যে ডাক্তার রোগীর জন্য রক্ত দেয় তাকে কিভাবে ভুলে?
রক্তদান
একটু আগে একটা কল আসলো আমার নাম্বারে। আমি হ্যালো বলতেই অপরপাশ থেকে একটা পুরুষ কন্ঠে বললেন, স্যার ভালো আছেন?
আমি জ্বি বলতেই উনি বললেন, স্যার আমি আপনার কাছে থাইরয়েডের অপারেশন করছিলাম অনেক বছর আগে, এখন অন্য একটা...
এটুকু শুনেই আমি থামিয়ে দিয়ে বললাম, আপনি বোধ হয় রং নাম্বারে ফোন করেছেন। আপনি কাকে চাচ্ছেন? উনি স্পষ্টভাবে আমার নামই বললেন।
আমি বিস্মিত হয়ে বললাম, কিন্তু আমিতো থাইরয়েডের অপারেশন করিনা, আমিতো চক্ষু বিশেষজ্ঞ। তখন উনি যা বললেন তাতে আমি আরও বিস্মিত হলাম।
উনি বললেন, আপনি যখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইন্টার্নশীপ করছিলেন তখন প্রফেসর টিমা ফারুক স্যারের ইউনিটে আমি ভর্তি হয়ে থাইরয়েডের অপারেশন করিয়েছিলাম। আপনি আমার বেডের দায়িত্বে ছিলেন।
এরপর উনি উনার বর্তমান কিছু শারীরিক সমস্যার কথা বললে, আমি যথাসাধ্য পরামর্শ দিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, আপনি এতো বছর আমাকে কিভাবে মনে রাখলেন? আর আমার নাম্বারই বা এতো বছর আপনি কিভাবে সংরক্ষন করলেন? এটা তো ১৫ বছর আগের ঘটনা!
উনি হেসে বললেন, আমার অপারেশনের সময় ব্লাডের প্রয়োজন ছিলো। ব্লাড পাওয়া যাচ্ছিলো না বিধায় অপারেশন প্রায় বাতিল হয়ে যাচ্ছিলো, সেইসময় আপনি আমাকে ব্লাড দিয়েছিলেন। যে ডাক্তার রোগীর জন্য ব্লাড দেয় তাকে কেউ কিভাবে ভুলে?
আমি আপনাকে আজীবন মনে রাখবো। আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা। একটা ছোট চাকরীও করি। মুক্তিযোদ্ধা ভাতা এবং বেতন মিলিয়ে আমার আর্থিক অবস্থা স্বচ্ছল। কিন্তু অনেকগুলো রোগে ভুগছি অনেকদিন ধরে। নানান যায়গায় চিকিৎসা করিয়ে কিছুটা কমেছেও। কিন্তু তারপরেও ভাবলাম আপনার কাছে পরামর্শ নেই। তাই এতো বছর পর ফোন দিলাম।
আমি আবেগী মানুষ। এই ফোনকল পেয়ে আমি বিস্মিত এবং আবেগাপ্লুত। ভাবলাম ঘটনাটা ফেসবুকের পাতায় জমা থাক....