বেড না থাকলেও রোগীকে ফিরিয়ে দেয় না মমেকের হৃদরোগ বিভাগ

ডা. মারুফ রায়হান খান
2023-08-19 10:46:30
বেড না থাকলেও রোগীকে ফিরিয়ে দেয় না মমেকের হৃদরোগ বিভাগ

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (ইনসেটে লেখক)

৭২ বেডের হৃদরোগ বিভাগে ময়মনসিংহ এবং এর আশেপাশে ৮টা জেলা থেকে আগত প্রায় ২৫০-৩০০ জন রোগীকে ভর্তি চিকিৎসা দেওয়া হয় প্রতিদিন। বেড না থাকলেও একটা রোগীকেও এখান থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হয় না। সিঁড়ি কোঠা, লিফটের সামনে, গোলচত্ত্বর, ওয়ার্ডের রুমের বাইরে কোথায় না রোগী? হাঁটার জায়গা পর্যন্ত নেই।

সবচেয়ে বিড়ম্বনার নাম ২৫০ জনের সাথে ১৫০০ রোগীর লোক। কেমন হৈচৈ, কেমন সাফোকেশান। অথচ সবাই হার্টের সিরিয়াস রোগী। সবার নিরিবিলি বিশ্রাম প্রয়োজন। কিন্তু কে বোঝাবে কাকে। গার্ড দিয়ে বের করে দিলেও কিছুক্ষণের মধ্যে আবার লুকিয়ে-চুরিয়ে রোগীর বেডে গোল হয়ে বসে পিকনিক করবে। কিন্তু চিকিৎসক-নার্স-লোকবল তো ঐ ৭২ জন হিসেবেই।

তবে আমি যখন ইতোপূর্বে এই বিভাগে কাজ করেছি তখন এই এটেন্ডেন্টসৃষ্ট সমস্যা আরও ভয়াবহ ছিল।

আমাদের অত্যন্ত শ্রদ্ধেয় বিভাগীয় প্রধান Gobinda Paul স্যার দায়িত্ব নেয়ার পর তিনি এ ব্যাপারটি কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছেন। তবে বাঙালি তো এদের নিয়ন্ত্রণ করা খুবই কঠিন!

এখানে সবচেয়ে বেশি যে রোগটি নিয়ে ভর্তি হয় তা হচ্ছে হার্ট এটাক। এমন কোনো পুরুষ রোগী পাওয়া যায় বললেই চলে, না যার হার্ট এটাক হয়েছে অথচ সিগারেট খান না/দীর্ঘসময় ধরে সিগারেট খাননি। এই অঞ্চলের মানুষ কী ভয়াবহ রকমের ধূমপান করে তা বিস্ময়কর। আর গ্রামাঞ্চলে যদিও নারীরা খুব বেশি ধূমপান করেন না, তবে তারা কিন্তু মারাত্নক রকমের প্যাসিভ স্মোকিং-এর শিকার। এবং এটা নিয়ে তারা খুব একটা বিচলিতও নন।

367438519_9723053071101112_1735911066758456610_n

একটা দৃষ্টান্ত পেশ করা যাক। ছবির মানুষটির জন্ম থেকেই হাত-পা এরকম। তিনি হার্ট এটাক নিয়ে আমাদের কাছে এসেছিলেন। স্বভাবতই আমাদের মনে প্রশ্ন এসেছিল উনি সিগারেট খান কি না৷ আবার এও ভাবছিলাম যে এমন হাত দিয়ে নিশ্চয়ই সিগারেট খাওয়া সম্ভব না বা কারও মাথায় আসবে না। কিন্তু অবাক বিষয় হচ্ছে উনি এই হাত দিয়েই নিজেই ম্যাচ জ্বালিয়ে বহু বছর ধরে সিগারেট খেয়ে যাচ্ছেন।

লেখক :

ডা. মারুফ রায়হান খান
এমবিবিএস, বিসিএস (স্বাস্থ্য),
হৃদরোগ বিষয়ে ডি-কার্ড ও এফসিপিএস প্রশিক্ষণরত।


আরও দেখুন: