স্যার ডাক শোনার তীব্র আকাঙ্ক্ষা!
ডা. মো. হাবিবুল্লাহ তালুকদার রাসকিন
‘স্যার’ ডাক শোনার তীব্র আকাঙ্ক্ষা থাকলে শিক্ষকতা পেশায় যান। বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, স্কুল, মাদ্রাসা, মক্তব, যেখানে পারেন। সরকারি চাকরিতে কেন?
জনগণ আপনার বেতন জোগাবে, আবার স্যারও বলবে কোন যুক্তিতে? ভদ্রতা হিসেবে উভয়ই পরস্পরকে স্যার বা জনাব বলতে পারে। একপাক্ষিক চাওয়াটা অনুচিত। আমরা যারা চিকিৎসক এবং সরকারি চাকরি করি, তাদেরসহ আমার এই মত।
পৃথিবীর অনেক দেশে সরকারি চাকুরেরা নিজেদের প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী তথা জনগণের সেবক মনে করে। আর আমাদের দেশে জনগণকে তাদের চাকর মনে করে!
আমার সরাসরি ছাত্র না, এমন জুনিয়র চিকিৎসকরা আমাকে স্যার ডাকুক, এটাও আমি চাই না। পৃথিবীর অনেক দেশেই সিনিয়র চিকিৎসকদের ডক্টর বা প্রফেসর হিসেবে সম্বোধন করা হয়, স্যার/ম্যাডাম নয়।
অনেককেই দেখেছি এগুলো নিয়ে খুব ক্ষুধার্ত। আমার সমসাময়িক একজন পদধারী চিকিৎসক ও একজন সচিবের সঙ্গে আমার সম্প্রতি এ ধরনের অভিজ্ঞতা হয়েছে। অথচ এ দুজনের সঙ্গে আমার প্রথম পরিচয়ের সময় পদমর্যাদায় আমি সিনিয়র ছিলাম। পরে ‘নানা’ কারণে তারা আমাকে ডিঙিয়ে সামনে এগিয়ে যান। দেখলাম, তাদের ভীষণ শখ, আমার কাছ থেকে ‘স্যার’ ডাক শোনার!
আবার অধিদপ্তরে ডিজি-এডিজি-ডিরেক্টর ও সচিবালয়ে সিনিয়র সচিব, সচিব, অতিরিক্ত সচিব দেখেছি, যারা আমাকে ভাই বলে ডাকতে কুণ্ঠিত হন না। বয়সে অনেক সিনিয়র এমন অনেক চিকিৎসক কিংবা প্রশাসনের কর্মকর্তাকে সম্মান করে স্যার ডাকতে আমার কুণ্ঠা হয় না। এখানে চেয়ার নয়, বয়স এবং ব্যক্তিত্ব মূল ফ্যাক্টর।
এটা আসলে কোনো বিশেষ পেশা বা ক্যাডারের ওপর নির্ভর করে না। ব্যক্তির রুচি ও শিক্ষার ওপর নির্ভর করে।
লেখক: অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুল্লাহ তালুকদার রাসকিন
নির্বাহী পরিচালক, সিসিইপিআর