ওমিক্রনের তীব্রতা নিয়ে যা বললেন অধ্যাপক ডা. সৈয়দ আতিক
প্রখ্যাত মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ও রিউমাটোলজিস্ট অধ্যাপক ডা. সৈয়দ আতিকুল হক।
করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) নতুন ধরন ওমিক্রনে বিশ্বে রীতিমতো সংক্রমণের সুনামি বয়ে যাচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড ১৬ লাখের বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে।
করোনার এই ধরন কতটা সংক্রামক এবং এর তীব্রতা কতটুকু ডক্টর টিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সে বিষয়ে জানিয়েছেন প্রখ্যাত মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ও রিউমাটোলজিস্ট অধ্যাপক ডা. সৈয়দ আতিকুল হক।
তিনি বলেন, ‘এই বিষয়টাতে কিছু উপাত্ত আছে কিন্তু খুবই সীমিত। আমি বলবো- একটা বিশাল সংখ্যা নিয়ে সিস্টেমেটিক্যালি চালানো যে গবেষণা, তার ফলাফল এখন পর্যন্ত (হাতে) খুবই কম।’
‘তবে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে বলা হয়েছিল, যেসব এলাকায় ওমিক্রন ছড়িয়ে পড়েছে, সেসব এলাকায় বেশিরভাগ রোগীর ক্ষেত্রে এই কোভিড-১৯ ছিল মৃদু। যারা ভ্যাকসিন পেয়েছেন তাদের মধ্যে মৃদু, এমনকি যারা ভ্যাকসিন পাননি তাদের মধ্যে মৃদু’ যোগ করেন তিনি।
অধ্যাপক সৈয়দ আতিক বলেন, অবশ্য দক্ষিণ আফ্রিকার যে সরকারি তথ্য, তারা সেখানে তীব্র কোভিডে আক্রান্ত রোগীর বা মৃতের সংখ্যার উপাত্ত দেয়নি।
তিনি বলেন, যুক্তরাজ্য থেকে সম্প্রতি এই ওমিক্রনে আক্রান্তদের একটা উপাত্ত দেওয়া হয়েছে। তাতে বলা হচ্ছে- প্রায় দুই লাখ ওমিক্রন আক্রান্ত রোগীর তথ্য তাদের আছে। আক্রান্ত ২০ জন মারা গেছেন।
প্রখ্যাত এই মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ও রিউমাটোলজিস্ট বলেন, ‘আমরা অনুমান করতে পারি, তার কেইস ফ্যাটালিটি রেইট যেটা (মানে যতজন সংক্রমিত তার মধ্যে কত শতাংশ মারা গেছে), সেই কেইস ফ্যাটালিটি রেইট ০.০১ শতাংশ। যেহেতু আগের কেইস ফ্যাটালিটি রেইট আরও বেশি ছিল ০.১ শতাংশ মানে প্রায় ১০ গুণ। তার তুলনায় এটাতে (ওমিক্রনে) মৃতের হারটা এখনো খুবই কম।’
তিনি বলেন, ইংল্যান্ড (যুক্তরাজ্য) থেকে আরও বলা হয়েছে যে, ওমিক্রনে যারা সংক্রমিত, তাদের হাসপাতালে ভর্তির হারটা অনেক কম।
অধ্যাপক সৈয়দ আতিক বলেন, ‘এই ভাইরাসটা অনেক বেশি ছোঁয়াচে। ছোঁয়াচেপনা হিসাব করে যদি বলতে চাই, তাহলে বলবো- এটা ভয়ঙ্কর রকম বেশি ছোঁয়াচে। অনেক বেশি গুণ ছড়াচ্ছে, দ্রুত অল্পসময়ে সংস্পর্শেই ছড়িয়ে যাচ্ছে।’
‘কিন্তু এর থেকে তীব্র কোভিড হওয়ার হার সম্ভবত কম এবং মৃত্যুর হারও সম্ভবত অনেক কম। এই কারণেই আমাদেরকে বিশ্বের বিভিন্ন সংস্থা থেকে খানিকটা আশ্বস্ত করা হচ্ছে যে, এটা থেকে সেই ব্যাপক মৃত্যুযজ্ঞ সৃষ্টি হয়তো নাও হতে পারে।’
তবে প্রখ্যাত এই মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ও রিউমাটোলজিস্ট বলেন, ‘বিল গেটস একটা আশঙ্কা ব্যক্ত করেছেন যে, এমনও হতে পারে যে এই ভাইরাসগুলো তো মিউটেট করে। এই ওমিক্রন যদি ফের মিউটেট করে এবং মিউটেট করে তার ভিরুলেন্স তথা বিপদ ঘটানোর শক্তি যদি বেড়ে যায়, তাহলে এর থেকেও একটা বড় দুর্ঘটনা ঘটতেও পারে।’
তিনি বলেন, ‘তার মানে আমাদের সতর্ক থাকতেই হবে। এটা ঠিক যে, আমরা যখনই বাইরে যাব আমাদের মাস্ক পড়তে হবে, জটলা এড়িয়ে চলতে হবে এবং ভ্যাকসিনটাও নিতে হবে। এগুলো আমাদের অবশ্যই মেনে চলতে হবে।’