চিকিৎসকের মানবসেবা
রোগীর জীবন রক্ষায় চিকিৎসক নিজেও রক্ত দিতে পিছপা হন না
১.
গভীর রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ক্যাজুয়ালটিতে রোগী ভর্তি হয়েছেন। ক্যাথেটার ও রক্ত লাগবে। স্বজনরা বললেন, রোগী খুব গরীব, ক্যাথেটার ও রক্ত কেনার ক্ষমতা নাই। ডা. শাখাওয়াত তার নিজস্ব ফান্ডের ফলিস ক্যাথেটার দিলেন। রক্তের জন্য রোগীর আত্মীয়দের আসতে বললেন। তিনি শুনতে পেলেন রোগীর লোক বলাবলি করছে, ‘ডাক্তারকে আরেকটু চাপ দিলে রক্তও দিত!’
২.
ওটির আগের দিন রোগীর লোকদের দুই ব্যাগ রক্ত জোগাড় করতে বলা হলো। ওটির আগে জানা গেল এক ব্যাগ সংগ্রহ করতে পেরেছে, আরেক ব্যাগের জন্য সারা রাত সন্ধান করেও নাকি পায়নি। ওটি টিমের এক ডাক্তারের সাথে গ্রুপ মিল থাকায় তিনি দিতে রাজি হলেন। তখন রোগী পার্টি ডাক্তারদের ঝাড়ি দিয়ে বললেন, ‘আপনাদের কাছেই যখন রক্ত আছে, তাহলে সারা রাত আমাদের কষ্ট করালেন কেন!’
৩.
ডা. মিতা (ছদ্মনাম) একটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনি বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান। ভোরে খবর এলো রাতে একটি মুমূর্ষু রোগী এসেছেন, রোগীর লোক রক্ত জোগাড় করতে পারছেন না। উক্ত গ্রুপের রক্ত কম সংখ্যক লোকের থাকে। ডা. মিতার ছেলের একই গ্রুপ। ছেলেকে ভোরে জাগিয়ে হাসপাতালে পাঠালেন রক্ত দিতে। তারই অধীন ওয়ার্ডে এক রোগীর মৃত বাচ্চা প্রসব করানোর পর সাংবাদিক তাকে লোভী চিকিৎসক হিসেবে তুলে ধরে!
৪.
মিনহাজ সালাম, সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের ডেন্টাল ইউনিটের ছাত্র। রাত পোহালে টার্ম পরীক্ষা। রোগী বাঁচাতে ভোর ৪টায় রক্তদানে ছুটে গেলেন। মানবঝাণ্ডা ঊর্ধ্বে তুলে ধরতে পরীক্ষা অজুহাত হয়নি তার।
অজানা, অচেনা লোক। তারপরও চিকিৎসক ও মেডিকেলের শিক্ষার্থীরা রোগী বাঁচাতে নিজের রক্ত দিতেও পিছপা হন না।
লেখক: সহকারী অধ্যাপক