বিয়ের আগেই ব্লাড গ্রুপ পরীক্ষা জরুরি
বিয়ের আগেই ব্লাড গ্রুপ পরীক্ষা করা জরুরি (ইনসেটে লেখক)
আমাদের গাইনি এন্ড অবস ডিপার্টমেন্টে কোন রোগী ভর্তির জন্য আসলে রিসিভ করতে গিয়ে শুরুতে আমাদের যা যা দেখতে হয় তার মাঝে একটি হচ্ছে রোগীর ব্লাড কোন গ্রুপের এবং সেটির অফিসিয়ালি কোন ডকুমেন্ট আছে কিনা।
যেহেতু সিজারের জন্য আসা প্রায় রোগীকেই অপারেশনের ধরণ এবং হিমোগ্লোবিনের অবস্থা বিবেচনায় ব্লাড ডোনার অথবা ব্লাড প্রস্তুত রাখতে বলা হয়ে থাকে।
যাইহোক, এ বিষয়ে আমাদের সিএ আপুর কড়া নির্দেশ আছে, রোগী নিজে অথবা রোগীর সাথে থাকা কেউ মুখে ব্লাড গ্রুপ বললেও কোন লিখিত ডকুমেন্ট ছাড়া তা ফাইলে এন্ট্রি না করার জন্য। মনে হতে পারে রোগী তো নিজ মুখেই বলছে লিখলে সমস্যা কী বা গর্ভবতী মহিলার জন্য কেনই বা এত গুরুত্বপূর্ণ।
স্ত্রীর ব্লাড গ্রুপ এবং স্বামীর ব্লাড গ্রুপ একই হলে সমস্যা নেই তবে যদি স্ত্রীর ব্লাড গ্রুপ নেগেটিভ হয় আর স্বামীর যদি পজিটিভ হয়, তাহলে মূলত আমাদের কিছু প্রসিডিউরের প্রস্তুতি নিতে হয়।
এক্ষেত্রে মায়ের নেগেটিভ এবং বাবার পজিটিভ ব্লাড গ্রুপ থেকে জন্ম নেয়া প্রথম বাচ্চার ক্ষেত্রে কোন সমস্যা হয়না। কিন্ত সিজারের সময় পজিটিভ ভ্রূণের রক্ত মায়ের শরীরে প্রবেশ করলে কয়েক মাসের মধ্যেই আর এইচ প্রোটিনের বিরুদ্ধে মায়ের শরীরে এন্টিবডি তৈরি হবে।
এবং মা যখন দ্বিতীয় সন্তান জন্ম দিবেন তখন যদি তার বাচ্চার ব্লাড গ্রুপ পুনরায় পজিটিভ হয়, তাহলে মায়ের শরীরে আগে যে এন্টিবডি তৈরি হয়েছিল, সেটা প্লাসেন্টা ভেদ করে বাচ্চার শরীরে প্রবেশ করে ভ্রূণের লোহিত রক্তকণিকার কোষ ভাঙ্গতে ভূমিকা রাখে। এবং এ সমস্যাকে আরএইচ ইনকমপ্যাটিবিলিটি বলা হয়ে থাকে।
এরফলে দ্বিতীয় বাচ্চার ব্রেন ডেমেজ (কার্নিক্টেরাস), শরীরে পানি জমে ফুলে যাওয়া বাচ্চার জন্ম (হাইড্রপস ফেটালিস) এমন হলে অর্ধেকের বেশি নবজাতকই মারা যায় এছাড়াও বাচ্চা মানসিক সমস্যা, শ্রবণশক্তির সমস্যা, খিঁচুনি ইত্যাদি সমস্যা নিয়ে জন্ম নিতে পারে।
এজন্য সম্ভব হলে বিয়ের আগেই স্বামী-স্ত্রীর ব্লাড গ্রুপ পরীক্ষা করে নেয়া ভাল। যদি কোন কারণে তা সম্ভব না হয় তবে গর্ভবতী হওয়ার পূর্বেই দুইজনের ব্লাড গ্রুপ পরীক্ষা করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন।
লেখক:
ডা. কামরুজ্জামান নাবিল
ইন্টার্ন, বারডেম।
এবং সাবেক শিক্ষার্থী,
ইস্পাহান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ইরান।