মাত্র দুটি নিয়মে দূর হবে স্থূলতা
রাজধানীর রমনা পার্কে বিপুলসংখ্যক মানুষ নিয়মিত শরীর চর্চা করেন
আগে দেশে লিভারের আল্ট্রাসনো করলে প্রতি হাজারে একজনের চর্বি পাওয়া যেত। বর্তমানে এ হার ৭০-৮০ শতাংশ। দিন দিন এটি বাড়ছেই। মানুষ মোটা হচ্ছে। এর ফলে তার শরীরে নানা রোগব্যাধি বাসা বাধছে।
ডক্টর টিভিকে এমন তথ্য দিয়েছেন স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতালের গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি বিভাগের প্রধান মেডিসিন, পরিপাকতন্ত্র ও লিভাররোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. স্বপন চন্দ্র ধর।
তিনি স্থূলতাকে বর্তমান বিশ্বের চলমান মহামারি আখ্যায়িত করেছেন। বাংলাদেশে ওবেসিটি বা স্থূলতার জন্য শারীরিক নিষ্ক্রিয়তার পাশাাপাশি পশ্চিমা খাদ্যাভাসের সম্পৃক্ততা দায়ী বলে মনে করেন এ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।
তিনি বলেন, স্থূলতা দুই ধরনের। সারা শরীরে চর্বি জমলে সেটি সাধারণ স্থূলতা। আর হাত-পা বা শরীরের উপরের অংশ বাদে শুধু পেটে চর্বি জমলে সেটি অ্যাবডোমিনাল ওবেসিটি।
অধ্যাপক ডা. স্বপন চন্দ্র ধর জানান, ২০১০ সালের এক জরিপে বাংলাদেশে স্থূলতার হার ছিল মাত্র ৮ দশমিক ৪। কিন্তু ২০১৬-১৭ সালে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও রাজশাহীতে শুধু নারীদের ওপর আরেকটি জরিপ হয়। এতে সাধারণ স্থূলতা ১৯ এবং অ্যাবডোমিনাল ওবেসিটি ৪৯ শতাংশ পাওয়া যায়।
তিনি বলেন, এ জরিপ এটাই প্রমাণ করে, বিগত দুই দশকে বাংলাদেশে স্থূলতার হার অনেক বেড়ে গেছে। আগে ১৮ বছরের বেশি বয়সীদের মধ্যে স্থূলতা দেখা গেলেও এখন ৫ বছরের কম বয়সীরাও ব্যাপকহারে মোটা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞ এ চিকিৎসক জানান, জেনেটিক স্থূলতা নিরাময়ে কিছু বলার নেই। তবে অন্যান্য স্থূলতা দুটি নিয়ম মেনে চললে প্রতিরোধ করা সম্ভব; এমনকি চিকিৎসাতেও ভালো হয়। রোগ নিরাময়ের চেয়ে প্রতিরোধ বেশি জরুরি। এজন্য যাদের স্থূলতা নেই, তাকে নিয়মের বিষয়ে বেশি সতর্ক হতে হবে।
তিনি বলেন, শারীরিক সক্রিয়তা বাড়াতে হবে। এজন্য নিয়মিত হাঁটাচলা, ব্যায়াম, খেলাধুলা করতে হবে। আর ডায়েট নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। ক্যালরিযুক্ত খাবার খুবই কম খেতে হবে। কার্বো-হাইড্রেড, চিনি, মিষ্টি, ভাত কিংবা মিষ্টি জাতীয় খাবার পরিমাণে কম খেতে হবে। রেড মিট খাওয়া ঠিক নয়। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে ওজন ও উচ্চতার জন্য যতটুকু প্রয়োজন, ততটুকই চর্বি জাতীয় খাবার খাওয়াতে হবে। যথাসম্ভব ঘরে তৈরি খাবার দিতে হবে। ফাস্ট ফুড ও জাঙ্ক ফুড এড়িয়ে চলতে হবে।
অধ্যাপক ডা. স্বপন চন্দ্র ধর বলেন, শারীরিক সক্রিয়তা বাড়ানো এবং ডায়েট নিয়ন্ত্রণেও স্থূলতা নিরাময় না হলে চিকিৎসা করাতে হবে। আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানে কিছু ওষুধ, এনডোসকপি এবং সার্জিক্যাল চিকিৎসার মাধ্যমে স্থূলতা দূর করা হয়ে থাকে।