থ্যকর ও ক্ষতিকর খাবার বিষয়ে জনগণকে ধারণা দেওয়া।
মুখ ও দাতের রোগসমুহঃ
(১) দন্ত ক্ষয় রোগ
(২) মাড়ির প্রদাহ ও পায়েরিয়া
(৩) মুখের ক্যান্সার
শরীরিক জটিলতাঃ
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা যায়, মাড়ির রোগের জটিলতায় নিম্নোক্ত শারীরিক রোগের সমস্যা দেখা দেয়।
(১) ডায়াবেটিস
(২) হৃদরোগ
(৩) প্রসবকালীন জটিলতা
(৪) স্থুলতা
(৫) ক্যান্সার
(৬) কিডনি রোগ
(৭) মহিলাদের জটিলতা
(৮) অ্যালঝেইমার রোগ
মুখ ও দন্ত রোগের প্রতিরোধে করণীয়ঃ
(১) সকালে খাবারের পর ও রাতে ঘুমানোর আগে ২ বেলা যথানিয়মে ব্রাশ করতে হবে।
(২) প্রতিদিন ১ বেলা (রাতে) যথা নিয়মে ডেন্টাল ফ্লস ব্যবহার করতে হবে।
(৩) ৬ মাস অন্তর দন্ত রোগ বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে চেক আপ করতে হবে।
(৪) বদ অভ্যাস সমুহ দূর করা। যেমন- ধূমপান পান, সুপারী, জর্দা, সাদা পাতা, গুল, এ্যালকোহল পরিহার করা।
(৫) স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে।
(৬) কার্বোনেটেড কোমল পানীয়। (এনার্জি ড্রিংস) খাওয়া পরিহার করতে হবে।
লেখকঃ
ডা. অনুপম পোদ্দার
অধ্যক্ষ
খুলনা ডেন্টাল কলেজ।