প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিকিৎসকের ১০ দাবি
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ডা. কামরুল হাসান সোহেলের ১০টি দাবি
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,
আপনার সুদক্ষ পরিচালনা, সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা, সঠিক দিক নির্দেশনা, সুযোগ্য নেতৃত্ব ও সময়োপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে বাংলাদেশ আজ কোভিড মোকাবিলায় বিশ্বের রোল মডেল। কোভিড ভ্যাক্সিনেশন সম্পন্ন মোট জনসংখ্যার দিক থেকে বিশ্বে বাংলাদেশ এর অবস্থা ৭ম। এই কৃতিত্ব আপনার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনাকে অভিনন্দন।
আপনার নেতৃত্বে স্বাস্থ্য খাত এগিয়ে চলেছে দৃপ্ত পদে। আপনার সুদক্ষ পরিচালনা ও সুযোগ্য নেতৃত্বে গত ১৪ বছরে স্বাস্থ্য খাতে বিপ্লব ঘটেছে। গত ১৪ বছরে ২৫০০০ চিকিৎসক নিয়োগ হয়েছে, ৩০০০০ নার্স নিয়োগ হয়েছে, অসংখ্য স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোগত উন্নয়ন হয়েছে। চিকিৎসকদের পদোন্নতির জন্য ডিপিসি করা হয়েছে, ৩১ শয্যা/৫০ শয্যা হাসপাতালগুলোকে পর্যায়ক্রমে ৫০ শয্যা/১০০ শয্যায় উন্নীত করা হয়েছে। স্বাস্থ্য খাতে এসেছে ঈর্ষণীয় সাফল্য, জাতীয় টিকাদান কার্যক্রমে ব্যাপক সাফল্যের জন্য ভ্যাক্সিন হিরো এওয়ার্ড পেয়েছে বাংলাদেশ। শিশু মৃত্যু হার ৫০% হ্রাস করতে পারার স্বীকৃতি স্বরুপ পেয়েছে এমডিজি এওয়ার্ড।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তৃণমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে আপনি কমিউনিটি ক্লিনিক চালু করেছেন, এই কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার(CHCP) রা তৃণমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে যাচ্ছে।
বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাপনাকে যুগোপযোগী ও আরো জনমুখী করার জন্য নিম্নে উল্লেখিত পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করা হলে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী আরো কার্যকর স্বাস্থ্য সেবা পাবে।
(১) জনবল কাঠামোর নব রূপায়নঃ স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে যুগোপযোগী ও বাস্তবতার নিরীখে জনবল কাঠামো তৈরি করতে হবে, নব নব পদ সৃজন করতে হবে।
(২) ৩য় এবং ৪র্থ শ্রেণীর জনবল নিয়োগঃ প্রতিটি হাসপাতালে ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণীর জনবলের চরম সংকট বিরাজমান এই সংকট মোকাবিলায় দ্রুততম সময়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন করতে হবে।
(৩) নিরাপদ কর্মস্থল : জনমুখী স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে সেবা বান্ধব হাসপাতালের নিমিত্তে সশস্ত্র আনসার নিয়োগ পূর্বক সবার জন্য নিরাপদ কর্মস্থল গড়ে তুলতে হবে।
(৪) চিকিৎসক সুরক্ষা আইন এর দ্রুত বাস্তবায়ন হলে চিকিৎসক সহ সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।
(৫) চিকিৎসক, সিনিয়র স্টাফ নার্স এবং ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রয়েছে তীব্র আবসন সংকট, আবাসন সংকটের সমাধান করতে হবে।
(৬) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অবকাঠামোর উন্নয়নঃ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নির্মাণে অবকাঠামোগত দুর্বলতা রয়েছে, নকশায় ত্রুটি রয়েছে। ৩১/৫০ শয্যা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ৫০/১০০ শয্যায় উন্নীতকরণের নকশা/ডিজাইন করার সময় যেই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কাজ হবে সেই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইউএইচএফপিও কে কমিটিতে রাখা উচিত তাহলে সমন্বিত অবকাঠামোগত উন্নয়ন হবে
(৭) সর্বোচ্চ পদের সুযোগ সৃষ্টিঃ মাঠ পর্যায়ে কর্মরত ইউএইচএএফপিও গণকে সর্বোচ্চ পদে (গ্রেড-০১) এ আসীনের সুযোগ সৃষ্টিতে সোপান নিশ্চিত করতে উদ্যোগ গ্রহণ।
(৮) মন্ত্রণালয়ের সংরক্ষিত পদ নিশ্চিত করা : মাঠ প্রশাসন থেকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পদের নির্ধারিত ২৫% কোটা নিশ্চিত করতে উদ্যোগ গ্রহণ।
(৯) নিয়মিত পদোন্নতি এবং ব্যাচ ভিত্তিক পদোন্নতিঃ স্বাস্থ্য ক্যাডারে নিয়মিত পদোন্নতি এবং ব্যাচ ভিত্তিক পদোন্নতি সুনিশ্চিত করতে উদ্যোগ গ্রহণ।
(১০) জরুরি বাজেট বরাদ্দ : আপদকালীন সময়ে নিরবিচ্ছিন্ন স্বাস্থ্য সেবা প্রদানে নিয়মিত জরুরী বাজেট কোডের মাধ্যমে বাজেট বরাদ্দ নিশ্চিত করতে উদ্যোগ গ্রহণ।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনার নেতৃত্বে আমরা এমডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করেছিলাম ঠিক তেমনি ভাবে আমরা আপনার নেতৃত্বে এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা ও অর্জন করব ইনশাআল্লাহ।
বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশে সবার স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ।