মাতৃদুগ্ধ পানের গুরুত্ব
জীবনমানের উন্নয়নে মাতৃদুগ্ধ পানের গুরুত্ব অপরিসীম (ইনসেটে লেখক)
১লা থেকে ৭ ই আগস্ট বিশ্ব মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহ। আমরা এখন সবাই জানি এবং এটা অনস্বীকার্য যে, শিশুর সঠিক পুষ্টি এবং সুষম মানসিক, শারীরিক বিকাশের জন্য মায়ের বুকের দুধ অপরিহার্য।
উল্লেখ্য, সন্তান জন্মের পর প্রথম যে হলুদাভ আঠালো দুধ নিঃসৃত হয় সেটাকে শালদুধ বলে। আর এই শাল দুধের গুরুত্ব অপরিসীম।
বৈজ্ঞানিক গবেষণায় এটি এখন প্রমাণিত যে মাতৃদুগ্ধের কোন বিকল্প নেই। মায়ের দুধের উপকারিতা স্বল্প কথায় বর্ণনা করে শেষ করা সম্ভব নয়। এর মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য-
১. মাতৃদুগ্ধের প্রায় ২০০ প্রয়োজনে উপাদান রয়েছে যা কোন প্রকার ফর্মুলাতে নাই।
২. নবজাতকের জন্য প্রথম টিকাও বলা যেতে পারে , যেহেতু শিশুর জন্য প্রয়োজনীয় রোগ প্রতিরোধক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান এতে পাওয়া যায়।
৩. বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গেছে যেসব শিশু জন্মের প্রথম ছয় মাস শুধুমাত্র মাতৃদুগ্ধ পান করে তাদের মৃত্যুর হার যে সকল শিশুর মাতৃদুগ্ধ পান করে না তাদের অপেক্ষা অনেক কম।
৪. বিভিন্ন রকম ব্যাকটেরিয়া ভাইরাসজনিত রোগ যেমন নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া এছাড়া এজমা এলার্জিতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কম।
৫. শিশুর সঠিক বুদ্ধিমত্তার বিকাশে মাতৃদুগ্ধের গুরুত্ব অপরিসীম।
৬. যেসব শিশু মাতৃদুগ্ধ পান করে দেখা গেছে তাদের ডায়াবেটিস, স্থূলতা ও ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কম।
৭. মাতৃদুগ্ধ পানে মা ও শিশুর মধ্যে বন্ধন আরো দৃঢ় হয়।
৮. ফর্মুলা খাবার পরিবারের জন্য খরচ সাপেক্ষ, বারবার তৈরি করতে হয়। এক্ষেত্রে মাতৃদুগ্ধ শিশুর জন্য মহান আল্লাহতালার এক নেয়ামত এবং বারবার তৈরি করার ঝামেলা নেই।
৯. মাতৃদুগ্ধ শুধুমাত্র শিশুর জন্য যে উপকারী এমনটি নয় মায়ের স্বাস্থ্যের জন্য তার উপকারিতা অপরিসীম।
সুতরাং একটি ক্ষুধা মুক্ত দারিদ্রমুক্ত সমাজ গঠনে ও সুস্বাস্থ্য, জীবনমানের উন্নয়নে মাতৃদুগ্ধ পানের গুরুত্ব অপরিসীম।
লেখক :
ডা. ইসমাত মান্নান
এফসিপিএস (অবস এন্ড গাইনি)
এমসিপিএস (অবস এন্ড গাইনি)
ইনডোর মেডিকেল অফিসার (অবস এন্ড গাইনি)
শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা।