চিকিৎসকদের ভাতা মাসের পর মাস বকেয়া থাকবে কেন?
নন-রেসিডেন্ট চিকিৎসকদের বকেয়া ভাতার টাকার চেক তুলে দিচ্ছেন উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ (ইনসেটে লেখক)
একটি সমস্যার হ্যাপি এন্ডিং হলো আজ। আমি আজ নন রেসিডেন্টদের প্রধান সমন্বয়কারী হিসেবে সকলের সামনে বলে এসেছি-
একজন মেডিকেল স্টুডেন্ট ৫ বছর এম.বি.বি.এস. কোর্স করার পরে ১৬,০০০ টাকা বেতনে ইন্টার্নশিপ করে। আউটডোর ওয়ার্ড ইনডোরে ডে নাইট ডিউটি করে।
এরপর যখন তার চাকুরি করার সময়, BMDC যখন তাকে লাইসেন্স দিয়ে দিল চেম্বার প্র্যাক্টিস করার, তখন সে এক বছর পড়াশোনা করে পরবর্তী বছর প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা দিয়ে এই কোর্সে আসে। যেখানে শর্ত হিসাবে লেখা থাকে অন্য কোন চাকুরি করা যাবে না, কোথাও চেম্বার করা যাবে না বিনিময়ে মাত্র বিশ হাজার টাকা মাসিক ভাতা দেওয়া হবে। এর বিনিময়ে আউটডোরে রোগী দেখতে হয়, ইনডোরে ডিউটি করতে হয়। শুক্রবার, শনিবার সহ রাতে দিনে রোস্টার ডিউটি করতে হয়।
মিডিয়ার যারা আছেন তারা ক্লিয়ার করেন এটা কি বাংলা, ইংরেজি, উর্দু, ফার্সির মত ৪ বছরের পরের এক বছরের মাস্টার্স। এত ডিউটি করার পর যে বিল বেতনের মত প্রতিমাসে পাঠানো হলে এবং প্রতি মাসে একাউন্টে আসার কথা থাকলে আসবে না কেন? একটা মানুষের বেতন মাসের পর মাস, বছর বকেয়া থাকবে কেন, সে চলবে কিভাবে?
আমি ৩৬ কোটি টাকা ফোকাসে এনেছিলাম। আজ সে টাকা আমরা পাচ্ছি। ভিসি স্যারকে বলতে চাই, আপনি নিজে দোষ নিবেন কেন। এই টাকা তো মন্ত্রণালয় আপনার কাছে চেক দিয়ে প্রমাণ করল- তারা টাকা এতদিন দেয়নি। এই দায় তো তাদের। আপনি তো আমাদের প্রতিপক্ষ নন।
এই যে আজকে পেলাম। সামনের অর্থবছর থেকে আইবাসে সবার বিসিএসের মত কোড করে অনলাইন করে দেন। সবাই অনলাইনে বিল সাবমিট করবে। প্রতি মাসে একাউন্টে পেয়ে যাবে। আমার কোর্স শেষ হয়ে যাচ্ছে। আমরা চলে যাচ্ছি। পরের যারা আছে তারা থাকবে। তারা কষ্টে থাকুক আমি চাই না। আপনিও চাইবেন না জানি। আমরা অকৃতজ্ঞ নই।
জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাদের এই বিশ্ববিদ্যালয় দিয়েছেন উচ্চতর ডিগ্রী করার জন্য। নন রেসিডেন্সি ভাতা ছিল না, বর্তমান ভিসি শারফুদ্দিন আহমেদ স্যার চালু করেছেন। আমরা কৃতজ্ঞতা জানাই। ভাতা বৃদ্ধি না হওয়া, ভাতা বিলম্বে না আসা এর জন্য তো আপনি দায়ী না। আপনি আমাদের কাতারে আসুন। জননেত্রী শেখ হাসিনার অর্জনকে বিতর্কিত করার সুযোগ- যাদের কারণে ভাতা বকেয়া থাকে তারা সৃষ্টি করে। এই সুযোগ তাদের দিবেন না। আপনি আমাদের প্রতিপক্ষ না, আমরাও আপনার প্রতিপক্ষ না। সবাই ভালো থাকবেন। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।
এরপর ভিসি স্যার আবেগের সাথে বলেন, আমি প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাবো। তারপর আমাদের এই প্রতীকী চেক হস্তান্তর করা হয়। অলরেডি সবার একাউন্টে টাকাও চলে এসেছে। একটা সমস্যার হ্যাপি এন্ডিং হলো। সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আমার পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা।
আমার কোর্স শেষ। এখন যারা আছেন- আপনারা পুরো দাবী পূরণ করে ঘরে ফিরবেন। এই শুভ কামনা রইল।