কামরাঙা খেলে কি কিডনি নষ্ট হয়?
কিডনির সমস্যা না থাকলে অল্প করে খাওয়া যাবে কামরাঙা
কামরাঙা কাঁচা, পাকা উভয় অবস্থায় খাওয়া যায়। এই ফলের নানা ধরনের পুষ্টিগুণ রয়েছে। ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়ামের মতো উপকারী নানা উপাদান রয়েছে এই ফলে। কিন্তু কারও কারও জন্য এই কামরাঙা বিপদ ডেকে আনতে পারে।
কী পরিমাণে কামরাঙা খাওয়া নিরাপদ
যাঁদের কিডনি সুস্থ, কামরাঙা খেলে তাঁদের কোনো ক্ষতি হয় না। দিনে ১-২টা কামরাঙা খেলেও তেমন সমস্যা হবে না। তবে অত্যধিক পরিমাণে অথবা নির্দিষ্ট পরিমাণে অনেক দিন কামরাঙা খেলে ক্ষতির কারণ হতে পারে। বিশেষ করে, কামরাঙা ফলের রস সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে।
কামরাঙা কী ক্ষতি করে
অতিরিক্ত কামরাঙা খেলে প্রধানত কিডনিতে ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে। কিডনির পাশাপাশি স্নায়ুতন্ত্রের আক্রমণের আশঙ্কাও রয়েছে।
কামরাঙার অন্যতম একটি উপাদান হলো অক্সালিক অ্যাসিড। কিডনি নষ্টের প্রধান কারণ কামরাঙায় থাকা অক্সালেট ও নিউরোটক্সিন। ১০০ মিলিলিটার কামরাঙার জুসে ০.৫০ গ্রাম অক্সালিক অ্যাসিড রয়েছে। তাই অত্যধিক সেবনে অতিমাত্রায় অক্সালিক অ্যাসিড জমে গিয়ে অক্সালেট পাথর হয়ে কিডনি বিকল করে দিতে পারে। তবে খালি পেটে কামরাঙা খেলে ক্ষতির আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি।
যাঁদের কিডনি দুর্বল তাঁরা এই মারাত্মক নিউরোটক্সিনকে শরীর থেকে বের করে দিতে পারে না। তখন এটি শরীরের বিভিন্ন অংশ বিশেষ করে ব্রেন এবং নার্ভাস সিস্টেমের ওপর মারাত্মক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। ফলে মাথা ঘোরা, জ্ঞান হারানো, মানসিক ভারসাম্যহীনতা, এমনকি খিঁচুনি পর্যন্ত হতে পারে।
কাদের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি?
যাঁদের আগে থেকেই কিডনি রোগ, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ আছে। শারীরিক স্থূলতা, কিডনিতে পাথর থাকার ইতিহাস, ডায়ালিসিসের রোগী, অন্তঃসত্ত্বা নারীর এই ফল না খাওয়াই উচিত।
জটিলতা প্রতিরোধে করণীয়
১. কিডনির সমস্যা না থাকলে অল্প করে কামরাঙা খাওয়া যাবে।
২. কাঁচা বা টক কামরাঙার রস বেশি ক্ষতিকর, তাই পরিহার করুন।
৩. কিডনি রোগ, ডায়াবেটিসসহ অন্যান্য দীর্ঘমেয়াদি রোগ থাকলে ফলটি পরিহার করুন।
৪. গর্ভবতী নারীরা কামরাঙা পরিহার করুন। এই ফল খেলে গর্ভের শিশুর ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
ডা. নওসাবাহ্ নূর
মেডিসিন বিশেষজ্ঞ,
পপুলার মেডিকেল কলেজ