অনেক বড় একটি কাজ হাতে নিয়েছি

অধ্যাপক ডা. এস এম মোস্তফা জামান :
2023-03-29 11:49:23
অনেক বড় একটি কাজ হাতে নিয়েছি

অধ্যাপক ডা. এস এম মোস্তফা জামান এবং অধ্যাপক জি এম ফারুক

হৃদরোগ চিকিৎসার পরীক্ষা নিরীক্ষার অন্যতম একটি পরীক্ষার নাম করোনারী অ্যান্জিওগ্রাম। করোনারী ধমনীতে চর্বি জমে রক্তপ্রবাহে বাঁধা সৃষ্টি হলে অথবা ব্লক নির্ণয়ে করোনারী অ্যান্জিওগ্রাম পরীক্ষার মাধ্যমে শতকরা একশত ভাগ রোগ নির্নয় করা যায়। এটি গোল্ড স্ট্যান্ডার্ড পরীক্ষা।

বর্তমানে রোগীদের কাগজে রিপোর্ট দেয়ার সঙ্গে একটি কমপ্যাক্ট ডিস্ক ( সিডি) দেয়া হয় যাতে পরীক্ষার ব্লকের পুরো ভিডিও চিত্র সংরক্ষিত থাকে। রোগী ইচ্ছে করলে অন্যত্র দেখাতে পারেন। কয়েক বছর আগেও ভিডিও ক্যাসেট দেয়া হতো। বাংলাদেশে যখন প্রথম করোনারী অ্যান্জিওগ্রাম পরীক্ষা শুরু হয়েছিলো তখন সেলুলয়েড ফিতায় বা করোনারী অ্যান্জিওগ্রাম ফিল্মে রেকর্ড করা হতো তবে তা রোগীদের দেয়া হতো না। 

ছবিতে সেই সময়কার অ্যান্জিও ফিল্ম হাতে আমি অধ্যাপক ডা. এস এম মোস্তফা জামান এবং অধ্যাপক জি এম ফারুক।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের হৃদরোগ চিকিৎসা সুবিধা আজকের অবস্থানে এসেছে অনেক গুনী চিকিৎসকদের অক্লান্ত পরিশ্রমে। প্রত্যেক পেশাজীবির জন্য তার পেশার ইতিহাস জানা জরুরী। এর দুটি সুবিধা রয়েছে। তিনি তার পেশার ঐতিহ্য জানেন। সেই ঐতিহ্যের মাধ্যমে নতুন ভাবনা ও সৃষ্টি নির্মাণ সম্ভব। এছাড়াও, যে মহাপুরুষদের অবদানে এই পেশাটি সমৃদ্ধ হয়েছে, তাদের বিস্মৃতি থেকে রক্ষা করা যেতে পারে। তাদের জন্য পরবর্তী প্রজন্মের শ্রদ্ধাবোধ তৈরি হয়। ইতিপূর্বে আমি আমার “চিকিৎসা বিজ্ঞানের আদিকথা” বইটিতে বিশ্বের প্রেক্ষাপটকে গুরুত্ব দিয়েছিলাম।

স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের হৃদরোগের ইতিহাসের পরতে পরতে ঘটনাগুলোকে লিপিবদ্ধ করতে চেষ্টা করছি। এছাড়া অনেক বিদেশী চিকিৎসক বাংলাদেশের হৃদরোগ চিকিৎসার উন্নতিতে ভূমিকা রেখেছেন অথবা অনেক বাংলাদেশী চিকিৎসক যাদের অনেকে সেই সময় বিদেশ থেকে এসে বাংলাদেশের হৃদরোগ চিকিৎসায় প্রযুক্তি অথবা অন্যভাবে সাহায্য করেছিলেন তাদের অনেকের তথ্য আমার প্রয়োজন।

এই মহৎ কাজকে সামনে রেখে বাংলাদেশ কার্ডিওভাসকুলার রিসার্চ ফাউন্ডেশন এর উদ্যোগে একটি জুম মিটিং করেছিলাম ৬ আগস্ট ২০২১ সালে। পাঁচ ঘন্টা ব্যাপি সেই জুম মিটিংএ এসেছিলেন বাংলাদেশের সকল গুণী হৃদরোগ বিশেষজ্ঞগণ যাঁদের হাত ধরে বাংলাদেশে হৃদরোগ চিকিৎসা শুরু হয়েছিলো।

কোভিডকালে সেই মিটিং এ একটি ভিডিওচিত্রের মাধ্যমে অধ্যাপক ডা. শেখ আলী আশরাফ স্যারকে নতুন প্রজন্মের কাছে পরিচয় করে দিয়েছিলাম। অধ্যাপক ডা. শেখ আলী আশরাফ যিনি ১৯৬৭ সালে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে হার্টের ভাল্ভের Mitral Stenosis নামক রোগের চিকিৎসা Closed Mitral commissurotomy ( CMC) প্রথম করেছিলেন মনু মিয়া নামক একজন রোগীর দেহে।

এই তথ্যটি আমাদের সিনিয়র হৃদরোগ বিশেষজ্ঞরা জানতেন, কিন্তু কোনো জার্নাল বা বইয়ে লিপিবদ্ধ নেই। অধ্যাপক ডা. শেখ আলী আশরাফ স্যারের বয়স এখন ৯৯ বছর।

মনু মিয়া ও পরবর্তীতে আরো ৪০ বছর জীবিত ছিলেন সেই অপারেশনের পর। উল্লেখ্য, মনু মিয়ার স্ত্রী গত বছর আমার চেম্বারেও এসেছিলেন।

অনেক বড় একটি কাজ হাতে নিয়েছি। সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। তথ্য দিয়ে সাহায্য করবার জন্য বিনীত অনুরোধ রইলো।

অধ্যাপক ডা. এস এম মোস্তফা জানান
সভাপতি , বাংলাদেশ কার্ডিওভাসকুলার রিসার্চ ফাউন্ডেশন
ফোনঃ০১৭১৬৩০০৪৪৪
ইমেইলঃ mustafazaman44@gmail.com


আরও দেখুন: