আমার তো প্রফ, কত পড়া বাকি!
আমার তো প্রফ, কত পড়া বাকি! (ইনসেটে লেখক)
প্রফ শেষ হলো তিন দিন আগে।
ভেবেছিলাম প্রফের পরে শুধু মজা আর মজা। ইচ্ছেমতো ঘুমাবো, ঘুরবো, খাবো, আড্ডা দিবো।
কিন্তু আমার এখনও প্রফের রেশ শেষ হয়নি। আমি এখনও স্বাভাবিক মানুষের মতো ঘুমাতে পারি না। ঘুমালে একটু পর পরই উল্টাপাল্টা স্বপ্ন দেখে জেগে উঠি। মাথার মধ্যে ঘুরতে থাকে ভাইবা তে কি কি ধরেছিল? কোন পারা প্রশ্নের উত্তর আমি দিতে পারিনি। কেন দিতে পারলাম না,কেন ভুলে গেলাম! কোন প্রশ্নের উত্তর জেনেও চুপ করে ছিলাম, সাহস করে কেন বললাম না স্যার এটাই হবে এন্সার। সারাক্ষণই আমার মাথায় এসব চিন্তা ঘুরতে থাকে।
ঘুমের মধ্যে জেগে উঠি, আমার তো প্রফ, কত পড়া বাকি! উঠার পরে বুঝতে পারি প্রফ তো শেষ।
বাসার মানুষের সাথে কথা বলতে গেলেও ভেতর থেকে কোনো উল্লাস আসে না, কারণ আমার মাথায় তো অন্যকিছু ঘুরে।
এ জীবন মানুষের না এ জীবন রোবটের।
সিলেবাসের ভেতর চলতে চলতে আমরা এখন সিলেবাসের মধ্যেই আটকে গেছি।
ঠিকমত খাওয়া ঘুম না হলেও আমাদের সকাল সাড়ে সাতটার ক্লাস মিস নাই, বিকেলের ওয়ার্ড মিস নাই।
টানা ৭/৮ ঘন্টা ক্লাস করে বাসায় এসে গরম মেজাজ দেখালেও ওয়ার্ডে গিয়ে ঠিকই বলতে হয়, "আসসালামু আলাইকুম বাবা, আমি একজন মেডিক্যাল স্টুডেন্ট, আপনার কি সমস্যা আমাকে বলেন।"
নিজে না খেলেও রোগীকে বলতে হয় ঠিকমতো খাবেন।
আমাদের সকাল দিন রাতের হিসেব না থাকলেও কয় হাজার পেইজ এক্সামের আগে পড়ে যেতে হবে ওটার হিসেব আমরা ঠিকই রাখি।
আমার জীবনের শান্তি এই সাদা এপ্রোনটার সাথে হারিয়ে গেছে। আমি এতসব কষ্ট করি এই আশায় যে একদিন এই সাদা এপ্রোন আমাকে সব ফিরিয়ে দিবে।
লেখক:
তায়্যিবা মেহজাবিন
সেশন : ২০১৭-১৮
হলি ফ্যামিলি রেডক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ, ঢাকা।